কক্সবাজারের টেকনাফ থানা পুলিশের অভিযানে গহীন পাহাড় থেকে অপহৃত ১৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মধ্যম কচ্ছপিয়া এলাকার একটি পাহাড়ের চূড়ায় এ অভিযান চালানো হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বাহারছড়া ইউনিয়নের কচ্ছপিয়া করাচি পাড়ার বাসিন্দা নুরুল কবিরের ছেলে মো.

হারুন (২৫) ও নুর মোহাম্মদ (১৯)। 

পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অপহরণকারীরা ভিকটিমদের প্রলোভন দেখিয়ে গত ১৬-১৭ দিন ধরে বিভিন্ন সময়ে পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে এবং মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করে। অভিযানে উদ্ধার হওয়া ভিকটিমদের মধ্যে পাঁচ জন বাঙালি এবং ১০ জন রোহিঙ্গা। এদের মধ্যে ছয় জন শিশু রয়েছে। ভিকটিমরা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের বাসিন্দা।”

পুলিশ সুপার জানান, অভিযানের সময় গ্রেপ্তারকৃত দুই ব্যক্তি ছাড়া ১০-১৫ জন অজ্ঞাতনামা অপহরণকারী পাহাড়ি এলাকায় পালিয়ে যায়। গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে বাংলাদেশি ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের কাজে জড়িত ছিল। পালিয়ে যাওয়া অপহরণকারীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে এবং গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এই ঘটনায় আইনানুগ প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

ঢাকা/তারেকুর/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপহরণক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘কারফিউ ভেঙে নারীদের সমাবেশের স্মরণে শাহবাগে সমাবেশ, ৩ দফা দাবি

‘কারফিউ ভেঙে নারীদের সমাবেশ’–এর এক বছর পূর্তিতে প্রগতিশীল নারী সংগঠন, স্বতন্ত্র অধিকারকর্মী এবং নারী শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আজ সোমবার বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে স্মরণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখান থেকে তিন দফা দাবি জানানো হয়। সমাবেশের প্রতিপাদ্য ছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রাম চলবেই।

গত বছরের ২৭ জুলাই কারফিউ ভেঙে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার নারীরা পল্টন মোড়ে ‘হামার বেটাক মারলু ক্যানে’ শীর্ষক একটি সমাবেশ করেছিলেন।

সমাবেশে নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনামলের অবসান ঘটলেও এখনো ফ্যাসিবাদী কাঠামোর অবসান হয়নি। বরং দিন দিন নব্য ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটছে। যেখানে পাহাড়–সমতলের একের পর এক নারী নিপীড়ন, ধর্ষণ ও মব সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছে। অন্যদিকে নিপীড়ককে আশ্রয় ও দায়মুক্তি দিচ্ছে রাষ্ট্র।

তথ্য আপা রাজস্বকরণ আন্দোলনের প্রতিনিধি রোমানা ইসলাম বলেন, তথ্য আপারা দুই মাস ধরে প্রেসক্লাবে তাঁদের চাকরি রাজস্বকরণের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করছেন, বসে আছেন। অথচ তাঁদের চাকরি নিশ্চিত করা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো দৃষ্টি নেই। তাঁদের ৭ বছর কর্মজীবনে বেতন থেকে কেটে নেওয়া ২০ কোটি টাকাও ফেরত দেওয়া হচ্ছে না।

হিল উইমেনস ফেডারেশনের সদস্য রুপসী চাকমা বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের পর কল্পনা চাকমার অপহরণ মামলার সুষ্ঠু বিচার হবে, তাই ভেবেছিল বাংলাদেশের নারী সমাজ। কিন্তু চিহ্নিত অপহরণকারী লেফটেন্যান্ট ফেরদৌস নিরাপদে ঘুরে বেড়ালেও কল্পনা চাকমার যে মামলাটি আওয়ামী সরকার খারিজ করেছে, তা একইভাবে বলবৎ আছে এবং মামলা পুনরায় শুরুর জন্য শুনানির তারিখ বারবার পেছাচ্ছে।

বম স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি লালরিথাং বম অভিযোগ করেন, আওয়ামী সরকার বম জাতির ওপর ‘কালেক্টিভ পানিশমেন্ট’–এর নামে যত্রতত্র থেকে নিরীহ বমদের আটক শুরু করেছিল। আজও কারাগারে বমরা আটকে আছে। তিনজন বম ব্যক্তিকে কারাগারে অত্যাচারের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে হত্যা করা হয়েছে।

আজ সমাবেশ থেকে তিন দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো, দুই মাস ধরে আন্দোলনরত তথ্য আপাদের চাকরি রাজস্বভুক্ত করতে হবে; নিম্ন আদালতে কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলা খারিজের আদেশ বাতিল করে পুনঃ তদন্ত ও চিহ্নিত অপহরণকারী লে. ফেরদৌস গংদের বিচারের আওতায় আনা এবং পাহাড় ও সমতলে নারী ধর্ষণ, নিপীড়ন এবং মব সন্ত্রাসের বিচার করতে হবে এবং কারাগারে আটক সব বমকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।

সমাবেশে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য মারজিয়া প্রভার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন শহীদ শেখ ফাহমিন জাফরের মা কাজী লুলু মাখামিন শিল্পী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক অর্ণি আনজুম প্রমুখ।

পাশাপাশি সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন অ্যাকটিভিস্ট ও কবি ফেরদৌস আরা রুমী, আইনজীবী সাদিয়া আরমান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সদস্য জাকিয়া শিশির, অ্যাকটিভিস্ট প্রাপ্তি তাপসী, চিকিৎসক সুরাইয়া ইয়াসমিনসহ আরও অনেকে।

সমাবেশে সূচনা ও সমাপনী সংগীত পরিবেশন করে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘কারফিউ ভেঙে নারীদের সমাবেশের স্মরণে শাহবাগে সমাবেশ, ৩ দফা দাবি