গরমকালে আমাদের ঘর যেন একেকটা ওভেনে পরিণত হয়। ফ্যান চালিয়ে উপকার মেলে না। এসি বা কুলারের ওপর নির্ভর করতে হয় দিনের বেশির ভাগ সময়। ভাবুন তো, যদি এমন কিছু প্রাকৃতিক উপায় থাকে, যা ঘরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে– তাও কোনো বিদ্যুৎ বা মেশিন ছাড়াই?
হ্যাঁ, প্রকৃতির কাছে আছে এমন কিছু দারুণ সমাধান। কিছু ইনডোর প্লান্ট আছে, যেগুলো শুধু ঘরের শোভা বাড়ায় না, বরং তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে, বাতাস পরিষ্কার করে আর আপনার মন-মেজাজও ঠান্ডা রাখে।
কেন ইনডোর প্লান্ট ঘর ঠান্ডা রাখে?
গাছ বা পাতার মাধ্যমে পানি ছাড়ে, যাকে বলে বাষ্পমোচন (ট্রান্সপিরেশন)। এই জলীয় বাষ্প বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে এবং ঘরের গরম তাপ শোষণ করে। ফলে ঘর একটু ঠান্ডা ঠান্ডা লাগে। বড় পাতার গাছগুলো আবার সূর্যের আলো আটকে দেয়। ফলে সরাসরি রোদ ঘরে ঢুকে গরম করতে পারে না। শুধু তাই নয়, কয়েকটা গাছ একসঙ্গে রাখলে ঘরের আর্দ্রতা ও তাপমাত্রার একটা প্রাকৃতিক ভারসাম্য তৈরি করে।
কোন গাছগুলো ইনডোরে লাগানো সবচেয়ে ভালো?
ঘর ঠান্ডা রাখতে পারে এমন অনেক ইনডোর গাছ আছে। আজ আমরা এমন কিছু গাছ নিয়ে বলব, যেগুলো বাংলাদেশে সহজে পাওয়া যায় এবং সহজে ঘরে রাখা যায়।
স্নেক প্লান্ট
অল্প আলো আর কম পানিতে দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে এ গাছ। যারা ব্যস্ত জীবনে নিয়মিত গাছের খেয়াল রাখতে পারেন না, তাদের জন্য আদর্শ। বিশেষ করে রাতেও অক্সিজেন ছাড়ে বলে শোবার ঘরে রাখার জন্য দারুণ। এ ছাড়া বাতাসের ক্ষতিকর উপাদান যেমন ফরমালডিহাইড শোষণ করে।
পিস লিলি
নরম পাতার এ গাছটি ঘরে ঠান্ডা ভাব আনে বাষ্পমোচনের মাধ্যমে। এর সাদা ফুল ঘরে এনে দেয় প্রশান্তি ও সৌন্দর্যের ছোঁয়া। বাতাস পরিষ্কারে কার্যকর এবং ঘরের ভেতরের বাতাসকে আর্দ্র রাখে, যা গরমে খুব উপকারী।
আরবিকা পাম
সবুজ পাতায় ঘেরা এ গাছ শুধু চোখে শান্তি দেয় না, বাতাসে আর্দ্রতাও বাড়ায়। হালকা বাতাসে পাতাগুলো দুলে যেন প্রকৃতির স্পর্শ এনে দেয়। এটি বিভিন্ন টক্সিন শোষণ করে ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখে এবং সহজে মানিয়ে যায় ঘরের কোনায় বা জানালার পাশে।
স্পাইডার প্লান্ট
এই গাছ দ্রুত বড় হয়, তাপ শোষণ করে ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। একে মা গাছ বলা হয়। কারণ, এর শরীর থেকে ছোট ছোট চারা জন্ম নেয়, যেগুলো আবার নতুন করে লাগানো যায়। খুব বেশি যত্ন ছাড়া বেড়ে ওঠে এবং ঘরের বাতাসে থাকা কার্বন মনোঅক্সাইড ও ফরমালডিহাইড দূর করে।
অ্যালোভেরা
ঔষধি গাছ হিসেবে বেশি পরিচিত হলেও, অ্যালোভেরা ইনডোর ঠান্ডা রাখতে দারুণ কাজে দেয়। পাতার ভেতরের জেল আমাদের ত্বকের যত্নে যেমন ব্যবহার হয়, তেমনি পাতাগুলো গরম তাপ শুষে ঘরের পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
রাবার প্লান্ট
বড় আকারের মোটা পাতায় সূর্যের আলো আটকে দিতে পারে এ গাছ। তাই রোদ থেকে আসা অতিরিক্ত উত্তাপ কিছুটা কমে যায়। পাশাপাশি ঘরের ভেতর দারুণ এক সবুজ পরিবেশ তৈরি করে। কম আলো ও মাঝারি পানির চাহিদা থাকায় এর যত্ন নেওয়া সহজ।
জেড প্লান্ট
ছোট আকৃতির এ গাছটি টেবিল বা জানালার ধারে রাখলে জায়গা কম লাগে অথচ সৌন্দর্য বাড়ে অনেকগুণ। খুব কম পানি লাগে এবং পরিবেশে হালকা ঠান্ডা ভাব ধরে রাখতে সাহায্য করে।
ইনডোর গাছের যত্নের কিছু সহজ টিপস
আলো বুঝে গাছ রাখুন: যেসব গাছ রোদ পছন্দ করে (যেমন অ্যালোভেরা, আরবিকা পাম) সেগুলো দক্ষিণ দিকে রাখুন। কম আলো সহ্য করতে পারে এমন গাছ (যেমন স্নেক প্লান্ট, স্পাইডার প্লান্ট) উত্তরমুখী স্থানে রাখাই ভালো।
পানি দিন বুঝেশুনে: সব গাছে প্রতিদিন পানি দেওয়ার দরকার নেই। মাটি শুকিয়ে গেলে পানি দিন। অতিরিক্ত পানি দিলে গাছের শিকড় পচে যেতে পারে।
মাটি ও সার: জৈব সার ব্যবহার করলে গাছ ভালো বেড়ে ওঠে। বছরে ২-৩ বার সার দিতে পারেন।
পাতা পরিষ্কার রাখুন: পাতায় ধুলো জমে গেলে গাছ ঠিকভাবে শ্বাস নিতে পারে না। তাই মাঝে মধ্যে নরম কাপড় দিয়ে পাতাগুলো মুছে দিন। v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঘর ত র স হ য য কর ইনড র
এছাড়াও পড়ুন:
কেটি পেরি ও জাস্টিন ট্রুডোর ডিনার, গুঞ্জন
মাসখানেক আগে অভিনেতা অরল্যান্ডো ব্লুমের সঙ্গে পপ তারকা কেটি পেরির বাগদান ভেঙেছে। এবার তাঁর সঙ্গে কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নাম জড়িয়েছে। গত সোমবার কানাডার মন্ট্রিয়লের একটি রেস্তোরাঁয় একসঙ্গে খাবার খেতে দেখা গেছে তাঁদের। বিষয়টি নিয়ে নানা গুঞ্জন ছড়িয়েছে।
রেস্তোরাঁয় দুজনের ছবি প্রকাশ করেছে টিএমজেড। টিএমজেডের বরাতে মার্কিন সাময়িকী পিপল জানিয়েছে, কেটি পেরি ও জাস্টিন ট্রুডো একসঙ্গে দারুণ সময় কাটাচ্ছেন। ৪০ বছর বয়সী পেরি ও ৫৩ বছর বয়সী ট্রুডোকে মন্ট্রিয়লের লে ভিওলন রেস্তোরাঁয় দেখা গেছে। রাতের খাবার খাওয়ার সময় তাঁরা রেস্টুরেন্টের শেফ ড্যানি স্মাইলসের সঙ্গে দেখা করেন এবং খাওয়া শেষে রান্নাঘরে গিয়ে কর্মীদের ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুনপাঁচটি অ্যালবামের স্বত্ব বেচলেন কেটি পেরি২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩পেরি ও ট্রুডো লবস্টারসহ নানা পদ দিয়ে রাতের খাবার সেরেছেন। বিষয়টি নিয়ে পেরির কোনো মুখপাত্র এ বিষয়ে মন্তব্য করেননি। ট্রুডোর প্রতিক্রিয়াও পাওয়া যায়নি।
গত জুনে কেটি পেরি ও ৪৮ বছর বয়সী অরল্যান্ডো ব্লুমের বাগদান ভাঙার খবর প্রকাশ্যে এসেছে। কয়েক সপ্তাহ পর তাঁদের প্রতিনিধি জানান, এই বিচ্ছেদ হুট করে নয়, কয়েক পর ধরেই তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁদের প্রতিনিধি আরও জানান, সাবেক এই দম্পতি চার বছর ছয় মাস বয়সী মেয়ে ডেইজি ডাভের কল্যাণে সব সময় একসঙ্গে থেকেছেন এবং তার চাহিদাকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন।
জাস্টিন ট্রুডো ও তাঁর স্ত্রী সোফি গ্রেগোয়ার ২০২৩ সালের আগস্টে, ১৮ বছরের দাম্পত্যজীবনের অবসান ঘটানোর ঘোষণা দেন। তাঁরা জানান, এটি ছিল পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে নেওয়া শান্তিপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এই দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে—১৭ বছর বয়সী জেভিয়ার, ১৬ বছর বয়সী এলা গ্রেস এবং ১১ বছর বয়সী হাদ্রিয়েন।
জাস্টিন ট্রুডো ও সোফি গ্রেগোয়ারের বিচ্ছেদের সময় ইনস্টাগ্রামে ইংরেজি ও ফরাসি দুই ভাষায় একটি পোস্টে ট্রুডো লেখেন, ‘সোফি ও আমি আপনাদের জানাতে চাই যে বহু গভীর ও কঠিন আলাপের পর আমরা আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
ট্রুডো আরও লেখেন, ‘আমরা সব সময় একটি ঘনিষ্ঠ পরিবার হিসেবে একে অপরের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা বজায় রেখেছি এবং আমরা যা কিছু গড়েছি ও গড়ে তুলব—তার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। আমাদের সন্তানদের মঙ্গলের জন্য, আমরা অনুরোধ করছি যেন আপনারা আমাদের এবং আমাদের সন্তানদের গোপনীয়তা রক্ষা করেন। ধন্যবাদ।’