বিএনপি নেতাকে আ.লীগ নেতার ফুলেল শুভেচ্ছা, শোকজ
Published: 24th, April 2025 GMT
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা বিএনপির সদ্য নির্বাচিত সভাপতি আব্দুল মান্নানকে আওয়ামী লীগ নেতা ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এমন অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করার অভিযোগে তুলে তাকে শোকজ করে জেলা বিএনপি। বুধবার দুপুরে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু ও সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ সাক্ষরিত শোকজের চিঠি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়, আপনি বোদা উপজেলা বিএনপির নব-গঠিত কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর বিগত ফ্যাসিস্ট দোসরদের দ্বারা আপনাকে অভিনন্দিত করার সম্মিলতি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় দলের ভাবমূর্তি ভীষণভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে, যা দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থি। এহেন শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যকলাপের জন্য কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা চিঠি পাওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।
জানা গেছে, গত ১৯ এপ্রিল বোদা উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন আব্দুল মান্নান। ২১ এপ্রিল রাতে বোদা পৌরসভার বন্ধুদের সংগঠন বোদা ফ্রেন্ডস ক্লাবে সংগঠনটির সদস্য হিসেবে তাকে ফুলেল সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এতে বোদা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম সাবুল বিএনপি নেতা মান্নাকে ফুলের তোড়া দিচ্ছেন এমন একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সেই ছবির সূত্র ধরে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেন, ‘আমরা তাকে নোটিশ পাঠিয়েছি।’
বোদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন, ‘বোদা ফ্রেন্ডস ক্লাবে আমাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছে। এ নিয়ে আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। চিঠি পেয়েছি। আমি জবাব দেব।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ আওয় ম ল গ ব এনপ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।