আগলে রাখা শিল্পকর্ম বেচবেন মায়ের জন্য
Published: 17th, April 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তারিফ হাসান মেহেদী। গত বছর তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত বাবাকে হারান। এর কয়েক মাস পর মারা যান বড় ভাই। এর আগে ২০২২ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে কথা বলা, চলাফেরার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন তাঁর মা। শয্যাশায়ী সেই মা এবার হৃদরোগে আক্রান্ত। তাঁকে বাঁচাতে নিজের শিল্পকর্ম বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন তারিফ। সেই সঙ্গে তিনি সহানুভূতিশীল মানুষদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।
তারিফের বাড়ি নেত্রকোনা সদর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামে। চার ভাই, তিন বোনের মধ্যে তিনি ষষ্ঠ। বাবা বকুল মিয়া ছিলেন মাছ ব্যবসায়ী। গত বছর হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরীক্ষায় তাঁর শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। তখন বাবার চিকিৎসায় অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে পরিবার। এর কয়েক মাস পর পরিবারের ভরসা হয়ে ওঠা বড় ভাই শাহিন মিয়া হঠাৎ হৃদরোগে মারা যান। এতে আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে পরিবারটি। এর মধ্যে তারিফের মা জাহানারা বেগমের (৫৫) হার্টের ৪৩ শতাংশে ব্লক রয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এখন চিকিৎসা করানোর মতো টাকা পরিবারটির নেই। এ কারণে নিজের শিল্পকর্ম বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারিফ।
গত ১৩ এপ্রিল ফেসবুক পোস্টে তিনি শিল্পকর্মের কয়েকটি ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘আজ সকল লজ্জা, ইতস্ততা ভাঙলাম। সারাজীবন মানুষের উপকার করে আজ নিজের উপকারের জন্য আপনাদের কাছে হাত পেতে অনুরোধ করছি। আমার আম্মাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘বিছানায় শায়িত একটা মানুষকে প্রতিনিয়ত দেখাশোনা করা, চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করা– এসব করতে করতে আজ আমরা অসহায়। গতকাল (১২ এপ্রিল) আম্মার হার্ট অ্যাটাক করেছে। এখন দ্রুত উন্নত চিকিৎসা করানো দরকার, যার জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। আম্মাকে বাঁচাতে আপনারা এগিয়ে আসুন। আমার এই শিল্পকর্মগুলো কিনে আমার পাশে থাকুন, আমাকে সহযোগিতা করুন। নির্ধারিত দামের থেকে বেশি দামে কিনতে চাইলেও কিনুন।’
তারিফ পোস্টে উল্লেখ করেছেন, ‘অনেকেই বলছেন, শিল্পকর্ম কেনার সামর্থ্য নেই, কিন্তু পাশে থাকতে চাচ্ছেন। অনেকেই কল ইনবক্স করে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট যুক্ত করতে বলেছেন। আমি সেটা যুক্ত করলাম। প্রয়োজনে: নগদ/বিকাশ– ০১৭৬৫৮৯ ২৩৫৫, রকেট– ০১৭২৬৩৫৯২৩০-৪; সোনালী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর– ৫৪১২২০১০৩০৪১১, ইসলামী ব্যাংক– ২০৫০৩০১০২০১৭৩৫৮১৬, ডাচ্-বাংলা– ৭০১৭৩৪১০০৫০৮২।’
এ বিষয়ে তারিফ হাসান সমকালকে বলেন, ‘শিল্পকর্ম আমার সন্তানের মতো। দীর্ঘদিনের পরিশ্রমে এগুলো তৈরি। আমার কখনোই পরিশ্রমের ফল বিক্রি করার চিন্তা আসেনি। আসলে শিল্পকর্মের কোনো মূল্য হয় না। তবে এখন আমার মায়ের অবস্থা গুরুতর। তাই তাঁকে বাঁচাতে শিল্পকর্ম বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এগুলো বিক্রি করে মায়ের চিকিৎসা শুরু করতে চাই।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ল পকল শ ল পকর ম ব পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
শনি গ্রহের একাধিক চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইডের সন্ধান
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে শনি গ্রহের আটটি মাঝারি আকারের চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইড শনাক্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা। বর্তমানে মিমাস, এনসেলাডাস, ডায়োন, টেথিস, রিয়া, হাইপেরিয়ন, লাপেটাস ও ফিবি নামের চাঁদগুলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিবর্তনের তথ্য টেলিস্কোপের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হচ্ছে। তথ্য বিশ্লেষণ করার পাশাপাশি চাঁদগুলোর ওপরে নিয়মিত নজরও রাখছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ডায়োন ও রিয়া চাঁদে থাকা কার্বন ডাই–অক্সাইড শনির প্রধান বলয়ের বরফের অনুরূপ। ফিবি চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইড জৈব পদার্থের বিকিরণের মাধ্যমে উৎপন্ন হয়ে থাকে। লাপেটাস ও হাইপেরিয়নের অন্ধকার অঞ্চলে কার্বন ডাই–অক্সাইড দেখা যায়। বরফযুক্ত এসব চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইডের অবস্থা সম্পর্কে আরও জানতে আগ্রহী বিজ্ঞানীরা।
ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিজ্ঞানী মাইকেল ব্রাউন ও তাঁর সহকর্মীরা এক গবেষণাপত্রে লিখেছেন, কঠিন কার্বন ডাই–অক্সাইড সৌরজগতের প্রান্তসীমার বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়। যদিও সেই অবস্থানে কার্বন ডাই–অক্সাইড স্থিতিশীল নয়। আমরা শনির উপগ্রহে কার্বন ডাই–অক্সাইডের অবস্থান জানার মাধ্যমে ভিন্ন পরিবেশ বোঝার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন গ্রহে কার্বন ডাই–অক্সাইড কীভাবে আটকে আছে, তা জানার সুযোগ আছে এখানে।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, শনির চাঁদে আটকে থাকা কার্বন ডাই–অক্সাইড থেকে আদর্শ ল্যাবের মতো তথ্য পাওয়া যাবে। ধারণা করা হচ্ছে, শনি গ্রহের বিভিন্ন চাঁদে কমপক্ষে দুটি পৃথক উৎস থেকে কার্বন ডাই–অক্সাইড তৈরি হয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি