নান্দাইল উপজেলায় সাড়ে তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দুই বছর আগে নির্মিত সেতুটি এখনও সংযোগ সড়কবিহীন। সরু কাঁচা রাস্তায় সেতু নির্মাণের কারণে মানুষের পুরোপুরি কাজে আসবে না বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

নান্দাইল-তাড়াইল পাকা সড়কের দরিল্লা গ্রাম থেকে একটি কাঁচা রাস্তা রাজগাতী ইউপির দাসপাড়া গ্রামের ভেতর দিয়ে দাসপাড়া মোড়ে আমলীতলা-কালীগঞ্জ বাজার পাকা সড়কের সঙ্গে মিলেছে। সাড়ে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের উঁচু-নিচু দরিল্লা-দাসপাড়া সরু রাস্তাটির মাঝখানে রয়েছে সুখাইজুড়ি নদী। প্রায় দুই বছর আগে এ নদীর ওপর স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করে, যা দাসপাড়া সেতু নামে পরিচিত। কিন্তু সংযোগ সড়কের অভাবে এতদিনেও সেতুটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

অন্যদিকে পুরো কাঁচা রাস্তার মাঝখানে বড় সেতু নির্মাণ হলেও বর্ষাকালে সড়ক ও সেতুটি কাজে আসবে না বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। ফলে ব্যয়বহুল সেতু নির্মিত হলেও এ অঞ্চলের চারটি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে না।

সরেজমিন দেখা গেছে, ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির ওপর স্থানীয়দের গোবর শুকানোর পাশাপাশি ঠিকাদারের কিছু নির্মাণসামগ্রী রাখা আছে। উঁচু সেতুটির দুই পাশে নিচু বালুময় সংযোগ সড়কে হাঁটতে গেলে পা দেবে যায়। সড়ক তৈরির জন্য কাটা মাটি বৃষ্টির পানিতে নদীতে চলে যাওয়ার চিহ্ন স্পষ্ট। সেখানে বিশ্রামরত কয়েকজন শ্রমিক দেখে জানতে চাইলে বলেন, তারা সেতুটির উভয় পাশে কিছু অংশে ইট বিছিয়ে সংযোগ সড়ক তৈরির কাজ করতে এসেছেন। রাস্তার বাকি অংশ কাঁচাই থাকবে। 
স্থানীয়রা জানান, রাস্তাটি যদি কাঁচাই থাকে, তাহলে সেতু নির্মাণেও তাদের দুর্ভোগ কমবে না। তাই তারা কাঁচা রাস্তায় বড় সেতু নির্মাণের কারণ বুঝতে পারছেন না।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আলীম উদ্দিনের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, দুই বছর ধরে সংযোগ সড়কের অভাবে লোকজন চলাচল করতে পারছে না। 
স্থানীয় বিল ভাদেড়া গ্রামের পথচারী ইব্রাহিম জানান, আশপাশের ১০টি গ্রামের মানুষ শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো, আবার বর্ষায় নৌকা দিয়ে নদীটি পার হতো। দুই বছর আগে এখানে সেতু নির্মাণ হলেও এখন পর্যন্ত সংযোগ সড়ক হয়নি। এখন কিছু সামান্য অংশে ইট বিছিয়ে সংযোগ সড়ক করা হবে বলে শুনেছেন; কিন্তু বাকি তিন কিলোমিটার রাস্তা কাঁচাই থেকে যাচ্ছে। এতে তাদের কষ্ট পুরোপুরি শেষ হবে না।

দাসপাড়া মোড়ের বাসিন্দা তোতা মিয়া বলেন, ‘এইহানে অত বড় বিরিজ (সেতু) অইব এইডা আমরা জীবনেও ভাবছি না। হইছে বালা (ভালো) হইছে; কিন্তু এই বিরিজ তো বর্ষাকালে আমরার কোনো কাজে লাগত না।’

ইজিবাইক চালক রাজু মিয়া জানান, রাস্তাটি পাকা করে তার পর সেতু নির্মাণ করা উচিত ছিল।

এ বিষয়ে এলজিইডির নান্দাইল উপজেলা প্রকৌশলী তৌহিদ আহমেদ বলেন, ইট বিছিয়ে সেতুটির উভয় পাশের কিছু অংশে সংযোগ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তার সামান্য অংশে ইট বিছানো হলেও বাকিটুকু কাঁচাই থেকে যাবে। এতে সেতুটি কতটুকু কাজে আসবে? এ প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, বাকিটুকু পরে অন্য কোনো প্রকল্প থেকে করে দেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স য গ সড়ক দ ই বছর ইট ব ছ সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

ডাকসু নির্বাচন কমিশন ও তফসিল ঘোষণা দাবিতে প্রশাসনকে ‘সালাম’

‘২ জুন কি পেলাম? কি পাওয়ার কথা ছিল? সালাম প্রশাসন!’- লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি- অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের কমিশন গঠন করতে হবে এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। 

রবিবার (১৫ জুন) দুপুর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

সোমবার (১৬ জুন) বিকাল ৫টায় অনুষ্ঠিতব্য হতে যাওয়া সিন্ডিকেট সভায় ডাকসু নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়টি এজেন্ডাভূক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে। আগামীকালের এ সভায় যেকোনোভাবে যেন ডাকসু নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলো পাশ হয়, সেজন্যই তাদের এমন তোড়জোড়।

আরো পড়ুন:

ঢাবিতে নামাজের কক্ষ নিয়ে বিতর্ক

ছাত্রদলের ফ্যাসিবাদী মনোভাবের প্রতিবাদ ডুজার

ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের আশঙ্কা, একটি পক্ষ ডাকসু নির্বাচন চায় না এবং এই পক্ষ বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে।

অনশনরত শিক্ষার্থী ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “ডাকসু নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে শক্তিশালী ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বিভিন্ন গোষ্ঠী বলার চেষ্টা করছে যে ডাকসু নির্বাচনের পরিবেশ নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগের দোসর আছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে পুরোপুরি সক্ষম নয়; সুতরাং ডাকসু নির্বাচন দেওয়া যাবে না।”

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্ব কি কেবল প্রশাসন-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের? কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ এবং হল সংসদে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরাসহ প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ব্যর্থতাগুলো লক্ষণীয়, সেগুলো ঘোচানোর জন্যই ডাকসু নির্বাচন প্রয়োজন।”

তিনি আরো বলেন, “আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল, ছাত্রলীগ যেভাবে হল নিয়ন্ত্রণ করা, দখলদারিত্ব কায়েম করা, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করা এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভিতর ক্ষমতার বলয় তৈরি করত-ঠিক এখনো আমরা এই প্রক্রিয়া দেখছি। আর এই প্রক্রিয়ার যারা এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে, তারাই মূলত ডাকসু নির্বাচনে বাঁধা দিতে চায়।”

এর আগে, ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে বিন আমিন মোল্লার নেতৃত্বে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কয়েকজন শিক্ষার্থী।

গত ২৩ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা ও প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমদ ২ জুনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনের ওয়াদা করলে অনশন ভাঙ্গেন তারা। সে সময় অনশন শেষে ইয়ামিনসহ দুই শিক্ষার্থীকে হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছিল।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ