ইসরায়েলের সর্বশেষ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির আদেশের ফলে শত শত ফিলিস্তিনি গাজার উত্তরাঞ্চলীয় এলাকা বেইত লাহিয়া এবং শুজাইয়া থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। অনেকেই একটি পুরাতন ফুটবল স্টেডিয়ামের অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছেন। এখানে আশ্রিতরা বলছেন যে, খাবার, টয়লেট এবং ঠান্ডা থেকে সুরক্ষার অভাব জীবনকে অসহনীয় করে তুলছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী,ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে ৪৯ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি থাকলেও গত মঙ্গলবার থেকে নির্বিচারে গাজায় হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। গত ২৪ ঘন্টা ধরে গাজার উত্তর ও দক্ষিণ অংশকে পৃথককারী একটি বাফার জোন সম্প্রসারণের লক্ষ্যে অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গাজা শহরের ইয়ারমুক স্টেডিয়ামের তাঁবু শিবিরে তার ১০ সদস্যের পরিবারের সাথে অবস্থান নেওয়া সুজান সায়মা বলেন, “আমি বর্ণনা করতে পারব না এটা কতটা কঠিন। আমরা আতঙ্কের মধ্যে বাস করছি। বোমাবর্ষণে না হলেও আমরা অনাহারে মারা যাব।”
তিনি আরো বলেন, “এখানে বেদনা ও যন্ত্রণা ছাড়া আর কিছুই নেই এবং এর কোনো শেষ নেই বলে মনে হয়.
শিবিরের আরেকজন বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি আজিজা আলশাবরাউই বলেন, শিশুরা ক্ষুধার্ত, ঠান্ডা এবং ক্রমাগত ভয়ের মধ্যে রয়েছে। “আমরা সারা বিশ্বকে আমাদের সাহায্য করার জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছি; আমাদের দুর্দশার অবসান ঘটাও।”
ঢাকা/শাহেদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
এ রায় ঘোষণা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভুক্তভোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত: ওএইচসিএইচআর
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণা গত বছর গণ-অভ্যুত্থানের সময় গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভুক্তভোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি মুহূর্ত বলে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের (ওএইচসিএইচআর) দপ্তরের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি। তবে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি।
আজ সোমবার মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ মন্তব্য করেন রাভিনা শামদাসানি।
ওএইচসিএইচআরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে রাভিনা শামদাসানি বলেন, ‘২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমাদের তথ্য-অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে আমরা নির্দেশদাতা ও নেতৃত্বের অবস্থানে থাকা ব্যক্তিদেরসহ দোষীদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে আসছি। ভুক্তভোগীদের কার্যকর প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ব্যবস্থা করারও আহ্বান জানিয়েছি।’
রাভিনা শামদাসানি বলেন, ‘যেহেতু এই বিচারপ্রক্রিয়ার কার্যক্রমের বিষয়ে আমরা অবগত ছিলাম না, তাই আমরা সব জবাবদিহিমূলক কার্যক্রম, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অপরাধের অভিযোগগুলো যেন প্রশ্নাতীতভাবে যথাযথ প্রক্রিয়া ও ন্যায়বিচারের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করে, সে জন্য ধারাবাহিকভাবে বলে এসেছি। এটি বিশেষভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ যখন, এ মামলার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, অভিযুক্তের অনুপস্থিতিতে বিচার হয়েছে এবং মৃত্যুদণ্ডের শান্তি দেওয়া হয়েছে।’
মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাভিনা শামদাসানি। তিনি বলেছেন, ‘মৃত্যুদণ্ডের রায়ের জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা সব পরিস্থিতিতে এর বিরোধিতা করি।’
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক আশা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশ সত্য প্রকাশ, ক্ষতিপূরণ ও ন্যায়বিচারের একটি সমন্বিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্য ও ক্ষত কাটিয়ে ওঠার দিকে এগিয়ে যাবে। এ প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তা খাতের অর্থবহ ও রূপান্তরমূলক সংস্কার অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত। আর এ সংস্কার হবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, যেন আর কখনো মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের ঘটনা না ঘটে। এসব প্রচেষ্টাগুলোয় বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে সহায়তা দিতে প্রস্তত রয়েছে ওএইচসিএইচআর।