ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) এর সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) শেখ মামুন খালেদ, তাঁর স্ত্রী নিগার সুলতানা খালেদ, কর কমিশনার আবু সাঈদ মো. মুস্তাক এবং জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল টি. এম. জোবায়েরের ভায়রা ভাই খন্দকার আবুল কাইয়ুমের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক দুটি আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।

শেখ মামুন খালেদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞার আবেদনে বলা হয়, তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে শেয়ার ব্যবসা, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। তদন্তে জানা যায়, তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা দেশত্যাগ করতে পারেন। তাই সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমন নিষিদ্ধ করা জরুরি।

কর কমিশনার আবু সাঈদ মো.

মুস্তাক ও খন্দকার আবুল কাইয়ুমের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞার আবেদনে উল্লেখ করা হয়, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল টি. এম. জোবায়েরের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, চাকরি প্রদানে ক্ষমতার অপব্যবহার, কোটি কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া, তাঁর নামে এবং পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে সম্পদ কেনা ও অর্থপাচারের বিষয়েও অনুসন্ধান চলছে।

তদন্তে আরও জানা গেছে, আবু সাঈদ মো. মুস্তাক ও খন্দকার আবুল কাইয়ুম নিজ উদ্যোগে ও বিভিন্ন উপায়ে টি. এম. জোবায়েরের অবৈধভাবে অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে স্থানান্তর করেছেন। তারাও দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমন নিষেধাজ্ঞা জারি করা প্রয়োজন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড জ এফআই দ শত য গ ন ষ ধ জ ঞ র ব দ শ গমন

এছাড়াও পড়ুন:

অপরাধী কোন বাহিনীর তা যেন দেখা না হয়: নাহিদ ইসলাম

অন্তর্বর্তী সরকার, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও অন্যান্য আদালতের কাছে আবেদন জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, যে অপরাধী, তাঁকে যেন আইনের আওতায় আনা হয়। সে কোন বাহিনীর, সেটা যাতে দেখা না হয়।

আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়ে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।

নাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীর যাঁরা জুলাই গণ–অভ্যুত্থানসহ গুমের ঘটনায় যুক্ত, তাঁদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। কোনো বাহিনীর কেউ যাতে পার পেয়ে না যায়। কারণ, তাঁরা দেখেছেন, গুমের ঘটনায় অনেক অভিযোগ এসেছে। তিনি নিজে অভিযোগ দিয়েছেন ডিজিএফআইয়ের যে অফিসাররা তাঁকে তুলে নিয়ে গেছেন, হেনস্থা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কর্মকর্তা, র‍্যাবে যাঁরা ছিলেন, ডিজিএফআইয়ে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা গুমের ঘটনায় এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ঘটনায় নেতিবাচক ভূমিকা পালন করেছেন। রামপুরা, বাড্ডার ঘটনায় বিজিবিতে একজন সেনা কর্মকর্তাকে দেখা গেছে। তাঁদের কিন্তু এখনো গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।

ফলে সরকার, ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের কাছে আবেদন জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, যে অপরাধী, তাঁকে যেন আইনের আওতায় আনা হয়। তিনি কোন বাহিনীর, সেটা যাতে দেখা না হয়। যাঁরা জনগণের ওপরে এই (জুলাই) হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন, গুম করেছেন, নির্যাতন করেছেন এবং সরকারকে ফ্যাসিবাদী হতে সহায়তা করেছেন, ক্ষমতায় থাকতে সহায়তা করেছেন, তাঁদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

ট্রাইব্যুনালের কাছে কী প্রত্যাশা, তা উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, এত মানুষ, এত ভাইবোনেরা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন। সবাই ন্যায়বিচার পাবেন। আওয়ামী লীগ, পুলিশসহ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বিচারের আওতায় আসবেন, তাঁদের শাস্তি হবে। এই ন্যায়বিচার একটা নির্দশন হয়ে থাকবে—শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, পৃথিবীর জন্য। যে কেউ যদি স্বৈরশাসন কায়েম করতে চায়, জনগণের ওপর আক্রমণ চালায়, জনগণকে হত্যা করে, তার পরিণতি আসলে কী হয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রমে সন্তোষ্টি প্রকাশ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, এটা (শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের বিরুদ্ধে মামলা) কিন্তু একটি মামলা। এ মামলার একটা রাজনৈতিক দিক যে শেখ হাসিনাকে বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে। এ ছাড়া ট্রাইব্যুনালেই অনেক মামলা রয়েছে এবং সাধারণ আদালতে আরও অনেক মামলা রয়েছে। গুমের মামলা রয়েছে। ফলে বিচারটাকে সার্বিকভাবে দেখতে হবে। কারণ, সাধারণ আদালতে যেসব মামলা, সেগুলো সম্পর্কে ইতিবাচক কথা শুনতে পাচ্ছেন না। অনেকে জামিন নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা কী, সেটা তাঁরা জানতে পারছেন না। ফলে সেই মামলাগুলো যাতে যথাযথ গুরুত্বসহকারে দেখা হয়, এই আবেদন তাঁদের থাকবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অপরাধী কোন বাহিনীর তা যেন দেখা না হয়: নাহিদ ইসলাম