ময়মনসিংহ নগরের থানাঘাট এলাকার হজরত শাহ সুফী সৈয়দ কালু শাহ (রহ)–এর মাজার ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। নির্দেশনা জারির বিষয়টি এলাকাটিতে মাইকিং করা হয়।

জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুফিদুল আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, থানাঘাট থেকে ট্রাফিক অফিস পর্যন্ত আজ একাধিক পক্ষ একই স্থানে এবং একই সময়ে সভা-সমাবেশ ডেকেছে। উক্ত সমাবেশ ঘিরে এলাকায় চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এর ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা আছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

হজরত শাহ সুফী সৈয়দ কালু শাহ (রহ)–এর মাজার ৮ জানুয়ারি ১৭৯তম বার্ষিক ওরস উপলক্ষে ব্রহ্মপুত্র নদের পারে কাওয়ালি গানের আয়োজন করেন ভক্তরা। রাত ১১টার দিকে গানের অনুষ্ঠান শুরুর পর সাড়ে ১১টার দিকে সেখানে হামলা হয়। দ্রুত শিল্পীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। মঞ্চ ও চেয়ার গুঁড়িয়ে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে রাত তিনটার দিকে মাজারে হামলা হয়। মাজারের পাকা স্থাপনার কিছু অংশ ও ভেতরে থাকা জিনিসপত্র ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ৯ জানুয়ারি রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় মাজারটির অর্থ সম্পাদক মো.

খলিলুর রহমান বাদি হয়ে ১ হাজার ৫০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন।

মাজারে হামলা, ভাঙচুর, লুটতরাজ, দান বাক্স ডাকাতি ও কোরান শরীফ পোড়ানোর ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ সুফিবাদ ঐক্য পরিষদ আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় মানববন্ধনের আয়োজন করে। ভাঙচুর করা মাজারের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করলে উত্তেজনা শুরু হয়। সোমবার রাতে ময়মনসিংহ বাউল সমিতির সাধারণ রেজাউল করিম আসলাম নিজের ফেসবুকে কর্মসূচি প্রকাশ করেন। তবে আজ রেজাউল করিম আসলামের মুঠোফোনে চেষ্টা করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মাজারের সামনে গিয়ে দেখা যায়, কোনো লোকজন নেই। পাশেই একটি গাড়িতে পুলিশ বসে আছে। ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি জানিয়ে চলছে মাইকিং।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, মাজারের পক্ষে ও বিপক্ষে একই সময়ে দুই পক্ষের সমাবেশ ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঠাকুরগাঁওয়ে বন্ধ বিমানবন্দর চালুসহ চার দাবিতে মানববন্ধন

ঠাকুরগাঁওয়ে বন্ধ বিমানবন্দর চালু, মেডিকেল কলেজ, ইপিজেড ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নাগরিক উন্নয়ন ফোরামের ব্যানারে আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শহরের চৌরাস্তায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে জেলার সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যদের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে মানববন্ধনে অংশ নিতে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে শহরের চৌরাস্তায় জড়ো হতে শুরু করেন লোকজন। পরে দুপুর ১২টার দিকে নাগরিক উন্নয়ন ফোরামের সমন্বয়ক সত্য প্রসাদ ঘোষের সভাপতিত্বে মানববন্ধন শুরু হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমিন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, জেলা ট্রাক-ট্যাংকলরি-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি হাবিবুল ইসলাম, রিভারভিউ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল মুবিন, সাংবাদিক কামরুল হাসান প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ১৯৪০ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে ঠাকুরগাঁওয়ে সাড়ে ৫০০ একর জমিতে বিমানবন্দরটি নির্মাণ করা হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও-ঢাকা রুটে নিয়মিত উড়োজাহাজ চলাচল করত। কিন্তু ১৯৭৯ সালে লোকসানের অজুহাতে বিমানবন্দরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে স্থানীয় মানুষের দাবির মুখে ১৯৯৪ সালে বিমানবন্দরটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং বিভিন্ন সংস্কারকাজ করা হয়।

ছয়টি বেসরকারি সংস্থা ঢাকা-ঠাকুরগাঁও রুটে উড়োজাহাজ সার্ভিস চালু করার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তি করে। কিন্তু তা বাস্তবায়িত না হওয়ায় বিমানবন্দরটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। বক্তাদের দাবি, বিমানবন্দরটি চালু হলে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ সেবা চালুর সুযোগ সৃষ্টি হবে।

মানববন্ধনে এ দাবির পাশাপাশি ঠাকুরগাঁওয়ে একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের দাবি তুলে বক্তারা বলেন, প্রতিটি জেলায় একটি করে সরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের প্রতিশ্রুতি থাকলেও ঠাকুরগাঁওবাসী বারবার বঞ্চিত হয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে জনবলসংকট ও রোগীর চাপে মানসম্মত চিকিৎসাসেবা দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।

মানববন্ধনে একাত্মতা ঘোষণা করে জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমিন বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সার্বিক উন্নয়নের দিকে ধাবিত হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই চার দাবির কতটুকু পূরণ করতে পারবে, জানি না। বিগত ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদের কিছুই দিতে পারেনি, যদিও এই এলাকায় তাদেরই প্রতিনিধি জনপ্রতিনিধিত্ব করেছে। আমরা অনুরোধ করব, এই দাবি আরও সোচ্চারভাবে তোলার। যদি এই সরকার না-ও পারে, আগামীতে যে সরকার আসুক না কেন, বিএনপি বিমানবন্দর চালু, মেডিকেল কলেজ, ইপিজেড ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবির পক্ষে আপনাদের পাশে থাকবে। আর যদি বিএনপি সরকার গঠন করতে পারে, তাহলে এই দাবিগুলো পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ হলাম।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিপিএলে দল পেতে আগ্রহ ১০ প্রতিষ্ঠানের
  • জয়ে শুরু চট্টগ্রামের, অভিষেকে ড্র ময়মনসিংহের, ৩ রানের আক্ষেপ জিশানের
  • স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া সন্দেহে বড় ভাইকে কুপিয়ে হত্যা 
  • ঠাকুরগাঁওয়ে বন্ধ বিমানবন্দর চালুসহ চার দাবিতে মানববন্ধন
  • ময়মনসিংহে হাসপাতালে ভর্তির ৬ ঘণ্টা পর ডেঙ্গু আক্রান্ত নারীর মৃত্যু
  • সন্ধ্যায় উপকূল অতিক্রম করতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’
  • জাতীয় ক্রিকেট লিগ: ময়মনসিংহের রাকিবুলের এক ইনিংসেই ৯ উইকেট, তিন দিনে জিতে গেল খুলনা
  • জামালপুরে কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে ইজিবাইকের সংঘর্ষে তিনজন নিহত
  • ৩৪তম সেঞ্চুরির দিনে ১১ হাজারের মাইলফলকে নাঈম
  • ভৈরববে জেলা ঘোষণার দাবিতে মহাসড়ক ব্লকেড