ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও বিএসআরএম গ্রুপ অব কোম্পানিজের যৌথ উদ্যোগে বিএসআরএম স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং উদ্বোধন করা হয়েছে। 

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরুল বাড্ডা ক্যাম্পাসে গত ৩০ এপ্রিল ‘শেপিং টুমরো : ইনোভেশন ফর সাসটেইনেবিলিটি’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নতুন এ উদ্যোগটির অফিসিয়াল লোগো এবং ওয়েবসাইট উন্মোচিত হয়েছে।

অ্যাকাডেমিয়া ও ইন্ডাস্ট্রির এ ধরনের কোলাবোরেশন বাংলাদেশে এই প্রথম। এ উদ্যোগ বাংলাদেশের প্রকৌশল শিক্ষাকে নতুনভাবে এগিয়ে নেওয়ার মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

এই নতুন স্কুলের লক্ষ্য হলো এমন প্রকৌশলী গড়ে তোলা যারা প্রযুক্তিগত দক্ষতার পাশাপাশি উদ্ভাবন, নৈতিকতা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার মানদণ্ডে পরিপূর্ণ হয়ে আগামীর যোগ্য নেতৃত্ব হিসেবে গড়ে উঠবে।

এ যৌথ সহযোগিতা বিএসআরএমের বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সেই সঙ্গে এই উদ্যোগ ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের শিক্ষাদর্শনের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত।

স্যার ফজলে বিশ্বাস করতেন—শিক্ষাব্যবস্থা হতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক, ফলপ্রসূ এবং মানব উন্নয়নের জন্য। বিএসআরএম স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং সেই চেতনারই প্রতিফলন, যেখানে শিক্ষা হবে উদ্ভাবনের পথপ্রদর্শক এবং মানবকল্যাণে নিবেদিত।

এই যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বকে বার্তা জানাচ্ছে যে, বাংলাদেশ এখন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে গ্লোবাল সাউথে এগিয়ে যাচ্ছে। এখান থেকেই গড়ে উঠছে এমন নেতৃত্ব, যারা মানবকল্যাণকে অগ্রাধিকার দিয়ে ভবিষ্যতের নগর, শিল্প ও সমাজকে নতুনভাবে গড়ে তুলবে। 

বিএসআরএম এর চেয়ারম্যান আলী হুসাইন আকবর আলী এফসিএ বলেন, জাতি গঠনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো উচিত সরকার ও অন্যান্য খাতের এই ধরনের সহযোগিতা করা। এ ধরনের উদ্যোগ দেশকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে। 

এই দর্শনের অন্যতম প্রমাণ হলো বিএসআরএম স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এর প্রতিষ্ঠা। যা শিক্ষার মাধ্যমে উন্নত জাতি গঠনের প্রতি প্রতিষ্ঠানটির প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশ আপনাদের ডাকছে। বাইরের দিকে তাকাবেন না। এখানেই থাকুন, এখানেই কাজ করুন, এখানেই নিজেকে গড়ে তুলুন। আপনার জ্ঞান, শক্তি আর চিন্তাধারা আজ এই দেশেই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আপনি যদি আজ দেশের যদি জন্য কিছু করেন সেটি কাল আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পথ দেখাবে। 

অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন তামারা হাসান আবেদ বলেন, আজ বিএসআরএম স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং এর উদ্বোধনের মাধ্যমে আমরা শিক্ষা ব্যবস্থাকে মর্যাদা, ন্যায়বিচার ও সুযোগ তৈরির একটি মাধ্যম হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের অঙ্গীকারকে আবারও পুনর্ব্যক্ত  করছি। 

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার বলেন, আমার বিশ্বাস এই সহযোগিতার ফলে ইন্ডাস্ট্রির জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অ্যাকাডেমিয়ার সঙ্গে একত্রিত হয়ে তা ইতিবাচকভাবে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে।

তিনি আরও বলেন, ব্র্যাক ও ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং বিএসআরএম এর মানবিক মূল্যবোধ—সব মিলিয়ে এটি কেবল একটি উদ্যোগ নয়, বরং একটি বৃহত্তর সামাজিক পরিবর্তনের অংশ।

অনুষ্ঠানে বিএসআরএম স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং এর একজন স্কলারশিপপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র য ক ইউন ভ র স ট র অন ষ ঠ ন ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

বর্ষায় পাহাড়ে ঘুরতে যাওয়ার আগে যা জানতেই হবে

পাহাড়ের পথে পথে অ্যাডভেঞ্চার। বর্ষায় পাহাড় মানেই রোমাঞ্চের রাজ্য। তারুণ্যের উদ্দীপনায় পাহাড়চূড়া কিংবা ঝিরিপথ জয়ের আনন্দটা অসাধারণ। তবে পাহাড়ি পথে নিরাপদে চলতে হলে নিজেকেও ভালোবাসা চাই। আপনার প্রাণের স্পন্দনেই তো ভ্রমণের নেশা। সেই নেশাকে সার্থক করে তুলতে শরীর আর মনের প্রস্তুতিটাও হতে হবে ঠিকঠাক। নইলে ভ্রমণের আনন্দ মাটি হতে পারে নিমেষেই। এ সম্পর্কে বলছিলেন ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. সাইফ হোসেন খান

শরীরটা হোক ফিট

পাহাড়ি পথে চলা খুব সহজ নয়। তাই পাহাড়ে অ্যাডভেঞ্চারের পরিকল্পনা করলে অন্তত দুই-তিন সপ্তাহ আগে থেকেই অনেকটা পথ হাঁটার অভ্যাস করা উচিত। সমতলে নিয়মিত হাঁটার এই চর্চা পাহাড়ি পথে আপনার পাথেয় হবে। দুর্গম এলাকায় যাওয়ার পরিকল্পনা করলে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের কাছে জেনে নিন সেখানে যাওয়ার ঝক্কি আদতে কতটা। মনে রাখবেন, সবার দেহ সব রকমের চ্যালেঞ্জ সইতে সক্ষম না-ও হতে পারে। এ নিয়ে লজ্জার কিছু নেই। আপনি যতটা ধকল সইতে পারবেন, তার চেয়ে কঠিন কোনো পরিকল্পনা করবেন না। ‘সহজ ট্যুর’-এ অভ্যস্ত হয়ে উঠলে পরবর্তী সময়ে তুমুল অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ পাবেন।

সুস্থতা ও নিরাপত্তার অনুষঙ্গ

পিচ্ছিল পাহাড়ি পথে চলার উপযোগী জুতা চাই অবশ্যই। এ ব্যাপারে কোনো আপস করবেন না। অতিরিক্ত আঁটসাঁট বা অতিরিক্ত ঢিলেঢালা পোশাক—কোনোটিই অ্যাডভেঞ্চারের উপযোগী নয়। যেখানে যাচ্ছেন, সেখানে লাইফ জ্যাকেট প্রয়োজন হলে অবশ্যই সঙ্গে নেবেন। রাতে যেখানে থাকবেন, সেখানে মশারির ব্যবস্থা আছে কি না, নিশ্চিত হয়ে নিন। প্রয়োজনমাফিক মসকিউটো রিপেল্যান্ট ব্যবহার করুন। বর্ষায় পাহাড়ে জোঁকের উপদ্রব বেশি। মোজার ভেতর পায়জামা বা প্যান্ট গুঁজে নিতে পারলে জোঁকে ধরার ঝুঁকি কম থাকে। তবে ঝিরিপথে এই পদ্ধতি অবলম্বন করা সম্ভব না-ও হতে পারে। তাই জোঁকে ধরার ঝুঁকি থেকেই যায়। জোঁকে ধরলে তা সরানোর জন্য কাজে লাগাতে পারেন শক্ত কাগজ।

আরও পড়ুনভ্রমণে সুস্থ থাকতে এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন০৫ নভেম্বর ২০২২জোঁক ধরলে কী করবেন

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জোঁক রক্ত খেয়ে নিজে থেকে খসে যায়। জোঁক ছাড়ানোর জন্য লবণ ছিটিয়ে দেওয়ার প্রচলন আছে। তবে পদ্ধতিটি ভুল। জোঁক ছাড়ানোর জন্য লবণ দিলে জোঁক মারা যায় আর তার দেহ থেকে কিছু জলীয় অংশ মানুষের দেহের ওই ক্ষত দিয়ে প্রবেশ করে। ফলে বাড়ে সংক্রমণের ঝুঁকি। তাই জোঁক ছাড়াতে হবে জীবিত অবস্থায়। যেখানে জোঁক ধরেছে, সেই অংশের ত্বক টেনে ধরে রাখতে হবে। এই অবস্থায় জোঁকের মাথার দুপাশ থেকে কাগজের সাহায্যে ধরে জোঁকটিকে টেনে সরিয়ে দূরে ফেলে দিতে হবে। তুলনামূলক চিকন অংশটাই জোঁকের মাথার দিক।

মনের প্রস্তুতিই বেশি জরুরি

পাহাড় ভ্রমণে মন হবে ফুরফুরে। সেই ভ্রমণ নিয়ে রোমাঞ্চকর গল্প হবে, অ্যাডভেঞ্চারের ছবি-ভিডিও আপলোড হবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, আনন্দের রেশ থাকবে বহুদিন। তবে তার জন্য আপনাকে এবং আপনার দলের সদস্যদের থাকতে হবে নিরাপদ। ভ্রমণের আগেই নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করুন, কোনো পরিস্থিতিতেই ভ্রমণবিষয়ক কোনো নির্দেশনা অমান্য করবেন না। মনে রাখুন এসব বিষয়—

এমন বহু দুর্গম এলাকা আছে, যেখানে যাওয়া নিষেধ। রোমাঞ্চের নেশায় সেসব জায়গায় যাওয়া যাবে না। ঝরনার উৎস খুঁজতে উৎসাহী হয়ে পিচ্ছিল পাহাড় বেয়ে ওঠার চেষ্টা করবেন না।

সাঁতার জানলেও পানিতে না নামাই ভালো।

ঝরনায় ভিজতে গেলেও স্রোতের নিচে সরাসরি মাথা বা ঘাড় না রাখাই ভালো। কখনো কখনো ওপর থেকে শক্ত নুড়ি পড়ে আহত হওয়ার ভয় থাকে।

পাহাড়ি কোনো পথে একা চলবেন না।

দুর্গম পথে নিজের দলের সঙ্গে অবশ্যই গাইড নেবেন।

ছবি বা ভিডিও ধারণের সময়ও নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখুন।

আবহাওয়া খারাপ থাকলে, পাহাড়ি ঢল নামলে ভ্রমণ পরিকল্পনা বদলাতে হতে পারে, সেই মানসিক প্রস্তুতিও রাখুন।

আরও পড়ুনজলপ্রপাত দেখতে গিয়ে দুর্ঘটনা এড়াতে যে ১০টি কথা মনে রাখতেই হবে০৬ জুলাই ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ