মে মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ৯ জন
Published: 2nd, June 2025 GMT
মে মাসে ৬০টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৩৮১ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির ৫ জন, আওয়ামী লীগের ৩ জন এবং জামায়াতের ১ জন।
রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) আজ সোমবার গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এ তথ্য জানায়। সংগঠনটি বলছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এবং এইচআরএসএসর তথ্য অনুসন্ধানী ইউনিটের তথ্যের ভিত্তিতে মে মাসের মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্যগুলো উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মে মাসে গণপিটুনির শিকার হয়ে ১০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৫ জন। মে মাসে অন্তত ৩১টি ঘটনায় কমপক্ষে ৯১ জন সাংবাদিক নির্যাতন, গ্রেপ্তার ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। এ সব ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্ততপক্ষে ৩৩ জন, হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন ৭ জন ও গ্রেপ্তার হয়েছেন ৩ জন। এ ছাড়া ৭টি মামলায় ৪৮ জন সাংবাদিককে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এইচআরএসএস বলছে, মে মাসে কমপক্ষে ১৩৬ জন নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন অন্তত ৫৫ জন, যাঁদের মধ্যে ২৫ জন ১৮ বছরের কম বয়সী শিশু। এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় যে ১৪ জন নারী ও কন্যাশিশু দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে তিনজনকে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নে রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, সাংবাদিক, ও নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সার্বিক পরিস্থিতি উন্নয়ন করা জরুরি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জনগণের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আর এসব বিষয় বাস্তবায়ন করতে না পারলে দেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাবে। তাই এইচআরএসএসের পক্ষ থেকে সরকারকে মানবাধিকার রক্ষায় ও সার্বিক পরিস্থিতি উন্নয়নে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে এবং দেশের সব সচেতন নাগরিক, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতারা ও দেশি- বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে আরও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র শ ক র হয় ছ র হয় ছ ন পর স থ ত র জন ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
আধুনিক খামার ব্যবস্থাপনা
অল্পসংখ্যক কিংবা বেশি, ছোট কিংবা মাঝারি আকারের উন্নত জাতের গরু নিয়ে খামার গড়ে ভাগ্য পাল্টাতে পারেন যে কেউ। চাকরি কিংবা প্রবাসজীবনের অবসানের সঙ্গে বেশির ভাগ মানুষই উদ্যোগী হন গরুর খামার গড়তে।
কথা হয় চট্টগ্রামের নাহার ক্যাটেল ফার্মের বিক্রয় নির্বাহী মো মুস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, নাহার অ্যাগ্রোর দুগ্ধজাত গাভি নিয়ে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আছে নাহার ডেইরি ফার্ম। এখানে গরুর সংখ্যা ১ হাজার ৫০০ ছাড়িয়েছে। আবার কোরবানির ঈদ সামনে রেখে মাংস উৎপাদনের জন ৪০০টির বেশি গরু নিয়ে চট্টগ্রামের বায়েজিদ লিংক রোডে আছে নাহার ক্যাটেল ফার্ম।
উন্নত জাতের গরু নির্বাচন
আধুনিক খামারে লাভের পরিমাণ বেশি পেতে চাইলে চাই উন্নত জাতের বাছুর বা গরু দিয়ে খামার শুরু করা। প্রচলিত উন্নত জাতের গরুর মধ্যে আছে নেপালি গরু, গ্রিস, শাহিওয়াল, মিরকাদিম, হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান, আরসিসি ও স্থানীয় উন্নত জাতের দেশি গরু।
নিয়মিত ভ্যাকসিনেশন
‘রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম’— এই সূত্র মেনে গরুকে নিয়মিত ভ্যাকসিন দিতে হয়। ভেটেরিনারি বা প্রাণী চিকিৎসকের নিয়মিত পর্যবেক্ষণ দরকার। তাতে যেমন রক্ষা পায় গরু, তেমনই সচল থাকে খামারের সব কার্যক্রম।
খাবারদাবার
সবার আগে থাকবে সতেজ কাঁচা ঘাসের চাহিদা। কী পরিমাণ ঘাস খাওয়াবেন, তারও একটা সহজ সূত্র আছে—গরুর শারীরিক ওজনের ৩-৪ শতাংশ। নাহার ক্যাটেল ফার্মে দৈনিক কাঁচা ঘাসের প্রয়োজন হয় ১-২ টন আর নাহার ডেইরি ফার্মে প্রায় ২০ টন। এত পরিমাণ ঘাসের চাহিদা পূরণে নাহার এগ্রোর রয়েছে প্রায় ৩০০ একর জায়গাজুড়ে ঘাস উৎপাদনের কার্যক্রম।
ঘাসের পাশাপাশি দানাদার খাবার লাগবে গরুর ওজনের ১.১-১.২ শতাংশ। খাবারের সংকট দেখা দিলে খড় আর চিটাগুড়ের মিশ্রণ পারেন তাতে। খাওয়ানো যাবে ভুট্টা থেকে তৈরি সাইলেজ। গাছে ভুট্টা যখন অপরিপক্ব থাকে, তখন পুরো ভুট্টাসহ পুরো গাছ ছোট ছোট করে কেটে ৪৫ থেকে ৯০ দিন রেখে গরুকে খাওয়ানো হয় যা সাইলেজ নামে পরিচিত।
আর প্রয়োজন হয় স্বচ্ছ স্বাভাবিক খাবার পানি। সুস্থ সবল গরু পেতে প্রতিদিন নিয়মিত গোসল করানো নিশ্চয়ই করতে হবে।
খামারের শুরু ও খরচাপাতি
লাভের অঙ্ক নিশ্চিত করতে কমপক্ষে ২০টি গরু নিয়ে খামার শুরু করা উচিত বলে মনে করছেন মুস্তাফিজুর রহমান। খরচের ক্ষেত্রে প্রতি ২০টা গরুর বিপরীতে নিয়মিত দেখাশোনার জন্য থাকা কমপক্ষে একজন লোকের প্রয়োজন। আছে অবকাঠামোগত নির্মাণকাজে এককালীন খরচ, বিদ্যুৎ বিল, খাবার খরচ, ভ্যাকসিন ও ওষুধপত্র।
গরুর খামার ব্যবসায় তরুণদের অংশগ্রহণ
তুলনামূলক ঝুঁকি কম থাকায় লাভের আশায় প্রতিনিয়ত এ পেশায় নাম লেখাচ্ছেন তরুণেরাও। কুমিল্লার লালমাইয়ের বাসিন্দা আরিফ মজুমদার। খামার গড়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা থেকে কলেজ ডিঙিয়েই খামারে নাম লেখান। গড়েন সুরুজ এগ্রো খামার। একই জেলার সদর উপজেলার মৌলভীনগর গ্রামের আবদুল লতিফ। নিজের কাপড়ের ব্যবসার পাশাপাশি কোরবানির ঈদ কেন্দ্র করে গড়ে তোলেন রওশন এগ্রো। প্রতিবছরের মতো এবারও খামারের সব গরু আসবে রাজধানী ঢাকার কাজীপাড়ার এক গরুর হাটে। গরু বিক্রিতে যেমন লাভের মুখ দেখা যায়, আবার সেই গরুর খামার থেকে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট করার মাধ্যমে বোনাস হিসেবে গ্যাসের চাহিদাও মিটে যায়।