নোয়াখালীতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে মারধরের অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে
Published: 30th, June 2025 GMT
নোয়াখালীর চাটখিলে মাদ্রাসার এক অধ্যক্ষকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদল নেতার বিরুদ্ধে। আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তালতলা মহিলা আলিম মাদ্রাসার প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ওই মাদ্রাসার অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে অধ্যক্ষের বিরোধ চলছিল বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগী তালতলা মহিলা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আশেকে এলাহী এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। তবে মারধরের কথা অস্বীকার করেছেন চাটখিলের নোয়াখোলা ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জসিম উদ্দিন।
অধ্যক্ষ আশেকে এলাহী প্রথম আলোকে বলেন, বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি অবসরপ্রাপ্ত একজন সচিবের নাম প্রস্তাব করে একটি অ্যাডহক কমিটি জমা দিয়েছেন। ওই কমিটির বিরুদ্ধে স্থানীয় বিএনপির একটি পক্ষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। ইউএনওর নির্দেশে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজ সকালে অভিযোগ তদন্ত করতে মাদ্রাসায় যান।
আশেকে এলাহী অভিযোগ করেন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা যখন তদন্ত করছিলেন, তখন ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন ও তাঁর লোকজন হট্টগোল করে তদন্ত বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেন। তারপর শিক্ষা কর্মকর্তা তদন্ত শেষ করে মাদ্রাসা এলাকা ত্যাগ করেন। এ সময় বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন অধ্যক্ষের সঙ্গে মাদ্রাসার প্রধান ফটকের সামনে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে জসিম ও তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজন তাঁর গায়ে হাত তোলেন। তিনি বিষয়টি ইউএনওকে জানিয়েছেন।
জানতে চাইলে যুবদল নেতা জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, অধ্যক্ষের গঠন করা প্রস্তাবিত অ্যাডহক কমিটির বিপক্ষে তাঁরা ইউএনওর কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ওই অভিযোগের তদন্ত আজ হয়েছে। তবে অধ্যক্ষের সঙ্গে তাঁর কোনো ঝামেলা হয়নি। অধ্যক্ষকে নাজেহাল ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব প্রচার করছেন।
একই বিষয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, ‘আমরা জাকির হোসেন নামের একজনের নাম কমিটিতে নাম প্রস্তাব করেছি। অধ্যক্ষ সেটা বিবেচনায় না নিয়ে সাবেক এক সচিবের নাম প্রস্তাব করেছেন। অথচ ওই ব্যক্তি ঠিকমতো এলাকায় আসেন না। এলাকার কেউই তাঁকে ওই দায়িত্বে দেখতে চান না।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, অধ্যক্ষ তাঁকে তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বিস্তারিত শুনে তাঁকে পুরো ঘটনা উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ থানায় দিতে পরামর্শ দিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি (ইউএনও) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত প রস ত ব তদন ত য বদল ব এনপ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজারে দুর্ঘটনায় আহতদের বাঁচাতে ইউএনও’র দৃষ্টান্ত স্থাপন
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে গুরুতর আহত তিনজনের জীবন রক্ষায় মানবিক ও দ্রুত তৎপরতার নজির স্থাপন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. সাজ্জাত হোসেন।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুর ৩টার দিকে উপজেলার বিশনন্দি ইউনিয়নের তালতলা মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মদনপুর থেকে যাত্রীবাহী একটি সিএনজি অটোরিকশা বিশনন্দি ফেরিঘাটের দিকে যাচ্ছিল। তালতলা মোড়ে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা গ্যাসভর্তি একটি ট্রাকের সঙ্গে অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এতে ঘটনাস্থলেই অজ্ঞাতনামা দুইজন পুরুষ নিহত হন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন— কুমিল্লার রাবেয়া (৬০), মদনপুর এলাকার সিএনজি চালক আবুল বাশার (৪৫), অজ্ঞাতনামা এক পুরুষ, এক নারী ও এক ১২ বছরের শিশু। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন।
কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সারতি রানী রায় জানান, আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দ্রুত ঢাকায় নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। এ সময় স্থানীয় সাংবাদিক মাসুম বিল্লাহ বিষয়টি ইউএনও মো. সাজ্জাত হোসেনকে অবহিত করেন। খবর পাওয়ার মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে ইউএনও হাসপাতালে পৌঁছে নিজ খরচে চারটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
ঢাকায় নেওয়ার পর আরও দুইজন মারা যান। তবে বাকি তিনজন চিকিৎসাধীন এবং তাদের অবস্থা উন্নতির দিকে বলে জানা গেছে।
মানবিক ভূমিকা সম্পর্কে ইউএনও মো. সাজ্জাত হোসেন বলেন, "মানবিক দায়িত্ব থেকেই আমি দ্রুত হাসপাতালে গিয়েছি। তখন আহতদের জীবন বাঁচানোই ছিল প্রধান কাজ। আশা করছি, তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।"
স্থানীয়রা ইউএনও'র এ উদ্যোগকে ‘সময়ের সঠিক সিদ্ধান্ত’ এবং ‘প্রশংসনীয় দৃষ্টান্ত’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।