সপ্তাহখানেক আগে পোস্টার প্রকাশ করে জানানো হয় আগামী ঈদুল আজহায় সারাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে আদর আজাদ ও পূজা চেরির সিনেমা ‘টগর’। এবার প্রকাশ পেল সিনেমাটির প্রথম গান ‘হান্ড্রেড পার্সেন্ট দেশি’। গানটি ইতোমধ্যে দর্শক-শ্রোতার মধ্যে দারুণ সাড়া ফেলতে শুরু করেছে।

রণক ইকরামের কথায় এবং কামরুজ্জামান রাব্বি ও কর্ণিয়ার কণ্ঠে গাওয়া এই গানটিতে রয়েছে দেশীয় উৎসবের রং ও প্রাণ। গানটির সুর ও গায়কির সঙ্গে দারুণ মিল রেখে তৈরি করা হয়েছে চিত্রায়ণ। গানটির কোরিওগ্রাফি করেছেন হাবিব রহমান।

ভিডিওতে প্রাণবন্ত ও ছন্দময় নৃত্যে দর্শকের মন জয় করেছেন আদর আজাদ ও পূজা চেরী। তাদের সঙ্গে পারফর্ম করেছেন ৭০ জনেরও বেশি পেশাদার নৃত্যশিল্পী, যারা স্ক্রিনজুড়ে এনেছেন বর্ণিল দৃশ্য ও প্রাণচাঞ্চল্য।

গানটি নিয়ে অভিনেতা আদর আজাদ বলেন, ‘এমন এনার্জি-ভরা গানে পারফর্ম করা সত্যিই এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। টিমওয়ার্ক আর কোরিওগ্রাফির শক্তির জন্যই আমরা এমন একটি ভিজ্যুয়াল দিতে পেরেছি।’

অভিনেত্রী পূজা চেরী বলেন, ‘‘হান্ড্রেড পার্সেন্ট দেশি’ গানটি আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম রঙিন কাজ। গানটি করতে গিয়ে অনেক মজা করেছি এবং দর্শকও তা অনুভব করবেন– এই বিশ্বাস আমার আছে।’’

ছবির পরিচালক আলোক হাসান জানান, ‘টগর’ শুধু একটি গল্প নয়, এটি এক তরুণের যন্ত্রণাময় বাস্তবতা ও তার ভেতরে লুকিয়ে থাকা আগুনের প্রতিচ্ছবি। দর্শক এই ছবিতে অ্যাকশন, প্রেম, সমাজের বাস্তবতা– সবকিছু একসঙ্গে খুঁজে পাবেন। ছবিটির পরিবেশনা করেছে এআর মুভি নেটওয়ার্ক।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী নেত্রীর ওপর হামলা: নির্দোষ দাবি করে অভিযুক্তের ফেসবুক লাইভ

ফরিদপুরের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রী বৈশাখী ইসলাম বর্ষাকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত সাগর কাজী নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।

সোমবার সকালে অজ্ঞাত স্থান থেকে ফেসবুক লাইভে এসে সাগর কাজী নিজেকে নির্দোষ দাবি করে দায় চাপান বিএনপির নগরকান্দা উপজেলা যুগ্ম সম্পাদক বদিউজ্জামান তারা মোল্যার ওপর। লাইভের পরপরই তিনি ভিডিওটি সরিয়ে ফেলেন।

ফেসবুক লাইভে সাগর কাজী বলেন, ‘এখানে রাজনীতি করতেছেন বদিউজ্জামান তারা মোল্যা। তিনি রাজনৈতিক ইস্যু করে ফেলছেন। তিনি নিজে সেখানে উপস্থিত ছিলেন, নিজে সালিশ করেছেন, তাকে অমান্য করে বৈশাখী।’

তারা মোল্যাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘সে আমাকে এখন চিনে না, আমাকে জড়িয়ে দিচ্ছে। আরে মিয়া আমারে চিনেন না, আপনার সাথে ব্যানার করলাম, বিএনপির যখন ব্যানার করলাম, আপনি তখন চিনেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এখন আমি বিপদে পড়েছি, আমাকে চিনেন না। আমার ওপরে দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন কেন?’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা মোল্যা সেদিন বলেছেন, বিএনপির কোনো লোক ছিল না ওখানে, কিন্তু সব তারা মোল্যার লোকজন ছিল। তারা মোল্যা শেল্টার দিয়ে সবকিছু করাইছে।’

এ সময় সাগর কাজী মারধরের বিষয়ে অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি আর আব্বু নাকি পিটাইছি, একটা মানুষকে যদি ২০ থেকে ২৫ মিনিট পেটানো হয় তাহলে তার এক সপ্তাহ হাসপাতালে থাকা উচিত। আমাদের পরিবারের ব্যাকগ্রাউন্ড নষ্ট করার জন্য মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে। প্রতিদিন আমার বাড়িতে পুলিশ, সেনাবাহিনী, র‍্যাব আসতেছে।’

সাগর আরও বলেন, ‘ঘটনাস্থলে নিজে ছিলেন তারা মোল্যা। নিজেই সালিশ করেছেন। এখন বলেন তিনি ছিলেন না। আমি তো তার নির্দেশ অমান্য করিনি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘সে এখন বলছে, বিএনপির কেউ ছিল না। অথচ তার লোকজনই তো ছিল।’

ফেসবুক লাইভের বিষয়ে জানতে চাইলে বদিউজ্জামান তারা মোল্যা বলেন, ‘ওতো (সাগর কাজী) আমাকে আর বৈশাখী নিয়ে যেসব কথা বলছে, তাহলে বোঝেন কেমন লোক। কারণ, সাগর যুবলীগ নেতা ফরহাদের লোক। ওরা এখনও চাচ্ছে যে বিএনপিকে কীভাবে হেনস্তা করা যায়। আমার দল করলে অবশ্যই চিনতাম। ওদের আমার দলে মিশিয়ে তো আমি দল থেকে বহিষ্কার হতে চাই না।’

গত ৩০ মে বিকেলে ফরিদপুরের নগরকান্দার ভবুকদিয়া গ্রামে বৈশাখীকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে সাগর কাজী, তার বাবা সেকেন কাজী, স্থানীয় বিএনপি নেতার সমর্থকদের নাম উঠে আসে।

বৈশাখীর দাবি, তার ছোট বোনকে স্থানীয় শরিফ ব্যাপারী উত্ত্যক্ত করেছিলেন। পুলিশ তাকে আটক করলে উত্তেজিত হয়ে সাগর ও তার লোকজন হামলা চালায়। পরে রাত ১০টা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।

এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন, ভাঙচুর ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তিনটি মামলা হয়েছে। বৈশাখী দুটি মামলার বাদী, আর একটি করেছে পুলিশ। ইতোমধ্যে শরিফ বেপারীসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার পর নগরকান্দা থানার ওসি মো. সফর আলীকে তাৎক্ষণিকভাবে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। 

মারধরের শিকার বৈশাখী বর্তমানে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি। তার মাথা ও গলায় আঘাতের কারণে তিনি চিকিৎসাধীন। 

তিনি বলেন, নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান তারা মোল্যার নেতৃত্বে আমার ওপর সাগর কাজী ও তার বাবা সেকেন্দার কাজীসহ বিএনপির নেতারা হামলা চালায়। 

বৈশাখী বলেন, এ হামলায় যারা অংশ নিয়েছেন তারা এক সময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিল, এখন বিএনপি করে। আমার ওপর হওয়া হামলায় যারা জড়িত তারা সন্ত্রাসী, এদের কোনো দল নেই। আমি দলমতের ঊর্ধ্বে গিয়ে এই সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ