ভোলার চরফ্যাসনে গভীর রাতে নারীর ঘরে ঢুকে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন শশীভূষণ থানা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি মিজান মুনসী। শুক্রবার চরকলমী ইউনিয়নের বকসীবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

আজ রোববার গণধোলাইয়ের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে বহিষ্কারের দাবী জানান। 

ভুক্তভোগী নারী জানান, মিজান মুনসী নানা অজুহাতে তার বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। বিভিন্ন সময় অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। শুক্রবার বিকেলে বাড়িতে এসে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে মোবাইল ফোন নম্বর নেন। যাওয়ার সময় বলে যান রাত ১১টায় আসবেন। গভীর রাতে বাড়ির পেছনের জানালা ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ঘরে প্রবেশ করেন। আতঙ্কিত হয়ে তাকে ঘরে ঢুকতে দেন। তিনি অশোভন আচরণ করলে চোর এসেছে বলে চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। তারা মিজানকে আটক করে গণধোলাই দেন। খবর পেয়ে তার সাঙ্গপাঙ্গরা এসে তাকে উদ্ধার করেন।  

এ ঘটনার পর অভিযুক্ত মিজান মুনসী চরফ্যাসন হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গণধোলাইয়ের ভিডিও ভাইরাল হলে মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে হাসপাতাল থেকে আত্মগোপনে চলে যান। এ কারণে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

চরকমলী ইউনিয়নের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান বেপারী জানান, ‘মিজান মুনসীকে রাতে আটক করে মারধর করা হয়েছে শুনেছি। তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। তার ফোন বন্ধ। বাসায়ও তাকে পাওয়া যায়নি।’ 

উপজেলা মৎস্যজীবীদ ল সভাপতি মো.

সোহাগ বলেছেন, এটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। স্থানীয় আওয়ামী লীগের কিছু সমর্থক রাতর আধারে তার ওপর হামলা করেছে। 
শশীভূশষণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিক হাসান রাসেল জানান, বিষয়টি শুনেছি। ভুক্তভোগী নারী কোনো অভিযোগ করেননি। তিনি অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

যমুনা সেতুর যানজট এড়াতে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে যানবাহনের চাপ

ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরতি পথে যমুনা সেতু-সংলগ্ন মহাসড়কে তীব্র যানজট। তাই অনেকে পাবনার কাজীরহাট ফেরিঘাট দিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন। কাজীরহাট-আরিচা ফেরিঘাটে ভোগান্তি ছাড়াই যানবাহন পারাপার হচ্ছে। আগের ৪টি ফেরির সঙ্গে আরও ২টি যুক্ত হওয়ায় এই নৌপথে মোট ৬টি ফেরি চলাচল করছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) ও বাস কাউন্টারগুলোর সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে যমুনা সেতু-সংলগ্ন সড়কে যানজট শুরু হয়। শুক্র ও গতকাল শনিবার যানজট তীব্রতর হয়। এর মধ্যে শনিবারের যানজটে পাবনা-ঢাকা পথে যাতায়াতকারী অনেক বাস আটকে পড়ে। এতে পাবনা, বেড়াসহ বিভিন্ন বাস কাউন্টারে ঢাকাগামী বাসের সংকট দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকাগামী বাস ও ব্যক্তিগত ছোট গাড়িগুলো যমুনা সেতুর যানজট এড়াতে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথের ফেরি পারাপার বেছে নেয়। এতে আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত কাজীরহাট ফেরিঘাটে ঢাকাগামী বিভিন্ন যানবাহনের চাপ আছে।

বিআইডব্লিউটিসির কাজীরহাট ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘আগে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে ৪টি ফেরি চলাচল করত। ঈদ উপলক্ষে এখন আরও ২টি ফেরি বাড়িয়ে মোট ৬টি ফেরি করা হয়েছে। এগুলো হলো ২টি রো রো ফেরি শাহ আলী ও বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান এবং ৪টি সেমি রো রো ফেরি বাইগার, গৌরী, চিত্রা ও ধানসিঁড়ি। এই ৬টি ফেরি দিয়ে নির্বিঘ্নে যানবাহনের চাপ সামলানো যাচ্ছে। বাসসহ যানবাহনগুলোকে ফেরিঘাটে বেশি দেরি করতে হচ্ছে না।’

কাজীরহাট ফেরিঘাট হয়ে ঢাকামুখী আলহামরা পরিবহনের যাত্রী আবু হানিফ বলেন, ফেরিতে ওঠানামা মিলিয়ে আড়াই ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে। আর আরিচা থেকে ঢাকা পর্যন্ত তেমন যানজট ছিল না। খুব ভালোভাবে ঢাকা পৌঁছাতে পেরেছেন। অথচ আরও দুই ঘণ্টা আগে রওনা দিয়েও তাঁর পরিচিত একটি পরিবারকে যমুনা সেতু-সংলগ্ন সড়কে ৫-৬ ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়।

বিআইডব্লিউটিসির কাজীরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। তবে সবচেয়ে বেশি চাপ ছিল শনিবার। আমাদের বেশ বেগ পোহাতে হলেও যানবাহনগুলো ভালোভাবে পার করে দিয়েছি। শনিবার আমাদের এই ঘাট হয়ে ফেরিতে ১০১টি বাস, ৪০১টি ছোট গাড়ি ও ৮০টি ট্রাক পার হয়েছে। আর আজ রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৫টি বাস, ১৬টি ট্রাক, ৪২টি ছোট গাড়ি ও ২০০টি মোটরসাইকেল পার হয়েছে।’

বেড়া ও ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী আলহামরা পরিবহনের বেড়া শাখার ব্যবস্থাপক বরকত আলী বলেন, ‘যমুনা সেতুর যানজটে আমাদের কয়েকটি বাস এখনো আটকে আছে। এতে নির্ধারিত সময়ে শুধু আমাদের বাসই নয়, অন্য কোম্পানির বাসগুলোও ঢাকার উদ্দেশে ছাড়তে পারছে না। আর কোনো বাস ঢাকা থেকে বেড়া এসে পৌঁছানোর পর সেই বাস এখন থেকে আমরা কাজীরহাট ফেরিঘাট হয়ে ঢাকায় পাঠিয়ে দিচ্ছি। বতর্মান অবস্থায় এই পথে যাতায়াতে যাত্রীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ