আরজি কর কাণ্ড: অভিযুক্ত সঞ্জয়ই দোষী
Published: 18th, January 2025 GMT
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর মেডিকেল কলেজে কর্তব্যরত চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় গ্রেপ্তার সঞ্জয় রায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। আগামী সোমবার তার সাজা ঘোষণা করা হবে। শনিবার এ রায় ঘোষণা করেন শিয়ালদহের অতিরিক্ত দায়রা জজ অনির্বাণ দাস। খবর আনন্দবাজার অনলাইন।
২০২৪ সালের অগাস্টে কলকাতায় ইন্টার্ন চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা পুরো ভারতকে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। এই ঘটনার বিচার দাবিতে চিকিৎসকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ পশ্চিমবঙ্গে আন্দোলনে নেমেছিল।
শিয়ালদহ আদালত ভবনের তিনতলার ২১০ নম্বর কক্ষে স্থানীয় সময় শনিবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিট নাগাদ এজলাস বসে। বিচারক অনির্বাণ দাস সঞ্জয়কে এজলাসে নিয়ে আসার নির্দেশ দেন। সঞ্জয় এজলাসে বিচারক জানান, তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে।
বিচারক বলেন, “চার্জশিটে আপনাকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪, ৬৬, ১০৩(১) ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই ধারায় চার্জগঠন করা হয়েছে। যে সাক্ষীদের জেরা করা হয়েছে এবং সিবিআইয়ের আইনজীবীরা যা নথি ও তথ্য নিয়ে এসেছেন, তাতে আপনার অপরাধ প্রমানিত। আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হল।”
তিনি আরো বলেন, “যেভাবে আপনি গলা চেপে ধরে হত্যা করেছেন, তাতে যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। আপনার এবং আপনার আইনজীবীর কথা সোমবার শুনব।”
বিচারকের রায় শুনেই চিৎকার করে ওঠেন সঞ্জয়। হাত জোড় করে বলে ওঠেন, “আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা। আমি যদি ওখানে সত্যিই কিছু করতাম, মালা তো ছিঁড়ে যেত। আমাকে পুরো ফাঁসানো হচ্ছে।”
সঞ্জয়ের কথা শুনে বিচারক বলেন, “সিবিআই এবং সাক্ষীদের বয়ানের ভিত্তিতে আমার যা মনে হয়েছে, তার ভিত্তিতেই আমি দোষী সাব্যস্ত করেছি। শাস্তি আপনাকে পেতেই হবে। কী শাস্তি, সেটা সোমবার জানাব।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আবারও নিরপরাধ দাবি হিটু শেখের, ভিন্ন কথা সাক্ষীদের
আলোচিত শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় তৃতীয় দিনের মতো গতকাল মঙ্গলবার সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে মাগুরায়। এদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে ১০ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এদিনও মামলার প্রধান আসামি আছিয়ার বোনের শ্বশুর হিটু শেখ আদালত কক্ষে ঢোকার আগে সাংবাদিকদের কাছে নিজেকে নিরপরাধ দাবি করেন। কিন্তু আদালত সূত্র জানায়, সাক্ষীরা প্রত্যেকে হিটু শেখের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এর আগে সোমবার ছিল এই মামলার দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্য গ্রহণ। সেদিনও শুনানি শেষে আদালত থেকে বের হওয়ার সময় হিটু শেখ নিজেকে নিরপরাধ দাবি করেন।
গতকাল কড়া নিরাপত্তার মধ্যে হিটু শেখসহ ৪ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী-শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, গত তিন কার্যদিবস টানা সাক্ষ্য গ্রহণ চলেছে। গতকাল ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষীদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, আছিয়ার বোন হামিদা ছিলেন। এ নিয়ে মোট ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হলো। এ মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে। আজ বুধবার মাগুরা ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা সাক্ষ্য দেবেন। গতকাল আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বাধীনভাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। তিনি আদালতে আসামিরা নির্দোষ বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন।
গতকালও আদালত কক্ষে ঢোকার আগে হিটু শেখ ঘটনার জন্য তাঁর পুত্রবধূ আছিয়ার বোনকে দায়ী করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। হিটু শেখ বলেন, ঘটনার সময় আমিসহ আমার দুই ছেলে বাড়িতে ছিলাম না। সকালে বাইরে যাওয়ার সময়ও আছিয়াকে সুস্থ দেখে গেছি। আছিয়ার বোন এ সময় একাই বাড়িতে ছিল। সাংবাদিকরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখেন। দোষী হলে যে শাস্তি হয়, মাথা পেতে নেব।
বোনের বাড়ি বেড়াতে এসে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুর হিটু শেখের ধর্ষণের শিকার হয় ৮ বছরের শিশু আছিয়া। ঢাকা সিমএমএইচে ১৩ মার্চ তার মৃত্যু হয়।