চলতি ২০২৫ সালে ভিয়েতনামের চাল রপ্তানি কমতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এ বছর ভিয়েতনাম ৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন বা ৭৫ লাখ টন চাল রপ্তানি করতে পারে। যেখানে গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে দেশটি চাল রপ্তানি করেছিল ৯ মিলিয়ন বা ৯০ লাখ টন।

চীনের সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার সংবাদে বলা হয়েছে, চলতি বছর ভিয়েতনামের চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৪০ লাখ টন। তার মধ্যে ৭৫ লাখ টন রপ্তানি করা হবে। বিশ্ববাজারে চালের প্রধান রপ্তানিকারক দেশগুলোর একটি হচ্ছে ভিয়েতনাম। প্রধান দেশ হলো ভারত। এই দুটি দেশের চাল রপ্তানির হ্রাস-বৃদ্ধির ওপর বিশ্ববাজারে চালের দাম নির্ভর করে।

সিনহুয়ার সংবাদে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ভাগেই বেশির ভাগ চাল রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সময় দেশটি ৪ দশমিক ৫৩ মিলিয়ন বা ৪৫ লাখ ৩০ হাজার টন চাল রপ্তানি করবে। বাকি ৩ মিলিয়ন টন বা ৩০ লাখ টন চাল রপ্তানি করবে বছরের দ্বিতীয় ভাগে।

গত কয়েক বছর ভারত চাল রপ্তানিতে বেশ কয়েকবার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। গত বছরের শেষ ভাগে ভারত বাসমতী ভিন্ন অন্যান্য চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। পাশাপাশি ভারত সরকার সেদ্ধ চালের রপ্তানি শুল্কও কমিয়েছে। আগে এই শুল্ক ছিল ২০ শতাংশ, যা এখন কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। সে জন্য ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছর বিশ্ববাজারে ভারতের চাল রপ্তানি আরও ২২ মিলিয়ন বা ২ কোটি ২০ লাখ টন বাড়বে। এই পরিস্থিতিতে ভিয়েতনামের চাল রপ্তানি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

২০২৩ সালে ভারত চাল রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করলে বিশ্ববাজারে চালের দাম বেড়ে যায়। ভারত চাল রপ্তানিতে নানা রকম বিধিনিষেধ দেওয়ার কারণে এশিয়া ও আফ্রিকার ক্রেতারা এই শস্য কিনতে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও মিয়ানমারের দ্বারস্থ হন। চাহিদা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণে এসব দেশে চালের রপ্তানির মূল্য গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যায়। তবে ভারত চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় চলতি বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কিছুটা কমবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে বছরে মোট যত চাল কেনাবেচা হয়, তার ৪০ শতাংশই আসে ভারত থেকে। গত কয়েক বছরে ভারত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে চাল রপ্তানি করেছে। তাদের রপ্তানি করা চালের প্রধান কিছু জাতের মধ্যে আছে বাসমতী চাল, সেদ্ধ চাল ও অন্যান্য অ-বাসমতী চাল।

চাল রপ্তানিতে ভারতের পরেই আছে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম। ভিয়েতনাম মূলত উচ্চ গুণমানসম্পন্ন সুগন্ধি চালের জন্য পরিচিত; এই চাল আন্তর্জাতিক বাজারে বেশ জনপ্রিয়। অন্যদিকে থাইল্যান্ডও তাদের বিভিন্ন জাতের চাল রপ্তানি করে থাকে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল খ টন বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

চাষাঢ়ায় আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলার রায় ১ আগষ্ট 

নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় আওয়ামী লীগ অফিসে বর্বরোচিত বোমা হামলার রায় আগামী ১ আগষ্ট। দীর্ঘ ২৪ বছর পরে অবশেষে আলোচিত এই মামলাটির বিচার কাজ শেষ হতে যাচ্ছে।

২০০১ সালের ১৬ জুন চাষাঢ়া আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনায় ২০ জন নেতাকর্মী নিহত হয়। সেদিন নিহত হয়েছিল শহর ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুল হাসান বাপ্পী, সরকারী তোলারাম কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদের সাবেক জিএস আকতার হোসেন ও তার ভাই সঙ্গীত শিল্পী মোশাররফ হোসেন মশু, সঙ্গীত শিল্পী নজরুল ইসলাম বাচ্চু, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের তৎকালীন যুগ্ম সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ভাসানী, নারায়ণগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এ বি এম নজরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সাইদুর রহমান সবুজ মোল্লা, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী পলি বেগম, ছাত্রলীগ কর্মী স্বপন দাসসহ ২০ জন।

নৃশংস এ বোমা হামলার ঘটনায় দু’টি মামলা দায়ের করা হয়। এক যুগ পরে ২০১৩ সালে ৬জনকে অভিযুক্ত ও ৩১জনকে অব্যাহতি প্রদান করে চার্জশীটটি দাখিল করে তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি।

অভিযুক্ত ৬জন হলেন সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতা শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান (ইতোমধ্যে অপর এক মামলায় মৃত্যুদন্ড কার্যকর), জঙ্গী নেতা ওবায়দুল্লাহ রহমান, ভারতের দিল্লী কারাগারে আটক সহোদর আনিসুল মোরসালিন, মুহিবুল মুত্তাকিন ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এর ১২নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু।

দু’টি মামলায় ১৩৮ জনকে সাক্ষী করা হলেও গত ১২ বছরে সাক্ষ্যগ্রহণের কাজও চলেছে অনেক ঢিমেতালে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় থাকলেও চাঞ্চল্যকর এই মামলার বিচার করা নিয়ে সদিচ্ছার অভাব ছিল। সাক্ষ্যগ্রহণ অত্যন্ত ধীরগতিতে হওয়ায় নিহত ও আহতদের স্বজনরাও ছিলেন চরম হতাশ।

মামলাটির বিচার কার্যক্রম প্রসঙ্গে আদালতের ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক নয়ন জানান, বিগত সরকারের আমলে মামলাটির বিচার কাজে দীর্ঘসূত্রিতা ছিল।

আলোচিত এই মামলায় ১৯ জন সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি দ্রুত নিস্পত্তির চেষ্টা করেছি। আশা করছি আগামী ১ আগস্ট মামলাটির রায় ঘোষণা করবেন আদালত। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ