অবৈধ বালু ব্যবসায় বাধা, এনসিপি নেতা ও তার স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ
Published: 25th, June 2025 GMT
মাদারীপুরের রাজৈরে অবৈধ বালু ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেতা ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২৪ জুন) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের তাতিকান্দা গ্রামের ২ নং ব্রিজ এলাকায় তারা হামলার শিকার হন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
আহতরা হলেন- এনসিপির মাদারীপুর জেলা সমন্বয়কারী কমিটির সদস্য ও রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের তাতিকান্দা ২ নং ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা (৩৫) ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী জান্নাতুল জারা নিপা (৩০)। তাদের রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, অবৈধ ড্রেজার বালু ব্যবসার জন্য পাইপ লাইন টানেন হোসেনপুর ইউনিয়ন যুবদল নেতা এনামুল শেখ ও তার লোকজন। এতে বাধা দেন মহাসিন। ক্ষিপ্ত হয়ে এনামুল মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে মোবাইলে কল করে মহাসিনকে বাড়ির সামনের সড়কে ডেকে আনেন। সেখানে মহাসিনকে বেধড়ক মারধর করা হয়। চিৎকার শুনে স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে মারধরের শিকার হন মহাসিনের দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নিপা। পরে স্বজন ও স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
আরো পড়ুন:
খুলনায় এসআইকে মারধরের পর পুলিশে সোপর্দ
চাঁদা না দেওয়ায় দাড়ি ধরে টান, মারধরের অভিযোগ
আহত মহাসিন ফকির বলেন, “এনামুল শেখ আগে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ করতেন। এখন তিনি হোসেনপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি প্রার্থী হতে চাচ্ছেন। তাদের অবৈধ বালুর ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় আমার ওপর হামলা হয়েছে।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “লতিফ বয়াতি নামে এক ব্যক্তি আমাকে ফোন করে ঘর থেকে বের করে আনেন। এনামুল ও হকসহ আরো ৭-৮ জন মিলে আমাকে বেধড়ক মারধর করে। আমার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকেও মারধর করা হয়।”
অভিযুক্ত হোসেনপুর ইউনিয়ন যুবদল নেতা এনামুল শেখ উল্টো অভিযোগ করে বলেন, “বাড়ি নির্মাণের জন্য আমার একটা পুকুর ভরাট করতে এনসিপি নেতা মিরাজুলকে বলেছিলাম। তার ড্রেজার পাইপ লাইন নিয়েছি। এ জন্য মহাসিন ফকির চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না পেয়ে ড্রেজার চালানোর সঙ্গে সঙ্গে গোড়া থেকে একটি পাইপ ভেঙে ফেলেন তিনি। এ নিয়ে কথা বলতে গেলে, তিনি আগে আমাকে মারধর করেন। পরে আমার ছোট ভাই (নাজমুল শেখ) মহাসিনের চোখে ঘুষি মারে। এ বিষয়ে আমরা রাজৈর থানায় মামলা করেছি।”
রাজৈর থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদ খান বলেন, “ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। একপক্ষের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”
ঢাকা/বেলাল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর জ ত য় ন গর ক প র ট অভ য গ ম রধর র এন ম ল ব যবস এনস প উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
এ রায় ঘোষণা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভুক্তভোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত: ওএইচসিএইচআর
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণা গত বছর গণ-অভ্যুত্থানের সময় গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভুক্তভোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি মুহূর্ত বলে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের (ওএইচসিএইচআর) দপ্তরের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি। তবে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি।
আজ সোমবার মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ মন্তব্য করেন রাভিনা শামদাসানি।
ওএইচসিএইচআরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে রাভিনা শামদাসানি বলেন, ‘২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমাদের তথ্য-অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে আমরা নির্দেশদাতা ও নেতৃত্বের অবস্থানে থাকা ব্যক্তিদেরসহ দোষীদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে আসছি। ভুক্তভোগীদের কার্যকর প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ব্যবস্থা করারও আহ্বান জানিয়েছি।’
রাভিনা শামদাসানি বলেন, ‘যেহেতু এই বিচারপ্রক্রিয়ার কার্যক্রমের বিষয়ে আমরা অবগত ছিলাম না, তাই আমরা সব জবাবদিহিমূলক কার্যক্রম, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অপরাধের অভিযোগগুলো যেন প্রশ্নাতীতভাবে যথাযথ প্রক্রিয়া ও ন্যায়বিচারের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করে, সে জন্য ধারাবাহিকভাবে বলে এসেছি। এটি বিশেষভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ যখন, এ মামলার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, অভিযুক্তের অনুপস্থিতিতে বিচার হয়েছে এবং মৃত্যুদণ্ডের শান্তি দেওয়া হয়েছে।’
মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাভিনা শামদাসানি। তিনি বলেছেন, ‘মৃত্যুদণ্ডের রায়ের জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা সব পরিস্থিতিতে এর বিরোধিতা করি।’
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক আশা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশ সত্য প্রকাশ, ক্ষতিপূরণ ও ন্যায়বিচারের একটি সমন্বিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্য ও ক্ষত কাটিয়ে ওঠার দিকে এগিয়ে যাবে। এ প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তা খাতের অর্থবহ ও রূপান্তরমূলক সংস্কার অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত। আর এ সংস্কার হবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, যেন আর কখনো মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের ঘটনা না ঘটে। এসব প্রচেষ্টাগুলোয় বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে সহায়তা দিতে প্রস্তত রয়েছে ওএইচসিএইচআর।