বিসিএস ইনফরমেশন একাডেমি প্রতিষ্ঠায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত
Published: 29th, June 2025 GMT
বিসিএস ইনফরমেশন একাডেমি প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ঢাকা শহরের সুবিধাজনক স্থানে এই একাডেমি নির্মাণ করবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলমের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
বিসিএস ইনফরমেশন একাডেমি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে এই একাডেমি প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু করা হবে। বিসিএস ইনফরমেশন একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হলে এটি তথ্য সার্ভিসের কর্মকর্তাদের দক্ষতা উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’ একাডেমি প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য তিনি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
বিসিএস ইনফরমেশন একাডেমি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেন, ‘তথ্য ক্যাডার কর্মকর্তাদের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রশিক্ষণ একাডেমি স্থাপন করা সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। এই একাডেমি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় আন্তরিকভাবে কাজ করবে।’
বিসিএস ইনফরমেশন একাডেমি প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বিসিএস ইনফরমেশন অ্যাসোসিয়েশন। এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল কালাম মোহাম্মদ শামসুদ্দিন এবং মহাসচিব মো.
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের গত এপ্রিল মাসের সমন্বয় সভায় বিসিএস ইনফরমেশন একাডেমি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোচনা হয়। ওই সভায় মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেন, বর্তমানে তথ্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য কোনো প্রশিক্ষণ একাডেমি নেই। একটি প্রশিক্ষণ একাডেমি স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। এপ্রিল মাসের সমন্বয় সভার কার্যবিবরণীতেও একাডেমি প্রতিষ্ঠার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ বিষয়ে বিসিএস ইনফরমেশন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মহাসচিবকে উদ্যোগ গ্রহণের কথাও কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর মকর ত দ র গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
‘মিস ইনফরমেশন শেয়ার করার বড় মাধ্যম ফটোকার্ড’
বাংলাদেশের মিডিয়া হাউজগুলো মনে করে ফ্যাক্টচেক এর পেছনে টাকা খরচ অতিরিক্ত, যেটা তারা চান না। অথচ মিস ইনফরমেশন শেয়ার করার একটি বড় মাধ্যম হলো ফটোকার্ড। ভাইরাল ঘটনার খবর গণমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রচার হয়। ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যম সাম্প্রতিক অপতথ্যের গতিপ্রকৃতি’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। শনিবার রাজধানীর সার্কিট হাউস রোডে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) সেমিনার কক্ষে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়ব, মূল প্রবন্ধ পড়েন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ (ইবিএলআইসিটি) প্রকল্পের পরামর্শক মামুন–উর–রশীদ, সভাপ্রধান হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, আমাদের মিডিয়া হাউজগুলো মনে করে ফ্যাক্টচেক এর পেছনে টাকা খরচ অতিরিক্ত, যেটা তারা চান না। বাংলাদেশের কোনো পত্রিকারই এই ইনভেস্টমেন্ট নাই। ফেইক ভিডিও, স্ক্রিপটেড ভিডিও এসব কিছুই ছড়ায়, ছড়াবেও কিন্তু পত্রিকাগুলো এ ধরনের কাজগুলো রুখে দিতে চায় কিনা, পেইড টুলসগুলো কিনে প্রতিটাই রুখে দিতে পারে কিনা, তা দেখতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সত্যের চেয়ে ভাইরাল হওয়ার দিকেই মনোযোগ বেশি। এ ধরনের খবর গণমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রচার করা হয়। ভাইরাল নিউজের বাণিজ্যিক ও আর্থিক মূল্য আছে বলে সেটা করা হচ্ছে। এই চিন্তাধারা থেকে বের হওয়া না গেলে দেশের গণমাধ্যমগুলো বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে।
পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ সূচনা বক্তব্যে গত ১৫ বছরের সাংবাদিকতার চিত্র তুলে ধরে বলেন, রাষ্ট্র নিজে মিথ্যার কারখানায় পরিণত হয়েছিল এবং সংবাদমাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছিল তার ফেরিওয়ালা।
গ্রেপ্তার, নির্যাতন, গুমের ঘটনা ঘটানোর জন্য শিকারি সাংবাদিকতা করা হয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ফারুক ওয়াসিফ বলেন, সাংবাদিকরা গত ১৫ বছর পেশাগতভাবে হুমকিতে ছিলেন। তারা রাজনৈতিকভাবে কোনো অবস্থান নিতে পারেন না। মূলধারার গণমাধ্যম এখনও সত্য প্রকাশে দ্বিধান্বিত। মূলধারার গণমাধ্যমে কী ধরনের অপতথ্য ছড়ানো হয় এবং তা কীভাবে রুখে দেওয়া যায় সেটা নিয়ে কাজ হওয়া দরকার। অপতথ্যকে বা গুজবকে শুধু ফ্যাক্টচেক দিয়ে রুখে দেওয়া সম্ভব নয়। এটাকে সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিতে হবে।
মামুন-উর-রশীদ বলেন, মিডিয়া হাউজ যদি আস্থা হারিয়ে ফেলে, তাহলে সেটা পুরো সোসাইটির জন্য হুমকিস্বরূপ।
৫ আগস্টের পর বিভিন্ন হাউজের সংবাদ প্রকাশের ডেটাসহ বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলের অপতথ্য ছড়ানোর হার নিয়ে বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করে তিনি বলেন, মেইনস্ট্রিম মিডিয়া আমাদের দেশে সরব। আর বাংলাদেশে মিস ইনফরমেশন শেয়ার করার একটি বড় মাধ্যম ফটোকার্ড।
সেমিনারে প্রবন্ধের ওপর মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। এতে বক্তব্য রাখেন- প্রথমা প্রকাশনার প্রধান সমন্বয়কারী মশিউল আলম, একাত্তর টিভির সিওও শফিক আহমেদ, যুগান্তরের নগর সম্পাদক মিজান মালিক প্রমুখ।
সংবাদমাধ্যমে অপতথ্য মোকাবিলায় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তিগত বিনিয়োগের বিষয়গুলোকে তুলে ধরেন তারা। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন পিআইবির জ্যেষ্ঠ গবেষণা কর্মকর্তা গোলাম মোর্শেদ।