বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন রাজধানীর মিরপুরে গুলিতে বিএনপি কর্মী মাহফুজ আলম শ্রাবণ হত্যার অভিযোগে মার্কেটিং ও বিজ্ঞাপন সংস্থা এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অভিনেতা ইরেশ জাকেরসহ ৪০৮ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ২০ এপ্রিল নিহতের ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পী ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করেন।

এই মামলার খবর প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন অনুরাগী এবং শোবিজ তারকা ও পরিচালকরা। অনেকেই দাবি তুলেছেন অভিনেতা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সম্মুখ যোদ্ধা ছিলেন। এরপরও অভিনেতার বিরুদ্ধে হত্যা মামলায় হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন তারা।

অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন
‘আজ ইরেশকে হেনস্তার শিকার হতে দেখে হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। আমরা আগেও দেখেছি যারা সাহস করে সত্যের পক্ষে দাঁড়িয়েছে, তাদের কী পরিণতি হয়েছে। তবুও যখন আমরা ভেবেছিলাম একটি ভালো, নিরাপদ দেশ গড়ছি, তখন এই দৃশ্য এখনও গভীরভাবে কষ্টদায়ক ও হতাশাজনক।’

নির্মাতা আশফাক নিপুণ
‘অগাস্ট মাসের ১ তারিখ ফার্মগেটে আমার সঙ্গে, আমাদের অনেকের সঙ্গে পুরোটা সময় ইরেশ যাকের এবং তাঁর স্ত্রী দাঁড়িয়েছিলেন ‘জুলাই হত্যাকাণ্ডের’ প্রতিবাদে। ওনার এবং আমাদের অনেক সহকর্মী একই সময় বিটিভি ভবনে শোক প্রকাশ করতে গেলেও উনি সেখানে যান নাই। উনার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তদন্ত হচ্ছে, হোক কিন্তু উনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা নিতান্তই হাস্যকর। এরকম গায়েবী মামলায় আসামি করতে গিয়ে জুলাই হত্যাকাণ্ডের সত্যিকার আসামিদের পরিত্রাণের পথ যে সুগম করে দেয়ার পায়তাঁরা হচ্ছে। সেই বিষয়ে সাবধান হন সরকার।’

অভিনেত্রী রাফিয়াথ রশীদ মিথিলা
‘প্রথমে দুর্নীতির অভিযোগ, তারপর জুলাই ঘটনার ওপর ভিত্তি করে হত্যা মামলা। মজার মিল, তাই না? আর সেটাও সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে, যিনি জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে প্রতিবাদ করেছিলেন।

নির্মাতা শিহাব শাহীন
‘ইরেশ যাকের জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। আর তার বিরুদ্ধে কিনা জুলাই হত্যা মামলা!’

অভিনেতা টুটুল চৌধুরী
‘যারা মেধাবী তারা আওয়ামী সরকারের সকল সুবিধা গ্রহণ করেছে। যারা মেধাবীতর তারা আওয়ামী সরকারের সকল সুবিধা গ্রহণ করে সরকারের পতনের গন্ধ পেয়ে দ্রুত বিপ্লবী হয়ে গেছে। যারা মেধাবীতম তারা আওয়ামী সরকারের আমলে সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছে। তারপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের‌ সুবিধা গ্রহণ শুরু করছে কিন্তু এত সুখ অনেক সময় সয় না।’

নির্মাতা-প্রযোজক রেদওয়ান রনি
যিনি জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন তার বিরুদ্ধেই জুলাই হত্যা মামলা! লজ্জাজনক তো বটেই তবে হাস্যকর বলে উড়িয়ে দেয়ার সুযোগ নেই। কারণ এতে জুলাই হত্যা মামলাগুলোকে খেলনা ও মূল অপরাধীদের আড়াল করার ষড়যন্ত্রটা চোখের আড়ালে থেকে যায়। জুলাই আন্দোলন যখন থেকে শুরু হয় তখন থেকেই সক্রিয় ছিলেন ইরেশ যাকের। কিন্তু মনগড়া ঢালাও হত্যা মামলা খুবই হতাশাজনক! এই সরকারের কাছে একটাই চাওয়া আবারও যেন ভিন্ন ফর্মে ফ্যাসিবাদের চাষ শুরু না হয়, দ্রুত পদক্ষেপ কাম্য।

আরজে কিবরিয়া
‘ইরেশ যাকের কে হত্যা মামলার আসামী! মানে এই লিস্ট গুলা বানায় কারা? এরা কি আসলেই চায় জুলাই অপরাধীদের বিচার হোক? কাজে কর্মে তো মনে হয় না।’

এর আগে গত ২৫ এপ্রিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) কর ফাঁকির অভিযোগে এশিয়াটিক মার্কেটিং কমিউনিকেশনস লিমিটেডের (এশিয়াটিক এমসিএল) সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করে। এটি এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির প্রধান প্রতিষ্ঠান। এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইরেশ জাকের এবং চেয়ারপারসন তার মা সারা জাকের।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আশফ ক ন প ন সরক র র গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

তফসিল ঘোষণা, জাকসু নির্বাচন ৩১ জুলাই

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের (জাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। সে অনুযায়ী আগামী ৩১ জুলাই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বুধবার দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে এ তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল ঘোষণা করেন জাকসু নির্বাচনের লক্ষ্যে গঠিত নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ঘোষণা অনুযায়ী, ১২ মে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। একই দিনে খসড়া আচরণবিধি প্রকাশ করা হবে। খসড়া ভোটার তালিকা সম্পর্কে আপত্তি গ্রহণের এবং খসড়া আচরণবিধি সম্পর্কে মতামত গ্রহণের শেষ তারিখ ২১ মে। চূড়ান্ত হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশ এবং চূড়ান্ত আচরণবিধি প্রকাশ করা হবে ৩০ জুন।

মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ১ জুলাই থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা যাবে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র যাচাই–বাছাইয়ের পর খসড়া প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে ৯ জুলাই। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৪ জুলাই এবং প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ ১৫ জুলাই। এরপর ৩১ জুলাই সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ হবে। ফলাফল প্রকাশ করা হবে একই দিনে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ