বান্দরবানে সাঙ্গুর চর থেকে বালু তুলে চলছে সড়কের কাজ
Published: 13th, July 2025 GMT
বান্দরবান সদর ইউনিয়নের গোয়ালীখোলা রোয়াজারপাড়া এলাকায় সাঙ্গু নদের চর থেকে খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। এতে নদের তীরবর্তী কিছু জনবসতি বিলীন হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বালু তোলার সঙ্গে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, যে স্থান থেকে বালু তোলা হচ্ছে, সেখানে রেইছা খাল ও সাঙ্গু নদ মিলিত হয়েছে। পাশেই সদর ইউনিয়নের রোয়াজারপাড়া এলাকা। খননযন্ত্র দিয়ে ওই স্থানে বালু তুলে ট্রাকে ভর্তি করতে দেখা যায়। এলাকার এক বাসিন্দা দিদারুল আলমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বালু তুলে রেশম বোর্ড এলাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
পরে রেশম বোর্ড এলাকায় গিয়ে ট্রাক থেকে বালু খালাস করতে দেখা যায়। সেখানে কথা হয় বালু খালাসের কাজে নিয়োজিত শ্রমিক আবু তাহের ও ট্রাকচালক মো.
রোয়াজারপাড়ার কয়েকজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সাঙ্গু নদের গোয়ালীখোলা এলাকাটি খুবই ভাঙনপ্রবণ। ইতিমধ্যে এলাকার ৩০০ ফুটের বেশি তীর ভেঙে নদে বিলীন হয়েছে। এতে বেশ কিছু পরিবার বাড়িঘর হারিয়েছে। বালু তোলার কারণে তীরের ভাঙন আরও বাড়বে। নদের তীর ভেঙে গেলে রোয়াজারপাড়াও বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
বাসিন্দারা জানান, বন্দোবস্ত পাওয়া চরের জমির মালিক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. কামাল। তিনি এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় বাসিন্দারা কেউ বালু তোলার বিষয়ে প্রতিবাদ করতে পারছেন না।
জানতে চাইলে বান্দরবান সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. কামাল বলেন, ‘চরের জায়গাটি আমার উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। মরা বালু জমে যাওয়ায় চরে কোনো চাষ হচ্ছে না। তাই মরা বালু তুলে রেইছা-গোয়ালীখোলা সড়কের কাজে লাগানো হচ্ছে। এই মরা বালু তোলায় চরের ও সাঙ্গু নদের তীরের কোনো ক্ষতি হবে না।’
বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মারুফা সুলতানা খান বলেন, বালু তোলার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। কেউ এ বিষয়ে তাঁকে অভিযোগও করেননি। তিনি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ন দরব ন সদর ব ন দরব ন স সড়ক র ক জ নদ র ত র এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মহাসড়কে নির্মাণকাজের সময় গ্যাস লাইনে ছিদ্র, সরবরাহ বন্ধ হয়ে ভোগান্তিতে গ্রাহক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চার লেন মহাসড়কের নির্মাণকাজের সময় এক্সকাভেটরের (খননযন্ত্র) আঘাতে গ্যাসের সংযোগ লাইন ছিদ্র হয়ে যায়। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (বিজিডিসিএল) কর্তৃপক্ষ। এতে জেলা শহরের প্রায় ১৫ হাজার আবাসিক-বাণিজ্যিক গ্রাহকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে শহরের উলচাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করতে কাজ শুরু করেছে বিজিডিসিএলের কারিগরি দল। গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগবে বলে জানা গেছে।
বিজিডিসিএলের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপমহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল হক প্রথম আলোকে বলেন, বিকেল চারটার দিকে শহরের ভাদুঘর থেকে উলচাপাড়া রোডের গ্যাস সঞ্চালনের ৬ ইঞ্চি লাইন ছিদ্র হয়ে যায়। গ্যাসের সঞ্চালন লাইন সচল রেখে মেরামত করলে ওই স্থানে আগুন ধরে যাবে। তাই সদর উপজেলার ঘাটুরা অংশ থেকে সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দক্ষিণ দিকে জেলা শহরের সব আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। গ্রাহকদের ভোগান্তির কথা ভেবে কারিগরি দল দ্রুত মেরামতকাজ শুরু করেছে। ২০ হাজার গ্রাহকের মধ্যে শহরের মধ্যেই প্রায় ১৫ হাজার গ্রাহক রয়েছে। গ্যাস সরবরাহ পেতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগবে।
বাখরাবাদ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া চার লেন মহাসড়কে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। আজ বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের উলচাপাড়া অংশে খননযন্ত্র দিয়ে কাজ চলছিল। সে সময় ওই যন্ত্রের আঘাতে গ্যাস সঞ্চালন লাইনের ৬ ইঞ্চি পাইপ ছিদ্র হয়ে গ্যাস বের হতে থাকে। বিষয়টি বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে তাদের কারিগরি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। গ্যাসের সংযোগ লাইন মেরামত করতে সদর উপজেলার ঘাটুরা এলাকায় থাকা গ্যাস সঞ্চালন লাইন বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরসহ পৌর এলাকায় আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
কালাইশ্রীপাড়ার মনির হোসেন বলেন, ‘বিকেল চারটার পর থেকে গ্যাস নেই। রান্নার কাজ বন্ধ রয়েছে। শিশুদের জন্য কোনো খাবার রান্না করতে পারছেন না আমার স্ত্রী।’
কাজীপাড়ার বাসিন্দা তমালিকা দেবনাথ বলেন, ‘সন্ধ্যা ছয়টার নাশতা বানাতে রান্নাঘরে যাই। গিয়ে দেখি চুলায় গ্যাস আসছে না। কবে আসবে জানি না। রান্নাবান্না বন্ধ রয়েছে। ছোট বাচ্চারা খাবারের জন্য কান্নাকাটি করছে।’
বিজিডিসিএলের ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার রাজস্ব বিভাগের উপব্যবস্থাপক গোলাম মোক্তাদির প্রথম আলোকে বলেন, ‘উলচাপাড়ায় গ্যাসের লাইন ছিদ্র হয়ে গেছে। তাই ঘাটুরা থেকে গ্যাসের সঞ্চালন লাইন বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে পুরো শহরে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তবে আমাদের কারিগরি দল কাজ শুরু করেছে।’