কাতার থেকে উপহার হিসেবে একটি উড়োজাহাজ গ্রহণের পরিকল্পনা নিয়ে সৃষ্ট উদ্বেগের জবাবে গতকাল সোমবার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, এ ধরনের একটি উপহার গ্রহণ না করা হবে বোকামি।

কাতারের রাজপরিবারের পক্ষ থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ব্যবহারের জন্য ৪০ কোটি ডলার মূল্যের বোয়িং ৭৪৭-৮ উড়োজাহাজটি দেওয়ার প্রস্তাব আসার পর নৈতিকতা ও নিরাপত্তা নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন উঠেছে। তবে ট্রাম্প সেসব আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়েছেন।

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকেরা ট্রাম্পের কাছে জানতে চান, তেলসমৃদ্ধ উপসাগরীয় রাষ্ট্রটি বিনিময়ে কিছু চাইবে কি না—উত্তরে ট্রাম্প বলেন, এটি তাদের সৌজন্যমূলক আচরণের বহিঃপ্রকাশ। তিনি আরও বলেন, ‘আমি এমন একটা প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার মতো লোক নই। মানে, আমি বোকা হলে বলতাম, না; আমরা বিনা মূল্যে এত ব্যয়বহুল একটি উড়োজাহাজ চাই না।’

কাতার এমন সময় উড়োজাহাজটি দেওয়ার প্রস্তাব দিল, যখন ট্রাম্প বারবার অভিযোগ করছেন যে উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের সঙ্গে চুক্তির আওতায় নতুন দুটি এয়ারফোর্স ওয়ান (মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি উড়োজাহাজ) তৈরিতে দেরি হচ্ছে ও ব্যয় বাড়ছে।

প্রেসিডেন্ট পদ থেকে বিদায় নেওয়ার পর তিনি কি এই উড়োজাহাজ ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করবেন —এ প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প রেগে যান।

ট্রাম্প এক সাংবাদিককে বলেন, ‘এ প্রশ্ন করার জন্য আপনার লজ্জিত হওয়া উচিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওরা আমাদের বিনা মূল্যে একটি উড়োজাহাজ দিচ্ছে। হয় আমি তাদের বলতে পারি—না, না, না, দিও না; আমি তোমাদের ১০০ কোটি বা ৪০ কোটি ডলার দিতে চাই। অথবা আমি বলতে পারি, তোমাদের অনেক ধন্যবাদ।’

এর আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কাতারের রাজপরিবারের কাছ থেকে একটি বিলাসবহুল উড়োজাহাজ (বোয়িং জেট) উপহার হিসেবে নেওয়ার কথা ভাবছেন ট্রাম্প। এটিকে তিনি এয়ারফোর্স ওয়ান হিসেবে ব্যবহার করবেন এবং প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষে ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহারের জন্য রেখে দিতে চান। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্টদের উপহার নেওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ম রয়েছে। প্রতিবেদনে উড়োজাহাজটিকে ‘উড়ন্ত প্রাসাদ’ অভিহিত করা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর ব্যাপক আলোচনা–সমালোচনা শুরু হয়েছে। এই উপহার গ্রহণের বিষয়ে নৈতিকতা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, এর মধ্য দিয়ে সরকারের দুর্নীতি ঠেকানোর জন্য তৈরি করা আইনকে অবজ্ঞা করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ত ব ব যবহ র র জন য উপহ র

এছাড়াও পড়ুন:

সেই খাদিজাতুলকে জিএস প্রার্থী করে জকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের সমন্বিত প্যানেল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে সমন্বিত প্যানেল ঘোষণা করেছে ছাত্রদল। এতে জিএস পদে মনোয়ন দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সাইবার নিরাপত্তা মামলায় কারাগারে থাকা খাদিজাতুল কুবরাকে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, ছাত্র অধিকার পরিষদ এবং ক্যাম্পাসে পরিচিত শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত এই প্যানেলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’। প্যানেল থেকে ভিপি পদে লড়বেন ছাত্র অধিকার পরিষদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি এ কে এম রাকিব। এজিএস পদে লড়বেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য আতিকুর রহমান তানজীল।

আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্যানেল ঘোষণা করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মুনতাসির মুকুল।

ঘোষিত প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী এ কে এম রাকিব বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এ ছাড়া জিএস পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সম্প্রতি তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়কের পদ দেওয়া হয়েছে। এজিএস পদপ্রার্থী আতিকুর রহমান তানজীল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

সমন্বিত প্যানেলে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক পদে অনিক কুমার দাস, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদে নুসরাত চৌধুরী জাফরিন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মাশফিকুল ইসলাম রাইন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে আল শাহরিয়ার শাওন, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে অর্ঘ্য শ্রেষ্ঠ দাস, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক পদে অপু মুন্সী, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে তাকরিম আহমেদ ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে কামরুল হাসান নাফিজ মনোনয়ন পেয়েছেন। এ ছাড়া পরিবহন সম্পাদক পদে মাহিদ হাসান, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থীকল্যাণ সম্পাদক পদে আনন বিন রহমান এবং পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক পদে রিয়াসাল রাকিব মনোনয়ন পেয়েছেন।

এ ছাড়া সাতটি সদস্য পদের মধ্যে ছয়টিতে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। আরেকটি সদস্যপদের প্রার্থী পরবর্তী সময়ে ঘোষণা করা হবে। সদস্য পদে লড়বেন ইমরান হাসান ইমন, সাদমান সাম্য, সুলতান মাহমুদ শুভ, মনিরুজ্জামান মনির, তৌহিদুল ইসলাম তানিম ও আরিফুল ইসলাম আরিফ।

প্যানেল ঘোষণার পর ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সব অধিকার বাস্তবায়নে আমাদের এই প্যানেলে যে নাম ঘোষণা করলাম, সেই মনোনীত সদস্যরা জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে প্রচেষ্টা চালাবে। আমরা যাদের প্যানেলে রেখেছি, বিগত সময়ে তারা শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ, আন্দোলনসহ সকল কর্মকাণ্ডে মেধা-মনন দিয়ে অংশগ্রহণ করেছে। আমরা বিশ্বাস করি শিক্ষার্থীরা তাদের মূল্যায়ন করবে।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে আগামী ২২ ডিসেম্বর। কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের পাশাপাশি একই দিন একটি ছাত্রী হল সংসদের নির্বাচনও হবে। ফলাফল ঘোষণা হবে ২২-২৩ ডিসেম্বর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ