দেশ এখন চোর, ডাকাত আর ছিনতাইকারীর অভয়ারণ্য মন্তব‌্য ক‌রে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলে‌ছেন, “দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত। আইন-শৃঙ্খলার এত নাজুক অবস্থা স্মরণকালে নেই বললেই চলে।”

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়ত‌নে নি‌জের জন্ম‌দি‌ন অনুষ্ঠা‌নে তি‌নি এসব কথা ব‌লেন।

পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা, ফুলেল শুভেচ্ছা ও কেক কাটা অনুষ্ঠানের আ‌য়োজন ক‌রে জাতীয় পা‌র্টি।

আরো পড়ুন:

পূজায় বরাদ্দ ৪ কোটি টাকা, দশমী পর্যন্ত থাকবে বিশেষ নিরাপত্তা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা 

পুলিশকে জনবান্ধব ফোর্সে রূপান্তরের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

আইন-শৃঙ্খলার চরম অবন‌তি‌তে সরকা‌রের সমা‌লোচনা ক‌রে বি‌রোধীদ‌লের সা‌বেক এই নেতা বলেন, “শুধু রাজধানী নয়, সারা দেশেই মানুষ আতঙ্কে ঘুমাতে পারছে না। দেশ এখন চোর, ডাকাত আর ছিনতাইকারীর অভয়ারণ্য। দেশ যেনো এক আতঙ্কের রাজ্য।”

“আমরা আগেও বলেছি, অপারেশন ডেভিল হান্ট বিরোধীমত দমনে পরিচালিত হচ্ছে। নিরাপদ মানুষদের ধরে অন্যায়ভাবে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হচ্ছে। তাদের হয়রানি ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।” অপরাধীরা বুক চিতিয়ে অপরাধ করে বেড়াচ্ছে ব‌লেও মন্তব‌্য ক‌রেন তি‌নি।

রাজনীতিতে বিভাজন সৃষ্টি না করে সবাইকে নিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

‌দিনভর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মী, বন্ধু ও স্বজন এবং সুশীল সমাজের ভালোবাসায় সিক্ত হন গোলাম মোহাম্মদ কাদের। এ সময় তি‌নি দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে আজীবন কাজ করার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

সকাল থেকেই জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে ফুল, মিষ্টি ও কেক নিয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে আসেন জাতীয় পার্টি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় আনন্দঘন পরিবেশে নেতাকর্মীরা পার্টি নেতাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তার দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানায় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিনর হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, নাসরিন জাহান রতনা, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নাজমা আকতার, সৈয়দ দিদার বখত, লিয়াকত হোসেন খোকা, জহিরুল ইসলাম জহির, জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা, ড.

নুরুল আজহার শামীম, আমিনুল ইসলাম মন্ডল, প্রফেসর গোলাম মোস্তফা, মো. খলিলুর রহমান খলিল, ইঞ্জিনিয়ার মনির হোসেন, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন, জাহিদ হাসান, একেএম নুরুজ্জামান জামান, ভাইস চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন আহমেদ মুক্তি, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, এমএ সুবহান, আক্তার হোসেন দেওয়ান, নোমান মিয়া, হুমায়ুন খান, যুগ্ম মহাসচিব মো. আমির হোসেন ভূঁইয়া, শাহমীম আহমেদ রিজভী, জুবায়ের আলম খান রবিন, মো. হেলাল উদ্দিন, চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারী খন্দকার দেলোয়ার জালালী, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নির্মল চন্দ্র দাস, মিজানুর রহমান মিরু, মাসুদুর রহমান মাসুম, মাহমুদ আলম, এমএ রাজ্জাক খান, ইঞ্জিনিয়ার এলাহান উদ্দিন, সাবেক সমাজ কল্যাণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন মৃধা, আবু তৈয়ব, শারমিন পারভিন লিজা, সমরেশ মণ্ডল মানিক, সেলিমা খান, মো. নুরুজ্জামান, ইঞ্জিনিয়ার জুবায়ের আহমেদ, আবু ওয়াহাব, কেন্দ্রীয় নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা কেফায়েত উল্ল্যাহ নজিব, আল আমিন সরকার, মাহমুদুল হক মনি, শরিফুল ইসলাম, ওমর আলী মান্নাফ, মেহেদী হাসান শিপন, আনোয়ার হোসেন, সরদার নজরুল ইসলাম, তাসলিমা আকবর রুনা, সৈয়দ মনিরুজ্জামান, সাজ্জাদ পারভেজ চৌধুরী, মোতাহের হোসেন শাহীন, শফিকুল ইসলাম স্বপন, উজ্জ্বল চাকমা. আসাদুজ্জামান, আমিনুল হক, সাঈয়েদ, শাহজাহান মিয়া, আব্দুর রহিম, জাকির হোসেন খান, জাতীয় ছাত্রসমাজের আহ্বায়ক মারুফ ইসলাম তালুকদার প্রিন্স, সদস্য সচিব আরিফ আলী খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, মহানগর উত্তর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতারা। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ এম ক দ র ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্মরণকালের ভারি বৃষ্টি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্মরণকালের ভারি বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন সড়ক তলিয়ে গিয়ে বাড়িতেও প্রবেশ করেছে পানি। শুধু তাই নয়, বহু আবাদি জমি তলিয়ে ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে। একই সঙ্গে পানিতে ভেসে গেছে অনেক পুকুর। এতে মৎস্য চাষিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। রাত ৮টার পর শুরু হয় ভারি বৃষ্টিপাত। যা গভীর রাত পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে ২৬০ মিলিমিটার, শিবগঞ্জ ১৭৫ মিলিমিটার, গোমস্তাপুরে ১৮০ মিলিমিটার, নাচোলে ১৭৫ মিলিমিটার ও ভোলাহাটে ১৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। গড়ে জেলায় মোট বৃষ্টিপাতর রেকর্ড ১৯১ মিলিমিটার। 

রেকর্ড ভঙ্গ করে জেলায় স্মরণকালের ভারিবৃষ্টিপাত হয়েছে উল্লেখ করে জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো.ইয়াছিন আলী বলেন, “অতিরিক্ত বৃষ্টিতে কিছুটা ফসলের ক্ষতি হবে। বৃষ্টিতে পাকা ধান হেলে পড়েছে। এর পাশাপাশি শাক-সবজির কিছুটা ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।” 

তিনি আরো বলেন, “জমি থেকে পানি দ্রুত নেমে গেলে বা আর বৃষ্টি না হলে ফসলের বেশি ক্ষতি হবে না। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তারা কাজ করছেন।”

লঘুচাপের প্রভাবে শুক্রবার সারাদিনই মেঘলা ছিল। এদিন সন্ধ্যার পরে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। এরপরেই রাত ৮টার পর জেলাজুড়ে ভারিবৃষ্টিপাত হতে থাকে। যা চলতে থাকে গভীর রাত পর্যন্ত। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের নিউ মার্কেট, বালু বাগান, নিমতলা, অক্টোমোড়, ফুড অফিস, বাতেনখার মোড়, কোট চত্বরসহ বিভিন্ন নিম্ন এলাকায় হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায়। এছাড়াও অতিবৃষ্টিতে ঘর বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার আলমগীর হোসেন বলেন, “সারারাত বৃষ্টিতে আমাদের বাড়িঘর ও পানি ঢুকে পড়েছে। শহরে ড্রেন নির্মাণ কাজ চলছে। ড্রেন নির্মাণ কারণে দ্রুত পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। এর ফলে রাস্তাগুলোতে হাঁটু পানি জমে গেছে। এর পাশাপাশি বাড়িঘর পানি ঢুকে পড়েছে।”

ভারি বৃষ্টিপাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রায় এক কিলোমিটার রেললাইন পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জে থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে ২ ঘণ্টা ১৫ মিনিট দেরিতে। এছাড়াও ঈশ্বরদী থেকে ছেড়ে আসা চাঁপাইনবাবগঞ্জ অভিমুখী ৫ আপ রাজশাহী কমিউটার ট্রেনটি অতিরিক্ত পানির কারণে ৪ ঘণ্টা বড় পুকুরিয়া এলাকায় আটকা পড়ে। এর ফলে শত শত যাত্রী দুর্ভোগে পড়েছেন।

এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশন মাস্টার শহিদুল ইসলাম জানান, সারারাত বৃষ্টিতে আমনুরা থেকে সদর উপজেলা বড় পুকুরিয়ায় প্রায় এক কিলোমিটার ট্রেনের লাইন পানির নিচে তলিয়ে যায়। এর ফলে পুকুরিয়া এলাকায় ট্রেন চলাচল করতে পারছিল না। সেখানে ৫ আপ কমিউটার ট্রেনটি সারারাত আটকা ছিল। 

তিনি আরো জানান, বৃষ্টির পানি নামার পর শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ৮টা ১০ মিনিটে কমিউটার ট্রেনটি স্টেশনে প্রবেশ করে। শনিবার বনলতা ট্রেনটি নির্ধারিত শিডিউল থেকে প্রায় ২ ঘণ্টা পর চাঁপাইনবাবগঞ্জে থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

ভারি বৃষ্টিতে শুধুমাত্র চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় অন্তত ৫০টি পুকুর পানিতে ভেসে গেছে। এতে মৎস্য চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহীনূর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে বৃষ্টির কারণে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের পাগলা নদীর উপর নির্মিত একটি সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়কের মাটি সরে গেছে। এতে ব্রিজটি দিয়ে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

ঢাকা/শিয়াম/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্মরণকালের ভারি বৃষ্টি