বাউফলে সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ায় ইউএনওকে অপসারণের দাবি
Published: 24th, May 2025 GMT
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক এমরান হাসান সোহেলকে জেলে দেওয়ার হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সাংবাদিকরা। এ সময় তারা হুমকিদাতা বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আমিনুল ইসলামের অপসারণের দাবি জানান।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বাউফল প্রেসক্লাবের বীর উত্তম সামসুল আলম তালুকদার ভবনের সামনের সড়কে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে উপজেলার গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এতে বক্তব্য দেন, দৈনিক ভোরের কাগজের অতুল চন্দ্র পাল, দৈনিক জনকণ্ঠের কামরুজ্জামান বাচ্চু, দৈনিক সমকালের জিতেন্দ্র নাথ রায়, দৈনিক যুগান্তরের আরেফিন সহিদ, দৈনিক কালবেলার এমএ বশার, দৈনিক মানবজমিনের তোফাজ্জেল হোসেন, দৈনিক প্রথম আলোর এবিএম মিজানুর রহমান, দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের দেলোয়ার হোসেন ও দৈনিক ভোরের অকঙ্গিকারের অহিদুজ্জামান সুপন।
আরো পড়ুন:
ঈদে গণমাধ্যমে ৫ দিন ছুটি দাবি
বাংলাফ্যাক্টের অনুসন্ধান: যেভাবে ছড়ায় প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুজব
বক্তারা বলেন, ইউএনও আমিনুল ইসলাম ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের মূখ্য সচিবের আপন ভাগ্নি জামাই। সেই প্রভাবে পূর্বের কর্মস্থল মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় ইউএনও থাকাকালে ব্যাপক দুর্নীতি করে পত্রিকার শিরোনামও হয়েছিলেন। তিনি সাংবাদিককে জেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। তিনি (ইউএনও) বাউফলে চাকরি করার যোগ্যতা হারিয়েছেন। আমরা তার বিভাগীয় শাস্তিসহ অপসারণ দাবি করছি।
গত সোমবার (১৯ মে) বাউফল গার্লস স্কুলে দুর্নীতি প্রতিরোধে বিতর্ক প্রতিযোগিতার স্কুল পর্যায়ের চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান চলাকালে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে আমন্ত্রণ না জানানোর অভিযোগ তুলে বাউফল দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক এমরান হাসান সোহেলের সঙ্গে অসাদাচারণ করেন ইউএনও আমিনুল ইসলাম।
এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ভিডিওতে ইউএনওকে বলতে শোনা যায়, “আপনারা প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি হয়ে মনে করছেন, আপনারা রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি হয়ে গেছেন। আমি প্রজাতন্ত্রের এমন চাকর মালিককে শাস্তিও দিতে পারি।” এরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইউএনওকে নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।
ঢাকা/ইমরান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউএনও ব উফল উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
অভিযোগের পর বাতিল চারটি কার্যাদেশ
বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপস পালের বিরুদ্ধে নিয়মের বাইরে গিয়ে দরপত্র আহ্বানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি নীতিমালা উপেক্ষা করে চারজন ঠিকাদারের অনুকূলে ৩০ লক্ষাধিক টাকার কার্যাদেশও দেন। এই অনিয়ম তদন্তের দাবি জানিয়ে ইউএনও তাপস পাল ও এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
১৯ মে এ অভিযোগ দেন ঠিকাদার মো. রফিকুল ইসলাম মোল্লা। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে চারটি কার্যাদেশই আগের দিন সভা দেখিয়ে (১৮ মে) বাতিল করে উপজেলা প্রশাসন। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ৯ মার্চ চিতলমারীর ইউএনওর বাসভবন মেরামত, সংস্কারসহ বিভিন্ন কাজের জন্য ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার বিভাগ। প্রায় দুই মাস পরে চারটি দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রথম দরপত্রে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিসকক্ষ এবং উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার অফিসকক্ষ সংস্কার ও মেরামত, ইউএনওর বাসভবন (দ্বিতীয় তলা) সংস্কার ও মেরামত, দুই নম্বর দরপত্রে উপজেলা প্রকৌশলীর অফিসকক্ষ সংস্কার ও মেরামত, ইউএনওর বাসভবনের সীমানাপ্রাচীর উঁচুকরণ, ফটক সংস্কার ও মেরামত, তিন নম্বর দরপত্রে তাঁর কার্যালয় ও উপজেলা পরিষদ কার্যালয় সংস্কার ও মেরামত এবং চার নম্বর দরপত্রে ইউএনওর অফিস বাংলো সংস্কার ও মেরামতের কথা বলা হয়। কোনো দরপত্রেই কাজের বিবরণ ও মূল্য উল্লেখ করা হয়নি। শর্ত অনুযায়ী ১৪ মে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে দরপত্র দাখিলের কথা বলা হয়।
লিখিত অভিযোগে রফিকুল মোল্লা উল্লেখ করেছেন, ৮ মে দরপত্র আহ্বানের তারিখ দেখানো হলেও পত্রিকায় তা প্রকাশিত হয়নি। ১৪ মে বেলা ১১টা পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের নোটিশ বোর্ডে ওই দরপত্র আহ্বানের নোটিশ টানানো হয়নি।
১৫ মে চারটি দরপত্রের বিপরীতে চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেন ইউএনও তাপস পাল। প্রথম দরপত্রের জন্য কার্যাদেশ পায় শেখ মো. জাহিদুজ্জামানের মালিকানাধীন মেসার্স জ্যোতি এন্টারপ্রাইজ। দুই নম্বর দরপত্রের কাজ দেওয়া হয় চিরঞ্জীব বিশ্বাসের মালিকানাধীন মেসার্স বিশ্বাস এন্টারপ্রাইজকে। তিন নম্বর দরপত্রের কার্যাদেশ পায় তাহজ্জত খানের মালিকানাধীন মেসার্স ইউসুফ খান এন্টারপ্রাইজ। চার নম্বর দরপত্রের কার্যাদেশ দেওয়া হয় মো. ফারুক মল্লিকের মল্লিক ইন্টারন্যাশনাল এন্টারপ্রাইজকে।
জ্যোতি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শেখ মো. জাহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমি কোনো কাজ পাইনি। কে আপনাকে এসব তথ্য দিয়েছে?’
ইউএনও তাপস পাল বলেন, উপজেলা পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে চারটি কাজের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। সামনে জুন মাস হওয়ায় উপজেলা পরিষদের আরও কিছু কাজ করানো হবে, এজন্য একসঙ্গে দরপত্র আহ্বান করা হবে। অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য এড়িয়ে যান তিনি।
জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল আহসান বলেন, ‘চিতলমারীর দরপত্র আহ্বানসংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’