Risingbd:
2025-12-01@06:30:37 GMT

বিয়ে করলেন জাদুকর-কন্যা মৌবনী

Published: 1st, December 2025 GMT

বিয়ে করলেন জাদুকর-কন্যা মৌবনী

ভারতীয় বাংলা শোবিজ অঙ্গনের দিকে নজর দিলে পরিষ্কার বোঝা যায়, বিয়ের মৌসুম ঝেঁকে বসেছে। কমেডিয়ান খরাজ তার ছেলের বিয়ে ধুমধাম করে দিলেন। এরপর বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ‘কৃষ্ণকলি’খ্যাত অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা হালদার। গতকাল ঘটা করেই মালা বদল করেছেন টলিউড অভিনেত্রী মৌবনী সরকার। তার আরেক পরিচয় প্রখ্যাত জাদুশিল্পী পিসি সরকার জুনিয়রের মেজ কন্যা তিনি।

আজতাক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রবিবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পিসি সরকারের বাড়িতে বাড়ির মেজ কন্যা মৌবনী সরকারের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে পাত্র খুঁজে, সেই পাত্রের গলায় মালা পরান পি সি সরকার জুনিয়রের-কন্যা। তার বরের নাম সৌম্য। মৌবনীর বিয়ের একাধিক ছবি ও ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।

আরো পড়ুন:

বিয়ে করলেন প্রিয়াঙ্কা

লোকজন বিয়ে করছে, আমি প্রেমও করতে পারছি না: শ্রীলেখা

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, কনের সাজে মৌবনীকে একেবারে লক্ষ্মীর মতো লাগছে। বারাণসী থেকে আনা বেগুনি রঙের বেনারসি, সোনার গহনা, শোলার মুকুট, কপালে চন্দন ও মাথায় ভেল পরে মিষ্টি দেখাচ্ছিল মৌবনীকে। বাঙালি বিয়ের সব রীতিনীতি মেনেই বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়। আশীর্বাদ পর্ব, মালা বদল থেকে সিঁদুর দান সবটাই করেছেন তারা। জামাই সৌম্যকে বরণ করতে গিয়ে চোখের জল আটকাতে পারেননি জাদুসম্রাটের স্ত্রী।  

কন্যাদানের সময়ও চোখে জল দেখা যায় পি সি সরকার জুনিয়র ও তার স্ত্রীর। বোনের বিয়ে বলে কথা, বরকর্তা হিসেবে বিয়ের সবকিছু খুঁটিয়ে দেখছিলেন মুমতাজ ও মানেকা। সৌম্যর পরনে ছিল প্রিন্টেট পাঞ্জাবি, গলায় হার, লাল ধুতি, মাথায় মুকুট। জামাইকে জাদুসম্রাট হীরার বোতাম দিয়ে আশীর্বাদ করেন।  পি সি সরকারকে লাল রঙের পাঞ্জাবি, সাদা ধুতি এবং গলায় সাদা উত্তরীয়তে দেখা যায়। 

টলিপাড়ার অনেক তারকা এই বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন। চন্দননগর বাসিন্দা মৌবনীর বর সৌম্য রায়। তিনি পেশায় রিসার্চ অ্যানালিস্ট। 

২০০৯ সালে ‘বাদলা’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন মৌবনী। প্রসেনজিতের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। তারপর ‘কলির অর্জুন’, ‘লজ্জা’, ‘সেভেন ডেস’, ‘অন্তরে বাহিরে’, ‘নদী রে তুই’ প্রভৃতি সিনেমায় অভিনয় করেন এই অভিনেত্রী। 

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত খুলনা: ১৬ মাসে ট্রিপল-ডাবলসহ ৪৮ খুন

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী গত ১৬ মাসে খুলনায় ট্রিপল ও ডাবলসহ ৪৮টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এর মধ্যে সন্ত্রাসীদের অভ্যন্তরীণ বিরোধ, মাদক ও আধিপত্য বিস্তারের জেরে হত্যাকাণ্ড হয়েছে ২০টি। চলতি নভেম্বর মাসেই সাতজনকে হত্যা করা হয়েছে। রবিবার (৩০ নভেম্বর) খুলনার আদালত পাড়ায় প্রকাশ্যে দুইজনকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। একইদিন রাতে নগরীর জিন্নাপাড়া এলাকায় আরো এক যুবককে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।

একের পর এক হত্যাকাণ্ডে ভয় আর আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হয়েছে খুলনা। দিন-দুপুরে আদালত এলাকার মতো জনবহুল জায়গায় হত্যাকাণ্ড স্থানীয় বাসিন্দাদের আরো উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

আরো পড়ুন:

আলোচিত রায়হান হত্যার রায় ৭ জানুয়ারি

খলাপাড়ার গণহত্যা দিবস: স্বাধীনতার প্রান্তে শহীদ হন ১০৬ জন

পুলিশের তথ্য বলছে, গত ১৬ নভেম্বর দুপুরে নগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনারের কালভার্ট এলাকায় বাড়ির মধ্যে নানি মহিতুন্নেসা (৫৫), তার নাতি মুস্তাকিম (৮) এবং নাতনি ফাতিহাকে (৬) হত্যা করা হয়। ওই রাতেই করিমনগরে নিজ বাড়ির ভেতর আলাউদ্দিন মৃধা নামের এক যুবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। গত ২৭ নভেম্বর রাতে খালিশপুর ফেয়ার ক্লিনিকের সামনে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় যুবক ইমানকে। 

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) কর্মচারী মো. মহসিন শেখ লিটুর বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। ২৮ অক্টোবর ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে মহানগরীর দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা খুঠিরঘাট এলাকার ওই বাড়িতে গুলিবর্ষণ হয়। তবে, কেউ আহত হননি।

গত ৯ অক্টোবর সকালে খালিশপুর হাউজিং বাজার এলাকায় সবুজ খান (৫৫) নামে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে খুলনার রূপসা উপজেলায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে ইমরান হোসেন মানিক (৩৪) নামে এক যুবক নিহত হন।

সে সময় রূপসা থানার ডিউটি অফিসার জনি আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “রাতে মানিক একটি ভ্যানযোগে ইলাপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় কয়েকজন সন্ত্রাসী তার গতিরোধ করেন। তারা মানিককে লক্ষ্য করে পরপর দুইটি গুলি ছোড়েন। একটি গুলি মানিকের মাথায় লাগে। তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।”

এর আগে, ২৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে খুলনা মহানগরীর রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে প্রকাশ্যে এক যুবককে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। ওই যুবকের নাম নিক। তিনি নগরীর কালীবাড়ী এলাকার মন্টু দাশের ছেলে।

একের পর হত্যাকাণ্ডে উদ্বিগ্ন নাগরিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। ধারাবাহিক হত্যা ও সহিংস ঘটনার প্রতিবাদে খুলনা মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালন হচ্ছে। এছাড়া, আইনশৃখলা পরিস্থিতি অবনতির প্রতিবাদে গত শনিবার নগরীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন আইন অধিকার বাস্তবায়ন ফোরাম। তার একদিন পরেই রবিবার দুটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটল। এর আগে, খুলনার আদালত চত্বর থেকে ককটেল সদৃশ বস্তু উদ্ধার করেছিল পুলিশ। গত ২০ নভেম্বর বিকেল ৪টার দিকে বস্তুটি পাওয়া যায়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে চরমপন্থিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল খুলনা। নতুন শতাব্দির শুরুতেও তা বহাল ছিল। বোমা মেরে অথবা গুলি করে মানুষ হত্যা নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়। চরমপন্থি সন্ত্রাসীদের হাতে প্রাণ হারান সাংবাদিকসহ অসংখ্য মানুষ। পরবর্তীতে চারদলীয় জোট সরকার দক্ষিণাঞ্চলে সন্ত্রাস দমনে র‌্যাব গঠন করে। যৌথবাহিনীর সমন্বয়ে শুরু হয় অপারেশন ক্লিনহাট, অপারেশন স্পাইডার ওয়েব। এসব অপারেশন অধিকাংশ চরমপন্থি সন্ত্রাসী নিহত ও অনেকে গ্রেপ্তার হন। ধীরে ধীরে শান্তি ফিরে আসে খুলনায়। খুলনার আইনশৃখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আবারো বিশেষ অভিযান শুরুর দাবি জানিয়েছেন নাগরিক নেতারা।

খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, “একের পর এক হত্যাকাণ্ড সবাইকে আতঙ্কিত করে তুলছে। এ থেকে খুলনার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চিত্র স্পষ্ট হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের দমনে পুলিশ প্রশাসনকে আরো কঠোর হতে হবে।” 

খুলনায় আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি বিশেষ করে গতকাল রবিবার আদালত অঙ্গনে দিনে দুপুরে লোমহর্ষক জোড়া খুনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ হোসেন বাচ্চু এবং সদস্য সচিব শেখ নুরুল হাসান রুবা। আদালত অঙ্গনে নিরাপত্তা জোরদারসহ খুলনার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে পুলিশ প্রশাসন এবং দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের আরো কঠোর ভূমিকা গ্রহণের আহ্বান জানান তারা।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, “বেশিরভাগ হত্যার কারণ উদ্ঘাটন করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। রবিবার দুপুরে দুই হত্যার সঙ্গে জড়িতরাও দ্রুত গ্রেপ্তার হবেন।”

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ