নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে জাকির হোসেন (৪১) নামে এক যুবলীগ কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা শেষে লাশ বস্তাবন্দি করে বেগমগঞ্জ উপজেলার একটি খালে ফেলে দেওয়ার সময় স্থানীয়রা দুজনকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের কোটবাড়িয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।  

নিহত জাকির সোনাইমুড়ী উপজেলা ৮নং সোনাপুর ইউনিয়নের তিনতেড়ী এলাকার হাসানপুর গ্রামের দূর্গা পাটোয়ারী বাড়ির রফিক মিয়ার ছেলে। তিনি একই ইউনিয়ন যুবলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে জাকির এলাকায় ব্যাপক প্রভাবশালী ছিলেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর তিনি তাবলিগে চলে যান। কয়েক মাস আগে তাবলিগ থেকে ফিরে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে এলাকায় ঢোকেন। এরপর তিনি এলাকায় মাটির ব্যবসা শুরু করেন। এই ব্যবসা নিয়ে একই এলাকার মাটি ব্যবসায়ী ল্যাংড়া নজরুল, তুহিন, সাদ্দামসহ ১০-১২ জনের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব চলছিল। ৮-১০ দিন আগে প্রতিপক্ষের লোকজনের সঙ্গে জাকিরের বিরোধ তুমুল আকার ধারণ করে। দু’দিন আগে নজরুলের মাটি কাটার ভেকু মেশিন পুড়িয়ে দেয় জাকির। এর জেরে সোমবার দুপুরের দিকে নজরুল ও তার লোকজন জাকিরকে তুলে নিয়ে যায় উপজেলার কোটবাড়িয়া এলাকায়। সেখানে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। 

আজ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পাঁচজন জাকিরের বস্তাবন্দি লাশ একটি সিএনজি অটোরিকশায় করে বেগমগঞ্জ উপজেলার পলোয়ান পুল এলাকায় নিয়ে আসে। তারা খাল পাড়ে অটোরিকশা থেকে লাশ ফেলে পালানোর চেষ্টা করে। স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে ধাওয়া দিয়ে বাবু নামে এক যুবক ও অটোরিকশাচালক আনোয়ার হোসেনকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। 

নিহতের স্ত্রী ফাতিমা বেগম হিরার অভিযোগ, ‘বিএনপি-জামায়াতের লোকজন জাকিরকে উঠিয়ে নিয়ে হত্যা করেছে। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।’ 

অভিযোগ নাকচ করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো বলেন, ‘বিএনপি কোনো নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড সমর্থন করে না।’

তবে এ বিষয়ে জানতে নোয়াখালী জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা ইসহাক খন্দকারের ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

বেগমগঞ্জ থানার ওসি লিটন দেওয়ান বলেন, মরদেহ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী হাসপাতালে রাখা আছে। 

সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোরশেদ আলম বলেন, জাকির চিহ্নিত সন্ত্রাসী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে সোনাইমুড়ী থানায় খুন, ডাকাতি, অস্ত্র, নারী অপহরণ, নারী ও শিশু নির্যাতন, মাদকসহ ১১টি মামলা রয়েছে। জাকির হত্যার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য বল গ প ট য় হত য উপজ ল র এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

১৩ মামলার আসামি যুবলীগকর্মীকে হত্যা, আটক ২  

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় মাটি বিক্রি নিয়ে দ্বন্দ্বে জাকির হোসেন (৪০) নামে একজনকে হত্যা করা হয়েছে। নিহত জাকির ১৩ মামলার আসামি এবং যুবলীগ কর্মী। পুলিশ বলছে, তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।  

মঙ্গলবার (১৩ মে) উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের কোটবাড়িয়া এলাকায় তাকে হত্যা করা হয়। 

নিহত জাকির সোনাইমুড়ী উপজেলা ৮নং সোনাপুর ইউনিয়নের হাসানপুর গ্রামের দুর্গা পাটোয়ারী বাড়ির রফিক মিয়ার ছেলে। তিনি ইউনিয়ন যুবলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।

আরো পড়ুন:

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মেয়েকে হত্যা, বাবা-মা গ্রেপ্তার

জমি নিয়ে বিরোধে যুবককে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ৭

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জাকির আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আমলে প্রভাবশালী যুবলীগ কর্মী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর তিনি তাবলিগে চলে যান। মুখে দাঁড়ি রেখে তাবলিগ শেষে কয়েক মাস আগে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে এলাকায় ঢোকেন। এরপর তিনি এলাকায় মাটির ব্যবসা শুরু করেন। জাকির প্রতি গাড়ি মাটি বিক্রি করেন ১২০০ টাকা। একই এলাকার ল্যাংড়া নজরুল, তুহিন, সাদ্দামসহ ১০-১২ জন প্রতি গাড়ি মাটি বিক্রি করেন ১৬০০ টাকায়। এ নিয়ে গত ৮-১০ দিন আগে প্রতিপক্ষের লোকজনের সঙ্গে তার বিরোধ তীব্র হয়। গত দুই দিন আগে জাকিরের মাটি কাটার ভেকু মেশিন পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরের দিকে মাটির দাম নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে তাকে তুলে নিয়ে যায় উপজেলার কোটবাড়িয়া এলাকায়। সেখানে তাকে হত্যা করা হয়। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সেখান থেকে পাঁচজন সিএনজিচালিত অটোরিকশা যোগে লাশ পাশের বেগমগঞ্জ উপজেলায় এলাকায় নিয়ে যায়। পরে একটি খালের পাড়ে ফেলে পালানোর সময় স্থানীয়রা ধাওয়া দিয়ে দুই জনকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। 

নিহতের স্ত্রী ফাতিমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘‘বিএনপি ও জামায়াতের লোকজন জাকিরকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি আমার স্বামী মারা গেছে। আমি হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।’’

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো বলেন, ‘‘বিএনপি কোনো নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড সমর্থন করে না।’’ নোয়াখালী জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা ইসহাক খন্দকারের মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।    

বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুর রহমান বলেন, গণপিটুনিতে আহত দুইজনকে পুলিশ উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী হাসপাতালে ভর্তি করেছে। জাকিরের লাশ একই হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।   

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন, জাকির চিহিৃত সন্ত্রাসী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে সোনাইমুড়ী থানায় ডাকাতি, নারী ও শিশু নির্যাতনসহ ১১টি মামলা রয়েছে। এছাড়া বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ডাকাতি, ছিনতাইসহ দুটি মামলা রয়েছে।

ঢাকা/সুজন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৩ মামলার আসামি যুবলীগকর্মীকে হত্যা, আটক ২  
  • নোয়াখালীতে যুবলীগ কর্মীকে হত্যা, লাশ ফেলে যাওয়ার সময় দুজন আটক