প্রথমবারের মতো মানব মস্তিষ্ক সফলভাবে প্রতিস্থাপন বা ইমপ্ল্যান্ট করল যুক্তরাষ্ট্রের নিউরোটেক স্টার্টআপ প্যারাড্রমিকস। প্রায় তিন বছর ধরে পশুর দেহে গবেষণা চালানোর পর গত ১৪ মে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে এই পরীক্ষা চালায় প্রতিষ্ঠানটি। সফল এই ইমপ্ল্যান্টকে ব্রেন কম্পিউটার ইন্টারফেস (বিসিআই) প্রযুক্তিতে একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

‘কনেক্সাস’ নামে পরিচিত ডিভাইসটি মস্তিষ্কে স্থাপন ও অপসারণের পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় মাত্র ১০ মিনিটে। অস্ত্রোপচারটি পরিচালনা করেন নিউরোসার্জন ডা.

ম্যাথু উইলসি ও ডা. ওরেন সাঘের নেতৃত্বাধীন একদল চিকিৎসক ও প্রকৌশলী। কনেক্সাস মূলত এমন একটি বিসিআই ডিভাইস, যা মস্তিষ্কের স্নায়ু সংকেত পড়ে তা ভাষা, লেখা বা কম্পিউটার কার্সর নিয়ন্ত্রণে রূপান্তর করতে পারে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে স্ট্রোক, মেরুদণ্ডে আঘাত কিংবা এএলএসে আক্রান্ত হয়ে বাক্‌শক্তি হারানো ব্যক্তিদের আবার কথা বলার সক্ষমতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছে প্যারাড্রমিকস। মানবদেহে এই প্রথম ইমপ্ল্যান্টটি ব্যবহৃত হয় এক মৃগী রোগীর অস্ত্রোপচারের সময়। রোগীর মস্তিষ্কে খিঁচুনির উৎস অপসারণের সময় সাময়িকভাবে ডিভাইসটি সংযুক্ত করা হয়। এতে গবেষকেরা রোগটির ফলে সৃষ্ট স্নায়বিক পরিবর্তন বিশ্লেষণ করার সুযোগ পান।

২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত প্যারাড্রমিকসের প্রধান নির্বাহী ম্যাট অ্যাঙ্গেল বলেন, যেসব জটিল মস্তিষ্কজনিত রোগকে এখনো ‘অসাধ্য’ মনে করা হয়, ভবিষ্যতে সেগুলোকে প্রযুক্তির মাধ্যমে সমাধানযোগ্য সমস্যা হিসেবে দেখা যাবে, এই লক্ষ্যেই তাঁরা কাজ করছেন। প্রতিষ্ঠানটি কয়েক বছর ধরে ভেড়ার ওপর বিসিআই প্রযুক্তি পরীক্ষায় ব্যস্ত ছিল। মানবদেহে সফল প্রয়োগের পর এবার তারা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্যারাড্রমিকস জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রক অনুমোদন পেলে চলতি বছরের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ মানব পরীক্ষায় যাওয়া হবে। প্রতিষ্ঠানটি আশা করছে, এই দশকের শেষ নাগাদ ডিভাইসটি বাজারজাত করার অনুমোদন মিলবে। বাণিজ্যিকভাবে এটি এক লাখ মার্কিন ডলারে বিক্রি হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছে।

ব্রেন কম্পিউটার ইন্টারফেস বা বিসিআই এমন একটি প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে মস্তিষ্ক ও বাইরের যেকোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হয়। ১৯৭৩ সালে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারবিজ্ঞানী জ্যাক ভিদাল প্রথম এই ধারণা দেন। এর পর থেকে বিসিআই প্রযুক্তির উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে চলেছেন গবেষকেরা। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা যায়, মাইক্রোইলেকট্রোড স্থাপন করা বানর একটি রোবোটিক হাত সচেতনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ২০০৪ সালে পঙ্গু অ্যাথলেট ম্যাট ন্যাগল বিসিআই ব্যবহার করে কম্পিউটার কার্সর ও কৃত্রিম হাত চালাতে সক্ষম হন।

বর্তমানে বিসিআই প্রযুক্তির শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বিতাটি চলছে ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান নিউরালিংক ও প্যারাড্রমিকসের মধ্যে। নিউরালিংক এরই মধ্যে তিন রোগীর শরীরে তাদের তৈরি ডিভাইস বসিয়েছে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব স আই

এছাড়াও পড়ুন:

তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের সাক্ষাৎ

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ।

রবিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আরো পড়ুন:

‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’

‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’সহ ৩৮ দাবি সংবাদকর্মীদের 

সাক্ষাৎকালে বিএসআরএফের সভাপতি মাসউদুল হক জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিবালয় বিটে কর্মরত অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের সচিবালয়ের ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে পত্র পাঠানো হলেও এখনো তা বাস্তবায়িত হয়নি। 

তিনি অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের জন্য সচিবালয়ের ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা চালুর বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়া সচিবালয়ের ১ নম্বর গেটের পাশাপাশি ৫ নম্বর গেট দিয়েও অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের সচিবালয়ে প্রবেশের  ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান। 

এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বিএসআরএফের সভাপতির প্রস্তাব আন্তরিকভাবে বিবেচনা করার আশ্বাস দেন। 

সাক্ষাৎকালে বিএসআরএফের সহ-সভাপতি মাইনুল হোসেন পিন্নু, সাধারণ সম্পাদক উবায়দুল্লাহ বাদলসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/এএএম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ