রাজধানীতে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের ফ্ল্যাগশিপ উদ্যোগ ডিজিটাল সামিটের ১১তম আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘ডিজিটাল রেনেসাঁ: ইনোভেটিং ফর টুমরোস কনজ্যুমার’ শিরোনাম ধারণ করে চলতি বছরের সামিটে দুটি কিনোট সেশন, চারটি প্যানেল ডিসকাশন ও দুটি ইনসাইট সেশনে বক্তারা ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের গ্রুপ সিইও ও নির্বাহী সম্পাদক সাজিদ মাহবুব বলেন, ডিজিটাল পরিবর্তন এখন আর শুধু বিকল্প নয়, বরং অত্যাবশ্যকীয়। এমন সময়ে আছি, যেখানে ডিজিটাল রূপান্তর, ব্যবসা ও ব্র্যান্ডের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগের ধরন বদলে যাচ্ছে। নতুন পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে উদ্ভাবনী হতে হবে, দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে আর ভোক্তার চাহিদা বুঝতে হবে।
সম্মেলনের লক্ষ্যই হলো বিশেষজ্ঞ বক্তা ও অতিথিদের আলোচনার মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের প্রাসঙ্গিক সবকটি বিষয়ে ধারণা দেওয়া, যা নতুনভাবে চিন্তা করতে, ভোক্তার সঙ্গে ভালোভাবে সংযুক্ত হতে ও ডিজিটাল জগতে সফলভাবে এগিয়ে যেতে সহায়ক হবে।
ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডেটাভিত্তিক কৌশলের পরিবর্তনশীল ভূমিকা প্রসঙ্গে বলেন, ব্যবসার বহুমুখী চ্যালেঞ্জ সামলে নিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ খুবই ফলপ্রসূ, যা ইউনিলিভার তাদের কার্যক্রমে যুক্ত করেছে। ব্যক্তিকরণ ও 
মাল্টি-চ্যানেল কৌশলের গুরুত্ব সময়োপযোগী, যা ডিজিটাল যুগের ভোক্তার বহুমাত্রিক চাহিদা পূরণে সহায়ক সঞ্চালক হবে।
অন্যদিকে, ডেটা অ্যানালিটিকস, মেশিন লার্নিং ও মানোন্নত অ্যালগরিদম ব্যবহার করে বাজারের চাহিদা আগেভাগে বোঝা, ইনভেন্টরি ঠিকভাবে পরিচালনা করা ও কার্যকর বিপণন কৌশল তৈরি করা সম্ভব।
কিনোট সেশনে বক্তব্য দেন ইউনিলিভার বাংলাদেশ চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার, টেলিকম বিষেশজ্ঞ ও বিল্ডকন কনসালট্যান্সিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ। হাইপার পার্সোনালাইজেশন অর্থনীতির সঙ্গে ডেটাভিত্তিক সৃজনশীল চর্চায় ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বৈপ্লবিক ভূমিকার প্রসঙ্গে কথা বলেন বক্তারা।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা

রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।

এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।

এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।

সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।

এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।

রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ