সিলেটে নদ-নদীর পানি বাড়ছে, তলিয়ে গেছে গোয়াইনঘাট-রাধানগর সড়ক
Published: 31st, May 2025 GMT
সীমান্তের ওপারে ভারতে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটের নদ-নদীতে পানি বাড়ছে। পাশাপাশি সিলেটেও চলছে থেমে থেমে বৃষ্টি। তবে কোনো নদ-নদীর পানি এখনো বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি।
এদিকে আজ শনিবার সকালে গোয়াইনঘাট উপজেলার গোয়াইনঘাট-রাধানগর সড়কের অংশবিশেষ পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ওই সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ প্রথম আলোকে বলেন, জেলার প্রধান দুই নদী সুরমা, কুশিয়ারাসহ সব কটি নদ-নদীর পানি বাড়ছে। সারি-গোয়াইন ও ধলাই নদের পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে আজ সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এটাই সতর্কবার্তা। ভারতে বৃষ্টি হলেই পাহাড়ি ঢল সীমান্তের নদ-নদী দিয়ে সিলেটে আসে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার নিম্নাাঞ্চলে দ্রুত পানি বাড়ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলেও পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা আছে। গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র জাফলং ও বিছনাকান্দি এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব স্থানে পর্যটকদের ভ্রমণ করতে না যাওয়াটাই ভালো বলে স্থানীয় লোকজন পরামর্শ দিয়েছেন।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী আজ বেলা একটার দিকে জানান, উপজেলার গোয়াইনঘাট-রাধানগর সড়কের নিচু অংশের অংশবিশেষ প্লাবিত হয়েছে। তবে বৃষ্টি কমে এলেই পানি নেমে যাবে। এখনো উপজেলার কোনো এলাকা প্লাবিত না হলেও তাঁরা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় কিছু কিছু এলাকায় পানি বাড়ছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পানি বৃদ্ধি পেলেও কারও পানিবন্দী অবস্থায় থাকার খবর পাওয়া যায়নি। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে; পাশাপাশি জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনা খাবারের মজুত রাখা হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আজিজুন্নাহার প্রথম আলোকে বলেন, গতকালের চেয়ে আজ পানি কিছুটা কমেছে। নিম্নাঞ্চলে পানি থাকলেও কোনো গ্রাম বা এলাকা প্লাবিত হয়নি। উপজেলায় ৩৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো কারও আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজন পড়েনি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকাল ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ১৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। পরে আজ সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ১ মিলিমিটার এবং সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ বৃষ্টি এখনো অব্যাহত।
এদিকে আকস্মিক অতিবৃষ্টির কারণে সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জরুরি যোগাযোগের জন্য কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে বলে এক অফিস আদেশে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের সচিব আশিক নূর।
সিলেটে আজ শনিবার সকালেও থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে লোকজন বিভিন্ন কাজে বেরিয়েছেন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ য় ইনঘ ট নদ র প ন উপজ ল র ট উপজ ল নদ নদ
এছাড়াও পড়ুন:
দুই জাতীয় প্রতিযোগিতায় বিইউবিটির গৌরবোজ্জ্বল সাফল্য
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি) সাম্প্রতিক সময়ে দুটি জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অসাধারণ সাফল্য অর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়েছে। শনিবার অনুষ্ঠিত ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’ ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিইউবিটির ডিবেটিং ক্লাব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। ফাইনাল পর্বে বিইউবিটি আনন্দ মোহন কলেজকে পরাজিত করে।
বিতর্কের বিষয় ছিল- ‘রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করা আসন্ন বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।’ এই বিতর্কে বিইউবিটি বিরোধী দলের ভূমিকায় অংশগ্রহণ করে যুক্তিনিষ্ঠ বিশ্লেষণ, শক্তিশালী উপস্থাপন এবং বুদ্ধিদীপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে।
অন্যদিকে, শুক্রবার অনুষ্ঠিত ৭ম ওয়ার্ল্ড ইনভেনশন কমপিটিশন অ্যান্ড এক্সিবিশনের জাতীয় পর্বে বিইউবিটির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী প্রকল্প ‘এগ্রো ডক্টর’ আইটি ও রোবোটিকস বিভাগে রৌপ্য পদক অর্জন করে।
৫১তম ব্যাচের তিনি শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বী, কামরুল ইসলাম ও মো. সাকিলের উদ্ভাবিত প্রকল্প ‘এগ্রো ডক্টর’ প্রযুক্তিনির্ভর এমন একটি সমাধান, যা কৃষকদের ফসলের রোগ নির্ণয়ে সহায়তা করে। এটি অটোমেশন ও মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে, টেকসই কৃষি ও সফল ফলনের নিশ্চয়তা প্রদান করে।
এই সাফল্যের পর বিইউবিটির উভয় দল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ বি এম শওকত আলীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে। উপাচার্য তাঁদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘এই অর্জনসমূহ শুধুমাত্র ব্যক্তিগত নয়, বরং বিইউবিটির সম্মান এবং বাংলাদেশের শিক্ষার গৌরব। আশা করি, বিইউবিটির তরুণেরা দেশ ও জাতির জন্য আরও সৃজনশীল ও দক্ষ নেতৃত্ব গড়ে তুলবে।’
ডিবেটিং ক্লাবের সদস্যরা বলেন, ‘এই জয় আমাদের যুক্তিবোধ, দলগত কাজ ও নেতৃত্বের একটি অনন্য প্রমাণ। আমরা ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও নিজেদের জায়গা করে নিতে চাই।’ অপরদিকে টিম ‘এগ্রো ডক্টর’- এর সদস্যরা বলেন, ‘আমাদের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি দেশের কৃষি খাতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে। এই সাফল্য আমাদের আরও উদ্ভাবনে উৎসাহিত করবে।’
বিইউবিটি ভবিষ্যতেও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করে বাংলাদেশকে গর্বিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি