নোয়াখালীতে চাঁদাবাজি ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিএনপির তিন নেতাকে অব্যাহতি
Published: 7th, March 2025 GMT
নোয়াখালীর কবিরহাট, সদর ও হাতিয়া উপজেলায় বিএনপির তিন নেতাকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। চাঁদাবাজি, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে ওই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আজ শুক্রবার জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. হারুনুর রশিদ স্বাক্ষরিত পৃথক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাঁদের বিরুদ্ধে ওই শাস্তির কথা জানানো হয়।
অব্যাহতিপ্রাপ্ত তিন বিএনপির নেতা হলেন কবিরহাট উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ওরফে জসিম, সদর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি নুরুল আমিন ও হাতিয়া উপজেলার তমরুদ্দি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তানভির হায়দার ওরফে তান্না।
এর মধ্যে কবিরহাটের বাইটয়া ইউনিয়ন বিএনপির নেতা আবদুল কাদেরকে চাঁদাবাজি, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এবং বাকি দুজনকে দলীয় শৃঙ্খলাপরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
জানতে চাইলে দলের তিন নেতাকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো.
স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কবিরহাট উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে এলাকায় স্থানীয় ভূঁইয়ারহাট বাজারে একটি ব্যক্তিগত কার্যালয় নিয়ে বসেন। সেখানে তিনি বাজারের ব্যবসায়ীসহ এলাকার বাসিন্দা প্রবাসীদের ডেকে পাঠিয়ে চাঁদাবাজি শুরু করেন।
এর মধ্যে গত ৯ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরব থেকে দেশে আসা মহি উদ্দিন নামের এক প্রবাসীকে তাঁর কার্যালয়ে ডেকে পাঠান। ওই প্রবাসী ডাকে সাড়া না দেওয়ায় দুজন লোক (সুজন ও জাহাঙ্গীর) পাঠিয়ে তাঁর (আবদুল কাদের) সঙ্গে দেখা করতে বলেন। পরে আবার ওই দুই ব্যক্তির মাধ্যমে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। ১ মার্চ কাদেরের পাঠানো দুই ব্যক্তির কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা নেন। চাঁদা নেওয়ার ঘটনাটি ভিডিও ধারণ করে রাখেন প্রবাসী। পরবর্তী সময়ে ওই চাঁদাবাজির বিষয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কাছে লিখিত অভিযোগ করায় মুঠোফোনে ওই প্রবাসীকে গালমন্দ ও নানা হুমকি দেন আবদুল কাদের।
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য একাধিকবার মুঠোফোনে কল করা হলেও ধরেননি অব্যাহতিপ্রাপ্ত বিএনপির সাবেক নেতা আবদুল কাদের। পরে একপর্যায়ে তিনি মুঠোফোন বন্ধ করে দেন। তাই অভিযোগের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল ক দ র ব এনপ র স ন ব এনপ র প রব স উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ট্রাম্পের চুক্তি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য বিপজ্জনক নজির
যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে ২০ কোটি ডলারের চুক্তির মধ্য দিয়ে কয়েক মাসের টানাপোড়েনের অবসান ঘটেছে। তবে শিক্ষাবিদদের আশঙ্কা, এটি উচ্চশিক্ষার ওপর সরকারের ‘আক্রমণের’ প্রথম দফা মাত্র।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে হওয়া এ চুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনেক বিষয়ে সমঝোতা করতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর সরকারের নজরদারিও বেড়েছে।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্য অনেক উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষাবিদদের আশঙ্কা, এ চুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি যেভাবে অনেক ছাড় দিয়েছে ও সরকারের নজরদারি বেড়েছে, তা ভবিষ্যতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপরও একইভাবে চাপ প্রয়োগের নীলনকশা হয়ে উঠতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের শুরু করা ‘যুদ্ধের’ প্রথম নিশানা হয় নিউইয়র্কের এই বিশ্ববিদ্যালয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যে ইহুদিবিদ্বেষ তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের শুরু করা ‘যুদ্ধের’ প্রথম নিশানা হয় নিউইয়র্কের এ বিশ্ববিদ্যালয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যে ইহুদিবিদ্বেষ তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলা করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে।
এ অভিযোগের পর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় লাখ লাখ ডলারের ফেডারেল তহবিল হারায়। নতুন গবেষণা অনুদানের জন্য আবেদন করার সুযোগও বন্ধ হয়ে যায়। গবেষণাগারের জরুরি তহবিল স্থগিত হয়ে যায় এবং অনেক গবেষক চাকরি হারান।
তবে গত সপ্তাহে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকারকে ২০ কোটি ডলার দেওয়ার (জরিমানা হিসেবে) ও ইহুদিবিদ্বেষ–সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে সরকারি তদন্ত মীমাংসার জন্য অতিরিক্ত ২ কোটি ১০ লাখ ডলার পরিশোধে রাজি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর এত বড় মাত্রায় সরকারি হস্তক্ষেপ আগে হয়নি। সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি।ব্রেনডন ক্যান্টওয়েল, মিশিগান স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকআমেরিকান কাউন্সিল অন এডুকেশনের সভাপতি টেড মিচেল বলেন, আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরুর আগেই তহবিল কেটে নেওয়ায় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় একপ্রকার ‘টালমাটাল অবস্থায়’ পড়ে গেছে।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ডেভিড পোজেন এতে একমত পোষণ করে বলেন, শুরু থেকেই চুক্তিটি যেভাবে সাজানো হয়েছে, তা বেআইনি ও জোরজবরদস্তিমূলক। তিনি চুক্তিটিকে ‘চাঁদাবাজির বৈধ রূপ’ উল্লেখ করে এর কঠোর সমালোচনা করেন।
এ চুক্তির আওতায় শুধু ইহুদিবিদ্বেষের সমাধানই নয়, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি, ভর্তির সময় জাতি-বর্ণের বিষয়গুলো খেয়াল রাখা ও ক্যাম্পাসে ছেলে–মেয়েদের আলাদা জায়গাসহ কিছু বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সমঝোতা করতে হয়েছে।
চুক্তির আওতায় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একজন স্বাধীন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিতে রাজি হয়েছে। তাঁর কাজ হলো চুক্তি কার্যকর করা, জাতিগত পরিচয়ের ভিত্তিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের তথ্য সরকারকে দেওয়া ও ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিযোগ, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যে ইহুদিবিদ্বেষ তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে