রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তারিফ হাসান মেহেদী। গত বছর তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত বাবাকে হারান। এর কয়েক মাস পর মারা যান বড় ভাই। এর আগে ২০২২ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে কথা বলা, চলাফেরার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন তাঁর মা। শয্যাশায়ী সেই মা এবার হৃদরোগে আক্রান্ত। তাঁকে বাঁচাতে নিজের শিল্পকর্ম বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন তারিফ। সেই সঙ্গে তিনি সহানুভূতিশীল মানুষদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।

তারিফের বাড়ি নেত্রকোনা সদর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামে। চার ভাই, তিন বোনের মধ্যে তিনি ষষ্ঠ। বাবা বকুল মিয়া ছিলেন মাছ ব্যবসায়ী। গত বছর হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরীক্ষায় তাঁর শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। তখন বাবার চিকিৎসায় অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে পরিবার। এর কয়েক মাস পর পরিবারের ভরসা হয়ে ওঠা বড় ভাই শাহিন মিয়া হঠাৎ হৃদরোগে মারা যান। এতে আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে পরিবারটি। এর মধ্যে তারিফের মা জাহানারা বেগমের (৫৫) হার্টের ৪৩ শতাংশে ব্লক রয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এখন চিকিৎসা করানোর মতো টাকা পরিবারটির নেই। এ কারণে নিজের শিল্পকর্ম বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারিফ।

গত ১৩ এপ্রিল ফেসবুক পোস্টে তিনি শিল্পকর্মের কয়েকটি ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘আজ সকল লজ্জা, ইতস্ততা ভাঙলাম। সারাজীবন মানুষের উপকার করে আজ নিজের উপকারের জন্য আপনাদের কাছে হাত পেতে অনুরোধ করছি। আমার আম্মাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘বিছানায় শায়িত একটা মানুষকে প্রতিনিয়ত দেখাশোনা করা, চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করা– এসব করতে করতে আজ আমরা অসহায়। গতকাল (১২ এপ্রিল) আম্মার হার্ট অ্যাটাক করেছে। এখন দ্রুত উন্নত চিকিৎসা করানো দরকার, যার জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। আম্মাকে বাঁচাতে আপনারা এগিয়ে আসুন। আমার এই শিল্পকর্মগুলো কিনে আমার পাশে থাকুন, আমাকে সহযোগিতা করুন। নির্ধারিত দামের থেকে বেশি দামে কিনতে চাইলেও কিনুন।’

তারিফ পোস্টে উল্লেখ করেছেন, ‘অনেকেই বলছেন, শিল্পকর্ম কেনার সামর্থ্য নেই, কিন্তু পাশে থাকতে চাচ্ছেন। অনেকেই কল ইনবক্স করে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট যুক্ত করতে বলেছেন। আমি সেটা যুক্ত করলাম। প্রয়োজনে: নগদ/বিকাশ– ০১৭৬৫৮৯ ২৩৫৫, রকেট– ০১৭২৬৩৫৯২৩০-৪; সোনালী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর– ৫৪১২২০১০৩০৪১১, ইসলামী ব্যাংক– ২০৫০৩০১০২০১৭৩৫৮১৬, ডাচ্‌-বাংলা– ৭০১৭৩৪১০০৫০৮২।’

এ বিষয়ে তারিফ হাসান সমকালকে বলেন, ‘শিল্পকর্ম আমার সন্তানের মতো। দীর্ঘদিনের পরিশ্রমে এগুলো তৈরি। আমার কখনোই পরিশ্রমের ফল বিক্রি করার চিন্তা আসেনি। আসলে শিল্পকর্মের কোনো মূল্য হয় না। তবে এখন আমার মায়ের অবস্থা গুরুতর। তাই তাঁকে বাঁচাতে শিল্পকর্ম বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এগুলো বিক্রি করে মায়ের চিকিৎসা শুরু করতে চাই।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ল পকল শ ল পকর ম ব পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।

দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।

ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্‌যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।

৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।

ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট

সম্পর্কিত নিবন্ধ