ময়মনসিংহে একটি মাজার ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা
Published: 14th, January 2025 GMT
ময়মনসিংহ নগরের থানাঘাট এলাকার হজরত শাহ সুফী সৈয়দ কালু শাহ (রহ)–এর মাজার ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। নির্দেশনা জারির বিষয়টি এলাকাটিতে মাইকিং করা হয়।
জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুফিদুল আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, থানাঘাট থেকে ট্রাফিক অফিস পর্যন্ত আজ একাধিক পক্ষ একই স্থানে এবং একই সময়ে সভা-সমাবেশ ডেকেছে। উক্ত সমাবেশ ঘিরে এলাকায় চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এর ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা আছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
হজরত শাহ সুফী সৈয়দ কালু শাহ (রহ)–এর মাজার ৮ জানুয়ারি ১৭৯তম বার্ষিক ওরস উপলক্ষে ব্রহ্মপুত্র নদের পারে কাওয়ালি গানের আয়োজন করেন ভক্তরা। রাত ১১টার দিকে গানের অনুষ্ঠান শুরুর পর সাড়ে ১১টার দিকে সেখানে হামলা হয়। দ্রুত শিল্পীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। মঞ্চ ও চেয়ার গুঁড়িয়ে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে রাত তিনটার দিকে মাজারে হামলা হয়। মাজারের পাকা স্থাপনার কিছু অংশ ও ভেতরে থাকা জিনিসপত্র ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ৯ জানুয়ারি রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় মাজারটির অর্থ সম্পাদক মো.
মাজারে হামলা, ভাঙচুর, লুটতরাজ, দান বাক্স ডাকাতি ও কোরান শরীফ পোড়ানোর ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ সুফিবাদ ঐক্য পরিষদ আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় মানববন্ধনের আয়োজন করে। ভাঙচুর করা মাজারের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করলে উত্তেজনা শুরু হয়। সোমবার রাতে ময়মনসিংহ বাউল সমিতির সাধারণ রেজাউল করিম আসলাম নিজের ফেসবুকে কর্মসূচি প্রকাশ করেন। তবে আজ রেজাউল করিম আসলামের মুঠোফোনে চেষ্টা করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মাজারের সামনে গিয়ে দেখা যায়, কোনো লোকজন নেই। পাশেই একটি গাড়িতে পুলিশ বসে আছে। ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি জানিয়ে চলছে মাইকিং।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, মাজারের পক্ষে ও বিপক্ষে একই সময়ে দুই পক্ষের সমাবেশ ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুনামগঞ্জে টিটিসি নির্মাণ প্রকল্প বাতিলের প্রতিবাদে মানববন্ধন
হাওর–অধ্যুষিত সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র (টিটিসি) নির্মাণ প্রকল্প বাতিলের প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শহরের আলফাত স্কয়ারে ‘তাহিরপুর উপজেলাবাসী’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় দেশের অন্যান্য উপজেলার সঙ্গে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলায় দুটি টিটিসি নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন হয়। এখন তা হবে না বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। শান্তিগঞ্জের বিষয়টি চূড়ান্ত না হলেও তাহিরপুরের কেন্দ্রটি জেলার জগন্নাথপুরে স্থানান্তরের চূড়ান্ত প্রস্তাব দিয়ে গণপূর্ত কর্তৃপক্ষকে ভবন নির্মাণে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্প স্থানান্তরের খবর জানাজানি হওয়ার পর রোববার তাহিরপুর উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপনের দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রকল্প পরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
তাহিরপুরে টিটিসি বাস্তবায়ন আন্দোলনের সদস্যসচিব সুহেল আলমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন তাহিরপুর উপজেলার বাসিন্দা ও সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর–জামালগঞ্জ–ধর্মপাশা–মধ্যনগর) আসনে জামায়াতের প্রার্থী দলের জেলা আমির মাওলানা তোফায়েল আহমদ খান, বিএনপির দুই মনোনয়নপ্রত্যাশী তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির নেতা আনিসুল হক, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির নেতা কামরুজ্জামান; তাহিরপুর উপজেলা কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জুনাব আলী, টিটিসি বাস্তবায়ন আন্দোলনের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান, উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি ফেরদৌস আলম প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, হাওর–অধ্যুষিত তাহিরপুর উপজেলা নানা কারণে পিছিয়ে আছে। এই প্রশিক্ষণকেন্দ্র হলে হাওর এলাকার মানুষ উপকৃত হবেন। এই এলাকার তরুণেরা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন। তাঁরা দেশে-বিদেশে কাজের সুযোগ পাবেন। কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। অন্য উপজেলায় নয়, তাহিরপুরেই এটি স্থাপন করতে হবে।
জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তাহিরপুরে কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে না। এটি হবে জগন্নাথপুরে হবে বলে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শান্তিগঞ্জ উপজেলার কেন্দ্রটি নির্মাণের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেই।