বাধ্য হয়ে কম দামে ধান বিক্রি করছেন হাওরের কৃষক
Published: 17th, April 2025 GMT
সুনামগঞ্জের গ্রামাঞ্চলে জোরেশোরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত জেলায় আবাদ করা বোরো ধানের ২০ শতাংশ কাটা শেষ হয়েছে। এদিকে নগদ টাকার প্রয়োজনে কৃষকরা গোলায় ধান তোলার পরিবর্তে কম দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বোরো ধান সংগ্রহ কার্যক্রম বিষয়ে জেলা চালকল মালিক (মিলার) ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর। এ সময় তিনি বলেন, সরকার কৃষকের উৎপাদিত ধানের উপযুক্ত দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। এবার ধান কেনার তারিখও এগিয়ে আনা হয়েছে। ২৪ এপ্রিল একযোগে সব ক্রয়কেন্দ্রে ধান কেনা শুরু হবে।
জেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা জানান, সুনামগঞ্জে হাওর ও হাওর এলাকার বাইরে সবমিলিয়ে এবার ২ লাখ ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। যা
থেকে ১৮ লাখ ৪৩ হাজার ৮৪ টন ধান উৎপাদন হবে। ফসল গোলায় তোলা পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ৯ লাখ ২১ হাজার ৪১৩ টন চাল উৎপাদন হতে পারে। ২৪ এপ্রিল থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে ধান কিনবে সরকার, প্রতি মণের দাম পড়বে এক হাজার ৪৪০ টাকা। এ ছাড়াও ৪৯ টাকা কেজি দরে কেনা হবে চাল।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার ধানের মণ এক হাজার ৪৪০ টাকা নির্ধারণ করলেও বাজারে ধানের দাম এক হাজার টাকারও নিচে। ধান কাটার মৌসুমের শুরুতে কৃষকের হাতে টাকা থাকে না, অথচ এ সময় তাদের টাকার জরুরি প্রয়োজন হয়। অর্থের প্রয়োজনে সাড়ে ৯০০ টাকা মণেও ধান বিক্রি করছেন কৃষক।
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের রাজাপুরের কৃষক আব্দুস ছত্তার জানান, টাকার প্রয়োজনে ফড়িয়াদের কাছে আগাম ধান বিক্রি করছেন কৃষকরা। ফড়িয়ারা হীরা জাতের ধান প্রতি মণ ৯০০ টাকার বেশি কাউকেই দিচ্ছেন না। যারা ধান দিরাইয়ের আড়তে নিয়ে যাচ্ছে, তারা প্রতি মণ ৯৩০ টাকা করে পাচ্ছেন।
মধ্যনগর ধান আড়তদার সমিতির সভাপতি জহিরুল হক জানান, বৃহস্পতিবার তাদের সব আড়তদার মিলে ১৫-২০ হাজার মণ ধান কিনেছেন। ২৮ বা ৮৮ জাতের ধান এক হাজার ৭০ থেকে এক হাজার ৮০ টাকা ও শুকনো হলে এক হাজার ১০০ টাকা মণ কিনেছেন। সরকার এক হাজার ৪৪০ টাকা মণ ধান কেনা শুরু করলে, ধানের দাম আরও বেড়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি। অর্থাৎ কৃষকরা আরও বেশি দামে ধান বিক্রি করতে পারবেন।
জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি আনিসুল হক বলেন, সরকার ধানের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার পর বাজার কিছুটা চাঙ্গা হয়েছে। সরকারের নির্ধারণ করা ধানের দাম প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দিতে হবে। কৃষকরা যেন ধান বিক্রিকালে ফড়িয়া বা মিলারকে বলতে পারে সরকার এক হাজার ৪৪০ টাকা মণ ধানের দাম নির্ধারণ করেছে, সেই অনুপাতে তাদের দাম দিতে হবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার বোরো ধান সংগ্রহ কার্যক্রম বিষয়ে মিলার ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো.
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পালের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার মো. তোফায়েল আহম্মেদ, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ, শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাসেম, শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিয়াস চন্দ্র দাস, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মফিজুর রহমান, মিল মালিক সমিতির সভাপতি জিয়াউল হক, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা এস এম সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ধ ন স গ রহ স ন মগঞ জ কর মকর ত উপজ ল সরক র ক ষকর
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন চালু
তেহরানের বাংলাদেশ দূতাবাসে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে।
রোববার তেহরান দূতাবাস এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইরানে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিকের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য দূতাবাস ইমার্জেন্সি হটলাইন স্থাপন করেছে। ইরানে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিকদের নিম্নোক্ত মোবাইলফোন নম্বরগুলোতে হোয়াটসঅ্যাপসহ সরাসরি যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
+ ৯৮৯৯০৮৫৭৭৩৬৮ ও +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫।