Samakal:
2025-06-16@06:18:54 GMT

রোদেলার কণ্ঠে ‘অকারণ’

Published: 15th, March 2025 GMT

রোদেলার কণ্ঠে ‘অকারণ’

মা নাজমুন মুনিরা ন্যানসির পথ ধরেই গানের জগতে পথচলা শুরু মার্জিয়া বুশরা রোদেলার। অল্প বয়সে গানের জগতে প্রবেশ করেই তাক লাগান তিনি। কিশোরী রোদেলার জন্য এরইমধ্যে গান তৈরি করেছেন হাবিব ওয়াহিদ, হৃদয় খান, এহসান রাহী, সেতু চৌধুরীরা। সেসব গানে প্রশংসায় ভেসেছেন রোদেলা। তবে এবার ঈদে একেবারে অন্যরকম একটি গান নিয়ে হাজির হচ্ছেন তিনি। গানটির শিরোনাম ‘অকারণ’।

এটি রোদেলার ৬ নম্বর মৌলিক গান। ‘অযথা ভাবনায়, এ কেমন আসা যাওয়া/ অকারণ অবেলায়, তারই মাঝে ডুবে যাওয়া/ ভুল করি আবার উড়ি, মন থাকে উচাটন/ অনুভূতির কিযে বাড়াবাড়ি/ সে মানে না বারণ- এমন কথার গানটি লিখেছেন ফয়সাল রাব্বিকীন। এর সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন প্রত্যয় খান।

কথার সঙ্গে মিল রেখে এরইমধ্যে গানটির একটি মিউজিক ভিডিও করা হয়েছে। চন্দন রয় চৌধুরীরর নির্দেশনায় এতে অভিনয় করেছেন রোদেলাই। ঈদ উপলক্ষে ১৯শে মার্চ গানটি প্রকাশ পাবে রোদেলার ইউটিউব চ্যানেলে।

গানটি প্রসঙ্গে রোদেলা বলেন, একেবারেই অন্যরকম একটি গান এটি। এর কথায় প্রথম প্রেমের অনুভূতি ফুটে উছেছে। সুরে ও গায়কিতেও ভিন্নতা খুঁজে পাবেন শ্রোতা-দর্শক। গানটির সুন্দর একটি ভিডিও করা হয়েছে। আমার বিশ্বাস ভালো লাগবে সবার।

গানটির গীতিকবি ফয়সাল রাব্বিকীন বলেন, গানটির পরিকল্পনা বেশ আগে থেকেই হচ্ছে। রোদেলাকে ভেবেই গানটি লেখা। তার বয়স ও সে সময়টার প্রেমের অনুভূতি-আকুলতা প্রকাশ হয়েছে গনটির কথায়। আমার মনে হয় গানটি সবার ভালো লাগবে।

গানটির সুরকার ও সংগীত পরিচালক প্রত্যয় খান বলেন, রোদেলার কথা চিন্তা করেই গানটি করা। লিরিক হাতে পাওয়ার পর বেশি সময় লাগেনি কাজটি করতে। রোদেলা অসাধারণ গেয়েছে। সবার গানটি ভালো লাগবে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

শালবনে ছেচরা কই ও পাটখই

বিভতিভূষণের আরণ্যক উপন্যাসে একজন যুগলপ্রসাদ ছিলেন, যিনি লবটুলিয়ার জঙ্গলে সরস্বতী কুন্ডের পাড়ে নানা জায়গা থেকে নানা প্রজাতির গাছপালা এনে লাগাতেন। সেসব গাছে ফুল ফুটলে আনন্দে তিনি আত্মহারা হয়ে যেতেন। আমারও একজন যুগলপ্রসাদ ছিলেন, নাম আজাহার। প্রায় আমারই সমবয়সী।

টাঙ্গাইলের সখীপুরে বিভিন্ন শালবনে ঘুরতে গেলে মাঝেমধ্যে তিনি আমার সাথি হতেন। শালবনে কত গাছ! তেমন কিছুই চিনি না। কিন্তু সেই শালবনের কোলে জন্ম নেওয়া ও বেড়ে ওঠা আজাহার ঠিকই সেসব গাছ চিনতেন, আর জিজ্ঞেস করলে টপাটপ নাম বলে দিতেন। কিন্তু গোলমাল বাধত সেসব নাম শুনে। কেননা সেসব নাম বলতেন, তাঁদের স্থানীয় ভাষায়। বইয়ে সেসব নাম খুঁজে পাওয়া যেত না।

একদিন শালবনের মধ্যে একটা ছোট গাছ দেখলাম, গাছের গুঁড়ির চারদিকে তীক্ষ্ণসরু ও সোজা প্রচুর কাঁটা বেরিয়েছে। পাতাগুলো দেখতে কিছুট পেয়ারাপাতার মতো। প্রচুর ডালপালায় গাছটার মাথা ঝাঁকড়া হয়ে আছে। ডালের আগায় শিষের মতো মঞ্জরিতে প্রচুর ঘিয়া ও সাদাটে রঙের খুদে ফুল ফুটেছে। চিনি না। তাই আজাহারকে জিজ্ঞেস করলাম, নাম কী? চট করেই বলে দিলেন, ছেচরা কই। মাছের নাম কই হয় জানি, কিন্তু কোনো গাছের নাম কই হতে পারে? অগত্যা ছবি তুলে ওই নামকেই মনে গেঁথে ফিরে এলাম ঢাকায়।

আজাহার বললেন, এখন ফুল দেখছেন। কদিন পরেই ওসব ফুল থেকে ছোট ছোট গুলির মতো প্রচুর ফল ধরবে। ছোটবেলায় আমরা সেসব কাঁচা ফল নিয়ে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে ফটকা বানিয়ে তার চোঙে একটা একটা করে ফল দিয়ে বন্দুকের মতো গুলি গুলি খেলতাম। চোঙের ভেতরে একটা সরু কাঠি ঢুকিয়ে চাপ দিয়ে সেসব ফল গুলির মতো ফাটাতাম। ফটাস করে শব্দ হতো। এ সময় মাসখানেকের জন্য আমরা এ গাছের ফল, পরে জালি খেজুর নিয়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলতাম। শালবনে সে সময় এ গাছের অভাব ছিল না। এখন তো দেখতে হলে খুঁজে বের করতে হয়।

ফিরে এসে সে ছবি পাঠালাম জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের সাবেক বোটানিস্ট সামসুল হক ভাইয়ের কাছে। দুই দিন পরেই তিনি জানালেন, গাছটার স্থানীয় নাম ছেচরা কই, উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Bridelia retusa, গোত্র ফাইলেনথেসি। বইপত্রে এ গাছের চারটি বাংলা নাম পেলাম—কাঁটাকই, কাঁটাকুশি, কামকই, আকদানা। বাংলাদেশ ছাড়াও এ গাছ আছে নেপাল, ভারত, শ্রীলঙ্কা, চীন, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশে। সাধারণত উঁচু ও শুষ্ক বনাঞ্চলে এ গাছ দেখা যায়। ছোট বৃক্ষজাতীয় গাছ, প্রায় ১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়, দ্রুত বাড়ে। এ গাছের কাঁটা থাকায় বন্য প্রাণীরা এদের ধারে ঘেঁষে না, এমনকি এর বাকল দিয়েও বিষ তৈরি করা হয় বলে শুনেছি।

ফল গোলাকার, ছোট, কাঁচা ফল ময়লা সবুজ, পাকলে খোসায় লাল রং ধরে। ছেচরা কইগাছের কাঠ মাঝারি শক্ত থেকে শক্ত, কাঠের রং ময়লা লাল। রঙে ও গুণে কাঠ উৎকৃষ্ট। নির্মাণকাজ ও গরুর গাড়ির চাকা বানাতে ব্যবহার করা হয়। জ্বালানি কাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হলেও শুষ্ক তৃণভূমিতে যদি কোনো গাছ থাকে, তবে সেসব ঘাসে আগুন দিলে এ গাছ পোড়ে না বলে কথিত রয়েছে। বীজ দ্বারা সহজে বংশবৃদ্ধি বা চারা হয়।

পূর্বাচল উপশহরের শালবনে দেখা পাটখই ফল

সম্পর্কিত নিবন্ধ