বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায় যুবদল নেতা মো. মাহফুজুর রহমান লিটনের বিরুদ্ধে ৬২ শতাংশ জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ জমির মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা। 

মঙ্গলবার বরিশাল প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী বিধবা ৩ বোন। তারা হলেন- সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের আজাহার আলী খানের মেয়ে নাদিরা আলম খান, শামীমা বেগম ও রানু বেগম। অভিযুক্ত লিটন বানারীপাড়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা জানান, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা জোটবদ্ধ হয়ে তাদের জমি দখল করেছে। এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন যুবদল নেতা লিটন। তার সঙ্গে রয়েছেন আওয়ামী লীগ কর্মী জলিলসহ আরও কয়েকজন।

তারা জানান, বরিশাল-বানারীপাড়া সড়কের পাশে তাদের পৈত্রিক ৬২ শতাংশ জমি নিয়ে প্রতিপক্ষের মামলা রয়েছে। আদালতের রায় পেয়ে তারা জমি ভোগ দখল করে আসছিলেন। আওয়ামী লীগ আমলে দলটির কর্মী তৎকালীন ইউপি সদস্য আ.

জলিলের সহায়তায় একাধিকবার জমি দখলের চেষ্টা চালানো হয়। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তখন তা ব্যর্থ হয়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর প্রতিপক্ষ পরিবারের সদস্য যুবদল নেতা লিটনের নেতৃত্বে নতুন করে দখলচেষ্টা শুরু হয়। গত ১১ জুন তাদের বসতঘরে হামলা ও ভাঙচুর এবং দখলদাররা নতুন ঘর তোলা শুরু করেন।

তারা আরও জানান, বানারীপাড়া থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি। পরে আদালত থেকে স্থিতাবস্থা দিলেও তা তোয়াক্কা করেননি দখলদাররা।

৩ বোনের অভিযোগ, পুলিশ আদালতের স্থিতাবস্থা আমলে নেয়নি। উল্টো দখলদারদের মামলায় তাদের পরিবারের দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

অভিযোগের বিষয়ে যুবদল নেতা লিটন জানান, অভিযোগকারী তিন বোন তার চাচাতো খালা। বিরোধপূর্ণ জমিটি উচ্চ আদালতের রায় পেয়ে সম্প্রতি তিনি রেকর্ড করেছেন। এতে প্রতিপক্ষরা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। তার ওপর হামলার মামলায় দু’জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

দখলচেষ্টার সঙ্গে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ কর্মী জলিল জানান, তিনি বিএনপি করেন। আওয়ামী লীগ আমলে তাকে ওই দলে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। জমি-সংক্রান্ত ঘটনার সঙ্গে তার কোনো
সম্পৃক্তা নেই। জমি বিক্রির জন্য লিটন বিএনপির কয়েকজনকে আমমোক্তারনামা দিয়েছেন। তারা কিছুদিন আগে ওই জমি দখল করেছেন।

বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তফা বলেন, বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে আদালতের স্থিতাবস্থার আদেশ পেয়েছি সোমবার। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যুবদল নেতার নির্মাণকাজ বন্ধ করা হয়েছে।

একপক্ষের দু’জনকে গ্রেপ্তার করার বিষয়ে তিনি বলেন, জমি নিয়ে মারামারি ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বর শ ল য বদল অভ য গ য বদল ন ত আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ত্রাণবাহী জাহাজে বাধা মানবতার বিরুদ্ধে ঘৃণ্যতম অপরাধ: জামায়া‌ত

গাজামুখী ত্রাণবাহী জাহাজ আটক করার ঘটনায় দখলদার ইসরাইলের ন্যক্কারজনক ভূমিকার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জা‌নি‌য়ে‌ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আন্তর্জাতিক পানিসীমায় ত্রাণবাহী জাহাজে বাধা দেওয়া‌কে মানবতার বিরুদ্ধে ঘৃণ্যতম অপরাধও ব‌লে‌ছে দল‌টি।

ত্রাণবাহী জাহাজগুলোর নিরাপত্তা বিধানের আহ্বান জানিয়ে বৃহস্প‌তিবার এক বিবৃ‌তি‌তে দল‌টির সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

ব্রাজিল ও সুই‌ডে‌নের রাষ্ট্রদূতের স‌ঙ্গে জামায়াত আমিরের বৈঠক

নির্বাচনের প্রস্তুতিতে জামায়াত ৫ পার্সেন্ট এগিয়ে: দুদু

তি‌নি ব‌লেন, “২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় প্রায় ৭০ হাজার নিরীহ মানুষ শহীদ হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, গাজায় ইতোমধ্যেই দুর্ভিক্ষ ও রোগব্যাধি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ পৌঁছাতে না পারলে হাজার হাজার নারী-শিশুর মৃত্যু অনিবার্য হয়ে পড়বে।”

“আমরা জেনেছি, ইসরাইল ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র ১৩টি ত্রাণবাহী নৌযান এবং সেখানে থাকা বহু মানবাধিকার কর্মীকে আটক করেছে। অথচ এই নৌযানগুলো গাজাবাসীর জন্য খাদ্য, পানি ও ওষুধ বহন করছিল। আমি ইসরাইলের এই অমানবিক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”

জামায়া‌তের সে‌ক্রেটা‌রি জেনা‌রেল বলেন, “আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী মানবিক সহায়তা গন্তব্যে পৌঁছাতে কাউকে বিরত রাখা যায় না। দখলদার ইসরাইল নৌযান ও মানবাধিকার কর্মীদের আটক করে মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধ করেছে। ইতোমধ্যেই এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও ইসরাইলের এ কর্মকাণ্ডকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, এটি নিরীহ মানুষের জীবনকে মারাত্মকভাবে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।”

তিনি বলেন, “মূলত দখলদার ইসরাইল ফিলিস্তিনে জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে। আন্তর্জাতিক পানিসীমায় ত্রাণবাহী জাহাজে বাধা দিয়ে তারা চরম অপরাধ সংঘটিত করেছে। এ হামলা মানবতার বিরুদ্ধে এক ঘৃণ্যতম অপরাধ।”

তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর প্রাণ বাঁচাতে ত্রাণবাহী জাহাজগুলো যাতে নিরাপদে গাজায় পৌঁছতে পারে, সেজন্য ইসরাইলের ওপর অবিলম্বে চাপ সৃষ্টি করতে হবে। একই সাথে আটক মানবাধিকার কর্মীদের নিরাপত্তা ও নিঃশর্ত মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।”

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ত্রাণবাহী জাহাজে বাধা মানবতার বিরুদ্ধে ঘৃণ্যতম অপরাধ: জামায়া‌ত