অস্ট্রেলিয়ার এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে কে কে নেই—তালিকাটা বেশ লম্বাই। সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি লেগেছে তাদের পেস বোলিংয়ে। প্যাট কামিন্স ও জশ হ্যাজলউডের সঙ্গে এই টুর্নামেন্টে নেই মিচেল স্টার্কও। টুর্নামেন্ট শুরুর মাত্র এক সপ্তাহ আগে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে নিজের নাম সরিয়ে নেন তিনি।

স্টার্কদের ছাড়াই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে শুরুটা ভালো করেছে অস্ট্রেলিয়া। অনভিজ্ঞ বোলিং নিয়ে তারা হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে, সেমিফাইনালের দৌড়েও টিকে আছে বেশ ভালোভাবে। শুক্রবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের পর নির্ধারিত হবে ভাগ্য। এর মধ্যে নিজের সরে দাঁড়ানো নিয়ে প্রথমবারের মতো কথা বলেছেন স্টার্ক।

উইলো টক নামের এক পডকাস্টকে তিনি জানিয়েছেন, ‘কিছু ভিন্ন ভিন্ন কারণ রয়েছে, কিছু ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি, গোড়ালিতেও  হালকা ব্যথা লেগেছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টের সময়। ওগুলো ঠিক হওয়ার জন্যই (বিশ্রাম নেওয়া)।’

তবে এসবের বাইরেও বড় একটা উপলক্ষ সামনে রেখেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন স্টার্ক। অনেকে মনে করেন, আইপিএল সামনে রেখে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই বাঁহাতি পেসার। সেটি মাথায় থাকলেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জুনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালই আসল লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন স্টার্ক, ‘আইপিএলও সামনে আছে, কিন্তু আমার মাথায় টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালটাই বেশি করে আছে। ওটার জন্যই শরীর ঠিকঠাক থাকা দরকার। আগামী কয়েক মাস ভালো ক্রিকেট খেলে এরপর টেস্ট ফাইনালে নামতে চাই।’

জশ হ্যাজলউড, প্যাট কামিন্স ও মিচেল স্টার্ক।.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ