যুবলীগ কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা, বস্তাবন্দি লাশ ফেলে যাওয়ার সময় আটক ২
Published: 13th, May 2025 GMT
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে জাকির হোসেন (৪১) নামে এক যুবলীগ কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা শেষে লাশ বস্তাবন্দি করে বেগমগঞ্জ উপজেলার একটি খালে ফেলে দেওয়ার সময় স্থানীয়রা দুজনকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের কোটবাড়িয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জাকির সোনাইমুড়ী উপজেলা ৮নং সোনাপুর ইউনিয়নের তিনতেড়ী এলাকার হাসানপুর গ্রামের দূর্গা পাটোয়ারী বাড়ির রফিক মিয়ার ছেলে। তিনি একই ইউনিয়ন যুবলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে জাকির এলাকায় ব্যাপক প্রভাবশালী ছিলেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর তিনি তাবলিগে চলে যান। কয়েক মাস আগে তাবলিগ থেকে ফিরে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে এলাকায় ঢোকেন। এরপর তিনি এলাকায় মাটির ব্যবসা শুরু করেন। এই ব্যবসা নিয়ে একই এলাকার মাটি ব্যবসায়ী ল্যাংড়া নজরুল, তুহিন, সাদ্দামসহ ১০-১২ জনের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব চলছিল। ৮-১০ দিন আগে প্রতিপক্ষের লোকজনের সঙ্গে জাকিরের বিরোধ তুমুল আকার ধারণ করে। দু’দিন আগে নজরুলের মাটি কাটার ভেকু মেশিন পুড়িয়ে দেয় জাকির। এর জেরে সোমবার দুপুরের দিকে নজরুল ও তার লোকজন জাকিরকে তুলে নিয়ে যায় উপজেলার কোটবাড়িয়া এলাকায়। সেখানে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
আজ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পাঁচজন জাকিরের বস্তাবন্দি লাশ একটি সিএনজি অটোরিকশায় করে বেগমগঞ্জ উপজেলার পলোয়ান পুল এলাকায় নিয়ে আসে। তারা খাল পাড়ে অটোরিকশা থেকে লাশ ফেলে পালানোর চেষ্টা করে। স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে ধাওয়া দিয়ে বাবু নামে এক যুবক ও অটোরিকশাচালক আনোয়ার হোসেনকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।
নিহতের স্ত্রী ফাতিমা বেগম হিরার অভিযোগ, ‘বিএনপি-জামায়াতের লোকজন জাকিরকে উঠিয়ে নিয়ে হত্যা করেছে। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।’
অভিযোগ নাকচ করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো বলেন, ‘বিএনপি কোনো নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড সমর্থন করে না।’
তবে এ বিষয়ে জানতে নোয়াখালী জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা ইসহাক খন্দকারের ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বেগমগঞ্জ থানার ওসি লিটন দেওয়ান বলেন, মরদেহ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী হাসপাতালে রাখা আছে।
সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোরশেদ আলম বলেন, জাকির চিহ্নিত সন্ত্রাসী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে সোনাইমুড়ী থানায় খুন, ডাকাতি, অস্ত্র, নারী অপহরণ, নারী ও শিশু নির্যাতন, মাদকসহ ১১টি মামলা রয়েছে। জাকির হত্যার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য বল গ প ট য় হত য উপজ ল র এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
গৃহবধূর সঙ্গে আটকের ভিডিও ভাইরাল: স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা বহিষ্কার
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নোমান বাবুকে (৩৩) সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) নোয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের দপ্তর সম্পাদক মাহবুব ফাহাদ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। নোমান বাবু বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ছিলেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নোয়াখালী জেলা শাখার অধীনস্থ বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক নোমান বাবু দলের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় সংগঠন পরিপন্থি অসামাজিক কার্যকলাপে যুক্ত হয়েছেন। জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ছাবের আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য ও প্রমাণ রয়েছে। অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার কারণে তাকে সংগঠন থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
সাতক্ষীরায় বিএনপি ও যুবদলের ৩ নেতাকর্মী বহিষ্কার
সেনা অভিযানে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ফরিদকে যুবদল থেকে বহিষ্কার
অভিযোগের বিষয়ে নোমান বাবু বলেন, ‘‘আমাকে বহিষ্কারের বিষয়টি শুনেছি। একটি মহল ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসিয়েছে।’’
রবিবার (১০ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের তফাদার গেট এলাকার এক গৃহবধূর ঘরে অবস্থান করছিলেন নোমান বাবু। এলাকাবাসী তাদের আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলে। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় নেতারা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এরপর তাকে আটকের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
নোয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘‘আমরা একটা ভিডিও পেয়েছি। তাতে আমাদের মনে হয়েছে, তিনি অসামাজিক কাজে জড়িত। তাই তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।’’
নোয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ছাবের আহমেদ বলেন, ‘‘সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক, তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’
ঢাকা/সুজন/বকুল