একটি ‘অনলাইন টিভিতে’ সংবাদ প্রচারের জেরে কুমিল্লার আদালতে মাহবুব আলম আরিফ নামে এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এক হাজার কোটি টাকার মানহানির অভিযোগে মামলা হয়েছে। মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বাদী হয়ে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১১ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। তিনি মুরাদনগর উপজেলার চৌধুরীকান্দি গ্রামের মৃত মোজাম্মেল হক ভূঁইয়ার ছেলে। 

সাংবাদিক মাহবুব আলম আরিফ একই উপজেলা সদর এলাকার মৃত মনিরুল হকের ছেলে। তিনি মানবকণ্ঠ পত্রিকার মুরাদনগর উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। আদালতের বিচারক মমিনুল হক অভিযোগটি আমলে নিয়ে ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছেন। বুধবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মো.

সাদিকুর রহমান।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৭ জুন রাতে মুরাদনগরে এক নারী স্ত্রী ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় জড়িত একমাত্র আসামি ফজর আলীকে বিএনপি নেতা উল্লেখ করে সাংবাদিক মাহবুব আলম আরিফ তার ‘মুরাদনগর লাইভ টিভি’ নামক একটি অনলাইন পেজে বিষয়টি প্রচার করেন। এতে দলটির (বিএনপি) ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। 

মামলার বাদী কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘বিএনপি একটি জনপ্রিয় দল। একটি স্পর্শকাতর ঘটনায় রাজনৈতিক পরিচয় যাচাই-বাছাই না করেই আসামি ফজর আলীকে বিএনপির কর্মী হিসেবে উল্লেখ করে ফেসবুকে লাইভ দিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য প্রচার করা হয়। এ কারণে এক হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করেছি।’

এ বিষয়ে মামলার বিবাদী সাংবাদিক আরিফ বলেন, ‘ওই ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা ফজর আলীকে বিএনপির কর্মী বলে বক্তব্য দেন। তবে ফজর আলী বিএনপির কর্মী নন এমন বক্তব্যও দিয়েছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন। ওই সংবাদে আমার কোনো ব্যক্তিগত মতামত ছিল না। মামলার বিষয়টি জেনেছি, তবে আদালতের সমন এখনও হাতে পাইনি।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম র দনগর ব এনপ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘মূল হোতা’ গ্রেপ্তার না হওয়ায় চারদিক থেকে ‘খুনের হুমকি পাচ্ছে’ পরিবার

কুমিল্লার মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ নারীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার পর ‘মূল হোতা’ ও মামলার প্রধান আসামি আকুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহ গ্রেপ্তার না হওয়ায় আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন বাদী। তিনি বলেছেন, চারদিক থেকে খুনের হুমকি আসায় আতঙ্কে বাড়িতে যেতে পারছেন না তিনি।

মামলাটির বাদী নিহত রোকসানা বেগমের মেয়ে রিক্তা আক্তার। আজ সোমবার দুপুরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘খুনিরা চেয়েছিল আমাদের নির্বংশ করার জন্য। আমি খুনিদের প্রত্যেকের ফাঁসি চাই। শিমুল চেয়ারম্যান এখনো গ্রেপ্তার না হওয়ায় আমরা বেশি আতঙ্কে আছি। শিমুল চেয়ারম্যানই মূল হোতা। ঘটনার সময় সে খুনিদের বলেছে, “রুবির বংশ নির্বংশ কইরা দিতে হইবো। ২০টা মামলায়ও যদি তোরারে আসামি করে, আমি তোরারে ছাড়াইয়া আনমু।” শিমুল চেয়ারম্যান ঘটনার সময় নেতৃত্ব দিয়েছে। সে আসামিদের বলেছে, “সবডিরে পিটাইয়া আর কোপাইয়া মাইরালা।” আমরা এখন বাড়িতে যেতেও ভয় পাচ্ছি। চারদিক থেকে খুনের হুমকি আসছে।’

গত বৃহস্পতিবার উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে ‘মব’ সৃষ্টি করে একই পরিবারের তিনজনকে হত্যা করা হয়। তাঁরা হলেন কড়ইবাড়ি গ্রামের রোকসানা বেগম ওরফে রুবি (৫৩), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকি (২৯)। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন রোকসানার আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (২৭)।

এ ঘটনায় ৮ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। পৃথক অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ওই আটজন বর্তমানে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। আজ দুপুরে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ১১ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মমিনুল হকের আদালতে আসামিদের ৫ দিন করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হয়। তবে আদালত থেকে এখনো রিমান্ড শুনানির সময় জানানো হয়নি বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. সাদেকুর রহমান।

আজ দুপুরে নিহত তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকির স্বামী মনির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘খুনিরা এখন চায় আমাকে আর রিক্তা আপাকে খুন করতে। তাঁরা জানে, আমাদের খুন করলে মামলা নিয়ে লড়ার মতো কেউ থাকবে না। আমরা নিজেদের জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছি। এই তিন খুনের মাস্টারমাইন্ড চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। এ ছাড়া সব আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা না হলে আমাদের তারা যেকোনো সময় খুন করতে পারে।’

আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা অপেক্ষার পর আর স্বীকারোক্তি দেননি ‘অন্যতম পরিকল্পনাকারী’২০ ঘণ্টা আগে

জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাঙ্গরা বাজার থানার উপপরিদর্শক মো. আবু তাহের ভূঁইয়া আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিমুল চেয়ারম্যানসহ সব আসামি বর্তমানে পলাতক। আসামিদের ধরতে আমরা বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। আর বাদী ও তাঁর স্বজনেরা বর্তমানে বাড়িতে থাকছেন না। পুলিশ ঘটনার শুরু থেকেই নিহত ব্যক্তিদের বাড়িসহ এলাকায় নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে।’

আরও পড়ুনস্থানীয় ইউপি সদস্যের পরিকল্পনায় মুরাদনগরে ‘মব’ সৃষ্টি করে তিনজনকে হত্যা০৫ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামি ফজর আলীকে বিএনপি নেতা বলে উল্লেখ, সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা
  • মুরাদনগরে নারীর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার মূলহোতা শাহ পরান পাঁচদিনের রিমান্ডে 
  • মুরাদনগরের সেই নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়ানোর ‘নেপথ্যে’র ব্যক্তির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  • অবশেষে ডাক্তারি পরীক্ষা হলো মুরাদনগরের সেই নারীর
  • আদালতে চার আসামির কেউই জবানবন্দি দেননি
  • ১২ দিন পর নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন, রিমান্ড শেষে ৪ আসামি কারাগারে
  • মুরাদনগরে নারী নির্যাতন: রিমান্ড শেষে চার আসামিকে আদালতে তোলা হবে আজ
  • সমকামীতার জেরে রূপগঞ্জে পারভেজকে হত্যা , গ্রেপ্তার ২
  • ‘মূল হোতা’ গ্রেপ্তার না হওয়ায় চারদিক থেকে ‘খুনের হুমকি পাচ্ছে’ পরিবার