ছাত্রদল নেতার হাত-পায়ের রগ কর্তন, অভিযোগ যুবলীগ ও ২ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে
Published: 9th, March 2025 GMT
বরিশালের বাকেরগঞ্জে মো. আসাদুল্লাহ নামে এক ছাত্রদল নেতাকে কুপিয়ে হাত-পায়ের রগ কাটার অভিযোগ উঠেছে বিএনপির নতুন কয়েক নেতা ও যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। শনিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার নিয়ামতি বাজারে এ ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় অভিযুক্তদের ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ রয়েছে- ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক সালাম মৃধার ছত্রছায়ায় ওই কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল ফরাজীর অনুসারীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ ঘটনায় সালাম মৃধাসহ দুজনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
আহত মো.
স্থানীয়রা জানান, সোহেল ফরাজীর পরিবার ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল। পরে ইউনিয়ন বিএনপির নেতা সালাম মৃধার হাত ধরে সোহেল ফরাজী বিএনপিতে প্রবেশ করেন। ধনাঢ্য সোহেল ফরাজী সৌদিপ্রবাসী। তিনি ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সভাপতি। অভিযোগ রয়েছে, আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে তিনি বিএনপিতে পদ পেয়ে যান। সোহেল ফরাজীর নির্দেশে তার বড় ভাই যুবলীগ কর্মী শাহীন ফরাজী ছাত্রদল নেতা আসাদুল্লাহকে কুপিয়ে হাত-পায়ের রগ কেটে দেন। আহত আসাদুল্লাহ খানকে প্রথমে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাতেই ঢাকায় নেওয়া হয়। বর্তমানে আসাদুল্লাহ ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আসাদুল্লাহর বাবা আলমগীর খা বলেন, ‘হামলায় শাহীন ফরাজীসহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ওয়াদুদ ফরাজী, শামীম ফরাজী, রাজিব ফরাজি, রফিক, মামুন, রুবেল বিজন, ইমনসহ আরও ১৫-২০ জন অংশ নেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে শাহীন ফরাজীরা আওয়ামী লীগ করত। কিন্তু এখন তারা নব্য বিএনপি। ইউনিয়ন বিএনপির নেতা হওয়ার আগে সোহেল ফরাজী উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব রাকিবকে আইফোন উপহার দেন ও বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যান। সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি। একইভাবে সালাম মৃধাও তাদেরকে দলে আনেন নিজের পাল্লা ভারী করতে। তারা আমার ছেলেকে হত্যার চেষ্টা করেছে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১০টার দিকে আসাদুল্লাহ বাজারে অবস্থান করছিলেন, এমন সময় নিয়ামতি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক সালাম মৃধা এবং যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীন ফরাজীর নেতৃত্বে একদল যুবক কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। আত্মরক্ষা করতে গেলে তাকে রাস্তার ওপর ফেলে কোপানো হয়। একপর্যায়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হামলাকারীরা চলে যায়। পুরো ঘটনা বাজারে উপস্থিত অসংখ্য মানুষ দেখলেও ভয়ে তাকে উদ্ধার করতে কেউ সামনে আসেনি।
আহত ছাত্রদল নেতার স্বজনরা জানান, সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি কোপে আসাদুল্লাহর হাত এবং পায়ের রগ কেটে গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে নিয়ামতি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক সালাম মৃধা এবং যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীন ফরাজীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি। হামলার ঘটনার পর থেকে তারা আত্মগোপনে রয়েছেন।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ গিয়ে ছাত্রদল নেতাকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে নেয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
পৌর বিএনপির সভাপতি নাসির জোমাদ্দার বলেন, ‘ঘটনা শুনছি। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের আমি চিনি না। তারা কিভাবে দলে এসেছে তাও আমার জানা নেই।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বর শ ল ছ ত রদল ব এনপ ক প য় জখম ছ ত রদল ন ত শ হ ন ফর জ স হ ল ফর জ ফর জ র য বল গ এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
নেতানিয়াহু অঞ্চলজুড়ে আগুন লাগাতে চাইছেন: ইরানের প্রেসিডেন্টকে এরদোয়ান
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পুরো মধ্যপ্রাচ্যে আগুন লাগাতে চাইছেন বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, নেতানিয়াহু ইরানে হামলা চালিয়ে পারমাণবিক আলোচনায় ব্যাঘাত ঘটিয়েছেন। গতকাল শনিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে এক ফোনালাপে এরদোয়ান এ কথাগুলো বলেছেন।
এরদোয়ানের দপ্তরের দেওয়া এক বিবৃতি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইরানি প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের সঙ্গে ফোনালাপে এরদোয়ান বলেছেন, গাজায় হওয়া জাতিগত হত্যার ঘটনা থেকে বিশ্বের দৃষ্টি সরাতে ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
ইরানি প্রেসিডেন্ট ছাড়াও সৌদি আরব, পাকিস্তান, জর্ডান ও মিসরের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গেও কথা বলেছেন এরদোয়ান। ইসরায়েল-ইরান সংঘাত এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তিনি।
শনিবার সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ফোনালাপে এরদোয়ান সতর্ক করে বলেন, নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ইসরায়েলই এখন এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। তুরস্ক সরকারের যোগাযোগবিষয়ক দপ্তরের বিবৃতি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
দপ্তরের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়, এরদোয়ান মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন। সিসিকে এরদোয়ান বলেন, ইসরায়েলের হামলা গভীরভাবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন করেছে। আইনের তোয়াক্কা না করার যে মনোভাব নেতানিয়াহুর মধ্যে দেখা গেছে তা বিশ্বের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকির।
এরদোয়ান আরও সতর্ক করেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, বরং পুরো বিশ্বের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।