রাজধানীর বাজারে অধিকাংশ মিনিকেট চাল এখন ৭৫ থেকে ৭৬ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, যা দু-চার সপ্তাহ আগেও ছিল ৮৮ থেকে ৯০ টাকা। মাসখানেকের মধ্যে এই চালের দাম কেজিতে প্রায় ১৫ টাকা কমেছে।

সরেজমিনে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও হাতিরপুল বাজার ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে। বিক্রেতারা জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বোরো ধান থেকে তৈরি নতুন চাল বাজারে আসছে। তাতেই দাম কমেছে সরু তথা মিনিকেট চালের। অবশ্য পুরোনো মিনিকেটের দাম এখনো ৮৫ টাকার ওপরে। নতুন চালের দাম কম থাকায় বিক্রেতারা এখন আর পুরোনো মিনিকেট চাল অবশ্য কম বিক্রি করছেন।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে খুচরা দোকানে ডায়মন্ড, মঞ্জুর, সাগর ও রসিদ প্রভৃতি ব্র্যান্ডের নতুন মিনিকেট চাল ৭৫ থেকে ৭৬ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেটের মধ্যে মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের চালের দাম অবশ্য আরেকটু বেশি। প্রতি কেজি মোজাম্মেল চাল এখন ৮২-৮৪ টাকায় বিক্রি হয়। মাসখানেক আগে এই চালের কেজি ১০০ টাকার আশপাশে ছিল।

অন্যান্য চালের মধ্যে মানভেদে নাজিরশাইল ৮০ থেকে ৯০ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ চাল ৫৮ টাকা ও স্বর্ণা ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বাসমতি চালের দামও আগের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা কমে ৯৫ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে।

চালের পাশাপাশি ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। গতকাল বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০-১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা গত সপ্তাহে প্রায় ২০ টাকা বেশি ছিল। গতকাল ধরনভেদে প্রতি কেজি সোনালি মুরগি ২৪০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এই মুরগির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০-৩০ টাকা কমেছে। সাধারণত বৃহস্পতিবারের তুলনায় শুক্রবার সকালে বাজারে মুরগিসহ বেশির ভাগ কাঁচা পণ্যের দাম একটু বাড়তি দেখা যায়।

ফার্মের মুরগির বাদামি রঙের ডিমের দাম আগের সপ্তাহের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে। গতকাল প্রতি ডজন ডিম ১৩০-১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

মুদিপণ্যের মধ্যে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে। প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে দাম বেড়েছে ৫ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কেজি আলু ২৫ টাকা, দেশি রসুন ১৪০ টাকা, আমদানি করা রসুন ২২০-২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজি আগের দামে স্থিতিশীল রয়েছে। গতকাল প্রতি কেজি পটোল, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দল ও লাউ ৪০ থেকে ৫০ টাকায়; বরবটি, পেঁপে ও টমেটো ৬০ টাকায় এবং কাঁকরোল ও বেগুন ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

মাছ-মাংসের দামও অনেকটা আগের মতোই রয়েছে। গতকাল প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৫০-৮০০ টাকা ও খাসির মাংস ১,০০০-১,১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাছের মধ্যে প্রতি কেজি চাষের তেলাপিয়া ২২০-২৫০ টাকা, পাঙাশ ২০০-২৫০ টাকা, রুই ৩৫০-৪০০ টাকা, কৈ ৩০০-৩২০ টাকা ও পাবদা ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা জেনে জি এম কাদের কাউন্সিল স্থগিত করেন

জাতীয় পার্টির জি এম কাদেরবিরোধী অংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ অভিযোগ করেছেন, গত ২০ মে দলের প্রেসিডিয়াম সভায় ২৮ জুন জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সম্মেলনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জেনে জি এম কাদের সম্মেলন স্থগিত করেন। পরে আদালতের নির্দেশে সদস্যপদ ফিরে পেয়ে তাঁরা সম্মেলন আয়োজন করেন। তাই জি এম কাদের আর আইনত চেয়ারম্যান নন।

আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এই অভিযোগ করেন।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে দাবি করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আমরা আদালতে যাই, আদালত আমাদের সদস্যপদ বহাল করেন ও কাদেরের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। আমরা রায় পেয়েছি ৩০ জুলাই। কাউন্সিল হয় ৯ আগস্ট। এই মধ্যবর্তী সময়ে জি এম কাদের আদালতে যাননি। এখন তিনি বাইরে চিল্লাচিল্লি করছেন। সুতরাং বিষয়টি আপনাদের বুঝতে হবে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমরা কাউন্সিল করেছি।’

সম্মেলন আয়োজনে কোনো তড়িঘড়ি বা লুকোচুরি করা হয়নি বলে মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টির এই নেতা। তিনি বলেন, অনৈতিকভাবে জি এম কাদের যে সম্মেলন স্থগিত করেছিলেন, সেই সম্মেলন তাঁরা আবার আয়োজন করেছেন। জাতীয় পার্টির প্রতীক ‘লাঙ্গল’ এবং নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন নম্বর–১২ তাঁরা ব্যবহার করবেন।

নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাঁরা সার্বিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। তাঁরা আশা করছেন, নির্বাচন কমিশন সে অনুযায়ী তাঁদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেবেন।

জি এম কাদের সম্মেলনের ট্রেন মিস করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন কাদেরবিরোধী অংশের নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, কাউন্সিল হয়ে গেছে। এখন আর কোনো আকুতির সুযোগ নেই। তাঁরা পার্টির কেন্দ্রীয় অফিস ব্যবহার করছেন, এটা অন্যায় করছেন। শিগগির এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কাদেরবিরোধীদের কাউন্সিলে জি এম কাদেরকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল উল্লেখ করে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ৯ আগস্ট কাউন্সিলে সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন। আগের কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে। তাই আইনত জি এম কাদেরের চেয়ারম্যান পদের ভিত্তি নেই। তাঁরা মিলেমিশে কাজ করার জন্য জি এম কাদেরকে আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতীয় পার্টির কাদেরবিরোধী অংশের মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, দেশে এখন ক্রান্তিকাল চলছে। আগে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশের সর্বাত্মক সংস্কারে কাজ করেছিলেন। বর্তমানে যে ক্রান্তিকাল চলছে, তার উত্তরণে জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব দরকার।

আরও পড়ুননির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি চেয়ে আনিসুল-হাওলাদার কমিটির চিঠি১৩ আগস্ট ২০২৫

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু হোসেন, শফিকুল ইসলাম, নাজমা আক্তার, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম, মাসরুর মাওলা, সাইদুর রহমান, ইয়াহইয়া চৌধুরী, সরদার শাহজাহান, নুরুল ইসলাম মিলন, লিয়াকত হোসেন, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, হারুন আর রশিদ, সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম, মো. ইয়াকুব হোসেন, শেখ আলমগীর হোসেন, নীগার সুলতানা, মো. বেলাল হোসেন, ফখরুল আহসান শাহজাদা, নাসির উদ্দিন সরকার, হাফেজ মাহমুদুর রহমান, সেরনিয়াবাত সেকান্দার আলী, শারমিন পারভীন লিজা, মিজানুর রহমান, তাসলিমা আকবর রুনা, শারমিন আকতার, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

আরও পড়ুনজাতীয় পার্টির নিয়ন্ত্রণ নিতে তৎপর আনিসুল, ঠেকাতে সক্রিয় জি এম কাদের১৩ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ