নোয়াখালী–২ (সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনে বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মশালমিছিল ও সমাবেশ করেছেন মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতা কাজী মফিজুর রহমানের সমর্থকেরা। আজ সোমবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে সেনবাগ উপজেলা সদরে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচি ঘিরে এলাকায় কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হলেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে জানা যায়, সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদ এলাকার একটি কার্যালয় থেকে উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে মশালমিছিলটি বের হয়। মিছিলটি উপজেলা গেট, হাইস্কুল গেট, প্রেসক্লাব, থানা মোড়সহ শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে দক্ষিণ বাজারে যায়। পরে থানা মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা দলীয় প্রার্থী ঘোষণার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানান। দাবি মানা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

সমর্থকদের মশালমিছিলের বিষয়টি শুনেছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতা কাজী মফিজুর রহমান। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকায় আছি। প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই আমার অনুসারীসহ সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ জানাচ্ছে। তারা নানা কর্মসূচি করছে।’ তিনি দাবি করেন, বিগত সরকারের সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা হয়, তিনি কারাভোগও করেছেন। গত ১৬ বছর তিনি নেতা–কর্মী ও তাঁদের পরিবারের পাশে ছিলেন। তাই তাঁকে মনোনয়ন না দেওয়ায় স্থানীয়ভাবে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সেনবাগ বিএনপির রাজনীতিতে কাজী মফিজুর রহমান ও জয়নুল আবদিন ফারুকের দ্বন্দ্ব দুই দশকের বেশি সময় ধরে। ক্ষমতায় থাকার সময়ে কাজী মফিজ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং এক যুগ আগে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আগামী জাতীয় নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তবে গত সোমবার ঘোষিত তালিকায় নোয়াখালী–২ আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে জয়নুল আবদিন ফারুকের নাম রাখা হয়েছে। তিনি এর আগে পাঁচবার এই আসন থেকে বিএনপির সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

ফারুকের মোটর শোভাযাত্রা

এর আগে, সোমবার দুপুরে নির্বাচনী এলাকায় বিশাল মোটর শোভাযাত্রা করেন দলীয় মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। প্রায় এক হাজার মোটরসাইকেল এতে অংশ নেয়। শোভাযাত্রা ইয়ারপুরের এমপি ভিলা থেকে শুরু হয়ে সেনবাগ, গাজীরহাটের মোড়, কানকিরহাট, ছাতারপাইয়া, দিঘিরজান হয়ে ছমির মুন্সিরহাটে গিয়ে শেষ হয়।

শোভাযাত্রার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘গণভোট, পিআর এসব কথা বলে বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে ভোটের মাঠে নামুন। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রিয়তার পরীক্ষা দিন।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জয়ন ল আবদ ন ফ র ক ব এনপ র স নব গ র বর ত উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

এ রায় ঘোষণা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভুক্তভোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত: ওএইচসিএইচআর

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণা গত বছর গণ-অভ্যুত্থানের সময় গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভুক্তভোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি মুহূর্ত বলে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের (ওএইচসিএইচআর) দপ্তরের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি। তবে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি।

আজ সোমবার মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ মন্তব্য করেন রাভিনা শামদাসানি।

ওএইচসিএইচআরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে রাভিনা শামদাসানি বলেন, ‘২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমাদের তথ্য-অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে আমরা নির্দেশদাতা ও নেতৃত্বের অবস্থানে থাকা ব্যক্তিদেরসহ দোষীদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে আসছি। ভুক্তভোগীদের কার্যকর প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ব্যবস্থা করারও আহ্বান জানিয়েছি।’

রাভিনা শামদাসানি বলেন, ‘যেহেতু এই বিচারপ্রক্রিয়ার কার্যক্রমের বিষয়ে আমরা অবগত ছিলাম না, তাই আমরা সব জবাবদিহিমূলক কার্যক্রম, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অপরাধের অভিযোগগুলো যেন প্রশ্নাতীতভাবে যথাযথ প্রক্রিয়া ও ন্যায়বিচারের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করে, সে জন্য ধারাবাহিকভাবে বলে এসেছি। এটি বিশেষভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ যখন, এ মামলার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, অভিযুক্তের অনুপস্থিতিতে বিচার হয়েছে এবং মৃত্যুদণ্ডের শান্তি দেওয়া হয়েছে।’

মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাভিনা শামদাসানি। তিনি বলেছেন, ‘মৃত্যুদণ্ডের রায়ের জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা সব পরিস্থিতিতে এর বিরোধিতা করি।’

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক আশা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশ সত্য প্রকাশ, ক্ষতিপূরণ ও ন্যায়বিচারের একটি সমন্বিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্য ও ক্ষত কাটিয়ে ওঠার দিকে এগিয়ে যাবে। এ প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তা খাতের অর্থবহ ও রূপান্তরমূলক সংস্কার অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত। আর এ সংস্কার হবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, যেন আর কখনো মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের ঘটনা না ঘটে। এসব প্রচেষ্টাগুলোয় বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে সহায়তা দিতে প্রস্তত রয়েছে ওএইচসিএইচআর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ