ফেসবুকে আওয়ামী লীগ সমর্থক এক হাজার অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত, বিপক্ষে গেলেই রিভিউ আক্রমণ
Published: 1st, December 2025 GMT
দেশের নতুন একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যম সম্প্রতি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যা তাঁর পক্ষে যায়নি। এরপরই সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে শুরু হয় নেতিবাচক ‘রিভিউ’ (মূল্যায়ন) দেওয়া।
তথ্যব্যবস্থায় প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ডিজিটালি রাইটের তথ্য যাচাইয়ের উদ্যোগ ডিসমিসল্যাবের এক অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, এভাবে সম্মিলিতভাবে আক্রমণ করে বিভিন্ন ফেসবুক পেজের ‘রেটিং’ কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আক্রমণের শিকার হচ্ছে সংবাদমাধ্যম, বিশ্লেষক, রাজনৈতিক দল, সরকারি সংস্থা, জনপ্রিয় ব্যক্তি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক পেজ।
এ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে এক হাজারের বেশি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট। অ্যাকাউন্টগুলো বিশ্লেষণ করে ডিসমিসল্যাব নিশ্চিত হয়েছে, অ্যাকাউন্টগুলো কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা দল আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা নিয়ন্ত্রণ করছেন।
তথ্যব্যবস্থায় প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ডিজিটালি রাইটের তথ্য যাচাইয়ের উদ্যোগ ডিসমিসল্যাবের এক অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, এভাবে সম্মিলিতভাবে আক্রমণ করে বিভিন্ন ফেসবুক পেজের ‘রেটিং’ কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে।ফেসবুকে কোনো প্রতিষ্ঠানের পেজে ব্যবহারকারীরা রিভিউ দিতে পারেন। এতে বোঝা যায়, ব্যবহারকারী সেই পেজকে কতটা রিকমেন্ড করছেন, অর্থাৎ ওই মাধ্যমের সংবাদ, ব্যক্তির মতামত, প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবা কিনতে পরামর্শ দিচ্ছেন। সম্মিলিত আক্রমণের ফলে প্রতিষ্ঠানের রেটিং (মানুষের মতামতভিত্তিক মান) কমে যায়।
সম্মিলিত ও ক্রমাগত আক্রমণকে রাজনৈতিক মত নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা বলে উল্লেখ করেন ডিজিটালি রাইটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিরাজ আহমেদ চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রেটিং কমে গেলে নতুন ব্যবহারকারীরা অনেক সময় ওই পেজের ওপর আস্থা রাখতে পারেন না। তাঁরা বিভ্রান্ত হন। তাই মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে বিষয়গুলো নিয়ে বেশি বেশি আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।
যেভাবে শনাক্তডিসমিসল্যাব সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের ১ হাজার ১১৮টি পেজের ৬২ হাজার ৫২৯টি রিভিউ পোস্ট বিশ্লেষণ করেছে। এর মাধ্যমে ১ হাজার ১৯টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা হয়। দেখা যায়, জানুয়ারি থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত এই চক্র অন্তত ৭২১টি পেজকে লক্ষ্যবস্তু করে। পেজগুলোতে তারা ‘ভুয়া তথ্য ছড়ানো’, ‘সন্ত্রাসবাদে জড়িত’ অথবা ‘সামাজিক অবক্ষয়ের’র অভিযোগ তুলে সম্মিলিত আক্রমণ করেছে।
ডিসমিসল্যাব নিজেরাই এর শিকার। তারা সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারাকে অনলাইন হয়রানি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এর পরপরই তাদের পেজে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে নেতিবাচক রিভিউ দেওয়া হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যেই অন্যান্য অ্যাকাউন্ট থেকে একই লেখা পুনরাবৃত্তি করা হতে থাকে। ২ ঘণ্টায় ৪৮টি নেতিবাচক রিভিউ পড়ে, যেখানে ডিসমিসল্যাবকে অপপ্রচারকারী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এসব রিভিউ থেকে একই রকম ২৩টি রিভিউ চিহ্নিত করে ডিসমিসল্যাব। পরবর্তী সময়ে অনুসন্ধানে তারা দেখে, ওই একই রিভিউ ১ হাজার ৪৭৩ বার ব্যবহৃত হয়েছে আরও ৩১৫টি পেজে।
সর্বশেষ অনুসন্ধানে চিহ্নিত ১ হাজার ১৯টি ফেসবুক অ্যাকাউন্টের তথ্য বিশ্লেষণ করে ডিসমিসল্যাব দেখেছে, চক্রটি ১৩ হাজারের বেশি রিভিউ পোস্ট করেছে, যার মধ্যে প্রায় ৯৪ শতাংশই আওয়ামী লীগপন্থী বার্তা বহন করে।
রেটিং কমে গেলে নতুন ব্যবহারকারীরা অনেক সময় ওই পেজের ওপর আস্থা রাখতে পারেন না। তাঁরা বিভ্রান্ত হন। তাই মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে বিষয়গুলো নিয়ে বেশি বেশি আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।ডিজিটালি রাইটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিরাজ আহমেদ চৌধুরীকারা আক্রান্তডিসমিসল্যাবের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, নেটওয়ার্কটি মূলত সংবাদমাধ্যম, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ফেসবুক পেজে বেশি আক্রমণ চালিয়েছে। বাদ যায়নি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, অনলাইন বই বিক্রয় পেজ এবং প্রকাশনা সংস্থাও। এমনকি ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস ও পাকিস্তান হাইকমিশনের পেজও আক্রমণের শিকার হয়েছে।
ডিসমিসল্যাবের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, স্বাধীন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান দৃক তাদের জুলাই-আগস্টের গণ-আন্দোলনের আলোকচিত্র প্রদর্শনীর ছবি পোস্ট করার পর তাদের ফেসবুক পেজ আক্রমণের মুখে পড়ে। বিএনপি মিডিয়া সেল, জামায়াতে ইসলামী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনসহ বিভিন্ন দলের পেজ আক্রমণের শিকার হয়েছে। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে আক্রমণের শিকার হয়েছেন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনডিএম) ববি হাজ্জাজ, গণ অধিকার পরিষদের রাশেদ খান, ফারুক হাসান, তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। লেখক ও অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীন, মোস্তফা ফিরোজ, বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমানসহ অনেকে আক্রমণের শিকার হয়েছেন। গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সংগঠন মায়ের ডাকও আক্রমণের শিকার হয়েছে।
ডিসমিসল্যাবের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, স্বাধীন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান দৃক তাদের জুলাই-আগস্টের গণ-আন্দোলনের আলোকচিত্র প্রদর্শনীর ছবি পোস্ট করার পর তাদের ফেসবুক পেজ আক্রমণের মুখে পড়ে।ইতিবাচক রিভিউও দেয় চক্রটিডিসমিসল্যাবের অনুসন্ধানে আরও দেখা গেছে, ওই ১ হাজার ১৯টি অ্যাকাউন্ট বহু আওয়ামী লীগ–সমর্থক পেজ, ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমের পেজ এবং ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) এক রাজনীতিকের ফেসবুক প্রোফাইলে ইতিবাচক রিভিউ দিয়েছে। কোনো কোনো অ্যাকাউন্ট কলকাতাভিত্তিক এবিপি আনন্দ ও রিপাবলিক বাংলার পেজে ইতিবাচক রিভিউ দিয়েছে। জি ২৪ ঘণ্টার পেজেও বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট ইতিবাচক রিভিউ দিয়েছে চক্রটিতে থাকা অ্যাকাউন্টগুলো।
এই চক্রের প্রতিদ্বন্দ্বী একটি চক্রও খুঁজে পেয়েছে ডিসমিসল্যাব। তবে এরা ছোট ও কম সমন্বিত বলে উল্লেখ করেছে ডিসমিসল্যাব। এদের প্রকৃত পরিসর জানতে আরও গবেষণা প্রয়োজন মনে করে তারা।
সামাজিক মাধ্যমে এ ধরনের ভুয়া রিভিউর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটার ওপর চাপ বাড়ানোর পরামর্শ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন। তিনি বলেন, এ ধরনের মেটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। যতক্ষণে তারা ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ শুরু করে, ততক্ষণে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে যায়। তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলো এমন ঘটনায় মেটাকে চাপে রাখে। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকেও এ বিষয়গুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে মেটাকে জানানো হয়। বাংলাদেশ থেকেও এমন ঘটনা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এই চক্রের প্রতিদ্বন্দ্বী একটি চক্রও খুঁজে পেয়েছে ডিসমিসল্যাব। তবে এরা ছোট ও কম সমন্বিত বলে উল্লেখ করেছে ডিসমিসল্যাব। এদের প্রকৃত পরিসর জানতে আরও গবেষণা প্রয়োজন মনে করে তারা।.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ফ সব ক প জ অ য ক উন ট র জন ত ক ব যবস থ ব যবহ র র ইট র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত খুলনা: ১৬ মাসে ট্রিপল-ডাবলসহ ৪৮ খুন
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী গত ১৬ মাসে খুলনায় ট্রিপল ও ডাবলসহ ৪৮টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এর মধ্যে সন্ত্রাসীদের অভ্যন্তরীণ বিরোধ, মাদক ও আধিপত্য বিস্তারের জেরে হত্যাকাণ্ড হয়েছে ২০টি। চলতি নভেম্বর মাসেই সাতজনকে হত্যা করা হয়েছে। রবিবার (৩০ নভেম্বর) খুলনার আদালত পাড়ায় প্রকাশ্যে দুইজনকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। একইদিন রাতে নগরীর জিন্নাপাড়া এলাকায় আরো এক যুবককে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।
একের পর এক হত্যাকাণ্ডে ভয় আর আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হয়েছে খুলনা। দিন-দুপুরে আদালত এলাকার মতো জনবহুল জায়গায় হত্যাকাণ্ড স্থানীয় বাসিন্দাদের আরো উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
আরো পড়ুন:
আলোচিত রায়হান হত্যার রায় ৭ জানুয়ারি
খলাপাড়ার গণহত্যা দিবস: স্বাধীনতার প্রান্তে শহীদ হন ১০৬ জন
পুলিশের তথ্য বলছে, গত ১৬ নভেম্বর দুপুরে নগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনারের কালভার্ট এলাকায় বাড়ির মধ্যে নানি মহিতুন্নেসা (৫৫), তার নাতি মুস্তাকিম (৮) এবং নাতনি ফাতিহাকে (৬) হত্যা করা হয়। ওই রাতেই করিমনগরে নিজ বাড়ির ভেতর আলাউদ্দিন মৃধা নামের এক যুবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। গত ২৭ নভেম্বর রাতে খালিশপুর ফেয়ার ক্লিনিকের সামনে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় যুবক ইমানকে।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) কর্মচারী মো. মহসিন শেখ লিটুর বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। ২৮ অক্টোবর ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে মহানগরীর দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা খুঠিরঘাট এলাকার ওই বাড়িতে গুলিবর্ষণ হয়। তবে, কেউ আহত হননি।
গত ৯ অক্টোবর সকালে খালিশপুর হাউজিং বাজার এলাকায় সবুজ খান (৫৫) নামে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে খুলনার রূপসা উপজেলায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে ইমরান হোসেন মানিক (৩৪) নামে এক যুবক নিহত হন।
সে সময় রূপসা থানার ডিউটি অফিসার জনি আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “রাতে মানিক একটি ভ্যানযোগে ইলাপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় কয়েকজন সন্ত্রাসী তার গতিরোধ করেন। তারা মানিককে লক্ষ্য করে পরপর দুইটি গুলি ছোড়েন। একটি গুলি মানিকের মাথায় লাগে। তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।”
এর আগে, ২৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে খুলনা মহানগরীর রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে প্রকাশ্যে এক যুবককে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। ওই যুবকের নাম নিক। তিনি নগরীর কালীবাড়ী এলাকার মন্টু দাশের ছেলে।
একের পর হত্যাকাণ্ডে উদ্বিগ্ন নাগরিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। ধারাবাহিক হত্যা ও সহিংস ঘটনার প্রতিবাদে খুলনা মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালন হচ্ছে। এছাড়া, আইনশৃখলা পরিস্থিতি অবনতির প্রতিবাদে গত শনিবার নগরীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন আইন অধিকার বাস্তবায়ন ফোরাম। তার একদিন পরেই রবিবার দুটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটল। এর আগে, খুলনার আদালত চত্বর থেকে ককটেল সদৃশ বস্তু উদ্ধার করেছিল পুলিশ। গত ২০ নভেম্বর বিকেল ৪টার দিকে বস্তুটি পাওয়া যায়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে চরমপন্থিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল খুলনা। নতুন শতাব্দির শুরুতেও তা বহাল ছিল। বোমা মেরে অথবা গুলি করে মানুষ হত্যা নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়। চরমপন্থি সন্ত্রাসীদের হাতে প্রাণ হারান সাংবাদিকসহ অসংখ্য মানুষ। পরবর্তীতে চারদলীয় জোট সরকার দক্ষিণাঞ্চলে সন্ত্রাস দমনে র্যাব গঠন করে। যৌথবাহিনীর সমন্বয়ে শুরু হয় অপারেশন ক্লিনহাট, অপারেশন স্পাইডার ওয়েব। এসব অপারেশন অধিকাংশ চরমপন্থি সন্ত্রাসী নিহত ও অনেকে গ্রেপ্তার হন। ধীরে ধীরে শান্তি ফিরে আসে খুলনায়। খুলনার আইনশৃখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আবারো বিশেষ অভিযান শুরুর দাবি জানিয়েছেন নাগরিক নেতারা।
খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, “একের পর এক হত্যাকাণ্ড সবাইকে আতঙ্কিত করে তুলছে। এ থেকে খুলনার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চিত্র স্পষ্ট হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের দমনে পুলিশ প্রশাসনকে আরো কঠোর হতে হবে।”
খুলনায় আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি বিশেষ করে গতকাল রবিবার আদালত অঙ্গনে দিনে দুপুরে লোমহর্ষক জোড়া খুনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ হোসেন বাচ্চু এবং সদস্য সচিব শেখ নুরুল হাসান রুবা। আদালত অঙ্গনে নিরাপত্তা জোরদারসহ খুলনার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে পুলিশ প্রশাসন এবং দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের আরো কঠোর ভূমিকা গ্রহণের আহ্বান জানান তারা।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, “বেশিরভাগ হত্যার কারণ উদ্ঘাটন করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। রবিবার দুপুরে দুই হত্যার সঙ্গে জড়িতরাও দ্রুত গ্রেপ্তার হবেন।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ