সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতার এক হাজার কোটি টাকার মানহানি মামলা
Published: 10th, July 2025 GMT
একটি ‘অনলাইন টিভিতে’ সংবাদ প্রচারের জেরে কুমিল্লার আদালতে মাহবুব আলম আরিফ নামে এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এক হাজার কোটি টাকার মানহানির অভিযোগে মামলা হয়েছে। মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বাদী হয়ে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১১ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। তিনি মুরাদনগর উপজেলার চৌধুরীকান্দি গ্রামের মৃত মোজাম্মেল হক ভূঁইয়ার ছেলে।
সাংবাদিক মাহবুব আলম আরিফ একই উপজেলা সদর এলাকার মৃত মনিরুল হকের ছেলে। তিনি মানবকণ্ঠ পত্রিকার মুরাদনগর উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। আদালতের বিচারক মমিনুল হক অভিযোগটি আমলে নিয়ে ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছেন। বুধবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মো.
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৭ জুন রাতে মুরাদনগরে এক নারী স্ত্রী ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় জড়িত একমাত্র আসামি ফজর আলীকে বিএনপি নেতা উল্লেখ করে সাংবাদিক মাহবুব আলম আরিফ তার ‘মুরাদনগর লাইভ টিভি’ নামক একটি অনলাইন পেজে বিষয়টি প্রচার করেন। এতে দলটির (বিএনপি) ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।
মামলার বাদী কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘বিএনপি একটি জনপ্রিয় দল। একটি স্পর্শকাতর ঘটনায় রাজনৈতিক পরিচয় যাচাই-বাছাই না করেই আসামি ফজর আলীকে বিএনপির কর্মী হিসেবে উল্লেখ করে ফেসবুকে লাইভ দিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য প্রচার করা হয়। এ কারণে এক হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করেছি।’
এ বিষয়ে মামলার বিবাদী সাংবাদিক আরিফ বলেন, ‘ওই ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা ফজর আলীকে বিএনপির কর্মী বলে বক্তব্য দেন। তবে ফজর আলী বিএনপির কর্মী নন এমন বক্তব্যও দিয়েছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন। ওই সংবাদে আমার কোনো ব্যক্তিগত মতামত ছিল না। মামলার বিষয়টি জেনেছি, তবে আদালতের সমন এখনও হাতে পাইনি।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম র দনগর ব এনপ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মুরাদনগরে মা, ছেলে ও মেয়ে হত্যার ঘটনায় ৮ আসামির তিন দিনের রিমান্ড
কুমিল্লার মুরাদনগরে মব সন্ত্রাস তৈরি করে মা, ছেলে ও মেয়েকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৮ আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার কুমিল্লার ১১নং আমলী আদালতের বিচারক মমিনুল হক তাদের তিনদিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পরিদর্শক মো. সাদেকুর রহমান। তিনি বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিলেন, শুনানি শেষে বিচারক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
আসামিরা হলেন- মো. সবির আহমেদ (৪৮), মো. নাজিম উদ্দীন বাবুল (৫৬), ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়া (৫০), রবিউল আওয়াল (৫৫), দুলাল (৪৫), আতিকুর রহমান (৪২), বয়েজ মাস্টার (৪৩) ও আকাশ (২৪)।
এর আগে গত ৩ জুলাই মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন কড়ইবাড়ি গ্রামে মোবাইল চুরির ঘটনা ও মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে স্থানীয়দের একটি দল প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে মা-মেয়েসহ একই পরিবারের তিন সদস্যকে নির্মমভাবে গণপিটুনি ও কুপিয়ে হত্যা করে। নিহতরা হলেন— কড়ইবাড়ি গ্রামের জুয়েল মিয়ার স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি (৫৫), তার ছেলে রাসেল মিয়া (২৮) এবং মেয়ে জোনাকি আক্তার (২২)। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হন রুবির আরেক মেয়ে রুমা আক্তার। তাকে প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত রুবির মেয়ে রিক্তা বেগম বাদী হয়ে বাঙ্গরা বাজার থানায় মামলা করেন। মামলায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল ও ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়াসহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ২৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলার পরপরই সেনাবাহিনী এবং র্যাব অভিযান চালিয়ে আট জনকে গ্রেপ্তার করে।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলাটি প্রথমে বাঙ্গরা থানার পুলিশ এবং সোমবার বিকেলে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলার তদন্ত করছেন জেলা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার চক্রবর্তী।
এদিকে মুরাদনগরে অপর ঘটনায় এক নারীর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার মূলহোতা শাহপরানকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন একই আদালত। গত ২৬ জুন রাতে ওই নারী ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে শাহ পরানসহ অন্যরা ওই নারীকে মারধর করে তার ভিডিও ভাইরাল করে দেন। পরে ওই নারীর করা পর্নোগ্রাফির মামলায় গ্রেপ্তার হন মূলহোতা শাহপরানসহ ৫ জন। এর আগে ৪ জনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রুহুল আমিন জানান, শাহপরান ওই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ফজর আলীর ছোট ভাই। তারই পরিকল্পনায় ওই নারীর ভিডিও ধারণ ও ভাইরাল করা হয়। তার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে বিচারক ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।