সব শ্রেণি-পেশা, রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও ধর্মীয় গোষ্ঠী এবং ব্যক্তির প্রতি গণতান্ত্রিক আচরণ প্রদর্শনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ৪৬ নাগরিক।

শনিবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের পর দীর্ঘ সময় নিষ্ক্রিয় থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধীরে ধীরে সক্রিয় হলেও সমাবেশ, জমায়েত ও মিছিলে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের ঘটনা গভীর উদ্বেগের। আমরা এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই।’

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি কিছু দাবি নিয়ে মিছিল করার সময় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ওই মিছিলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল এবং পেলেট বুলেট ছুড়েছে। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। রাস্তায় নামা ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের ওপরও হামলা হয়।

বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, শুক্রবার গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি (সহসভাপতি) নুরুল হক নুরের ওপর যৌথ বাহিনী নির্মম হামলা চালিয়ে তাকে রক্তাক্ত করেছে। দলটির অন্য নেতাকর্মীদের নির্মমভাবে পেটানো হয়। তাদের কার্যালয়ে গিয়েও হামলা চালানো হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একজন নেতা ও তার দলের ওপর এ ধরনের হামলায় আমরা শঙ্কিত।

বিবৃতিতে ৪৬ নাগরিক বলেন, প্রধান উপদেষ্টাও এ বিষয়ে অবগত বলে খবর বেরিয়েছে। তিনি দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা সেই আশ্বাসের বাস্তবায়ন দেখতে চাই দ্রুত। এটাও মনে করিয়ে দিতে চাই, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জনবান্ধব করে গড়ে তোলার দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।

বিবৃতি দেওয়া ৪৬ নাগরিকের মধ্যে আছেন কাজল শাহনেওয়াজ, রায়হান রাইন, সায়েমা খাতুন,  জিয়া হাসান, জি এইচ হাবীব, আ আল মামুন, নাহিদ হাসান, আশফাক নিপুন, সৌভিক রেজা,  রেজাউর রহমান লেনিন, রাখাল রাহা, আর রাজী, মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, ড.

মোশরেকা অদিতি হক, অমল আকাশ, এএইচ চঞ্চল, ড. মারুফ মল্লিক, পাভেল পার্থ, চিনু কবির, মাহবুব সুমন, মীর হুযাইফা আল মাহমুদ, ফেরদৌস আরা রুমী, সায়মা আলম, মাহাবুব রাহমান, সাঈদ বারী, এহসান মাহমুদ, আবুল কালাম আল আজাদ, গাজী তানজিয়া, মোহাম্মদ রোমেল, অস্ট্রিক আর্যু, মোহাম্মদ আরজু, ইসমাইল হোসেন, তুহিন খান, পলিয়ার ওয়াহিদ, সালাহ উদ্দিন শুভ্র, সাদিক মাহবুব ইসলাম, 
শাহাদাৎ স্বাধীন, পারভেজ আলম, নকিব মুকশি, কবি হাসান জামিল, অর্বাক আদিত্য, উৎসব মোসাদ্দেক, আরাফাত রহমান, দীপক কুমার রায়, মিসবাহ জামিল, রাহুল বিশ্বাস।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রক ষ ক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’ তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা

বাংলাদেশে পুলিশে পেশাদারি মনোভাব গড়ে না ওঠার জন্য এই বাহিনীকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহারকে দায়ী করছেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মুহাম্মদ নুরুল হুদা। তিনি বলেছেন, বিভাজিত সমাজে ‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’—এমন নানা তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।

আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ পুলিশের সংস্কার: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। যৌথভাবে এ বৈঠক আয়োজন করে প্রথম আলো ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতি। বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। একটি প্রবন্ধ তুলে ধরেন পুলিশের অতিরিক্ত আইজি (অবসরপ্রাপ্ত) ও বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি ইয়াসমিন গফুর।

নিজের পেশাজীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা বলেন, ‘আমি দুই সরকারপ্রধানের (সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গেই কাজ করেছি। অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেয়ে একটা ভদ্রতা, সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে হয়। দেখা করলে অনেক কথার পরও বা অল্প কথার পরও ‘এ কি আমাদের?’—এমন কথা শুনলে প্রথমেই বিব্রত বোধ করতে হয়।’

সরকারের পরিবর্তনে পুলিশে নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে প্রভাবিত হওয়ার উদাহরণ দিয়ে মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, ‘বাড়ি ফরিদপুর যদি হয় বা ফরিদপুরের আশপাশে হয়, কোনো অ্যাপয়েন্টমেন্ট হবে না। আবার আরেক সময় বগুড়ায় বাড়ি, ঝিনাইদহে বাড়ি, দিনাজপুরের বাড়ি, তাহলে চাকরিতে নেওয়া যাবে না বা ক্ষেত্রবিশেষে পদোন্নতি হবে না।’ এ ধরনের মনোভাব থেকে বের হতে না পারলে পুলিশ বাহিনীর সংস্কার বা পেশাদারি মনোভাব ফেরানো কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরও আচরণের পরিবর্তন না হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করে নুরুল হুদা বলেন, ‘এক অদ্ভুত ব্যাপার। এখানে দুই হাজারের মতো লোক মারা গেল। অথচ বিহেভিয়ারে চেঞ্জ নেই।’

দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঠিকভাবে কাজ করতে না পারার অন্তরায় হিসেবে নিয়োগে দুর্নীতি এবং সমাজে বিভাজনকে চিহ্নিত করেন সাবেক এই পুলিশপ্রধান। তিনি বলেন, ‘এই যে প্রচুর সংখ্যার লোক পয়সা দিয়ে চাকরিতে ঢুকেছে বা এখানে হলে...অনেক পয়সা হয়, এই অ্যাটিচিউড (আচরণ) থাকলে তো ল এনফোর্সমেন্ট (আইনশৃঙ্লা নিয়ন্ত্রণ) মুশকিল। আর ল এনফোর্সমেন্টের আরেকটা বড় জিনিস হচ্ছে আমি যে সমাজে কাজ করতে যাচ্ছি, সেই সমাজ কতখানি বিভাজিত।’

সংস্কারের পটভূমিতে স্বাধীন পুলিশ কমিশনের কর্মপদ্ধতি জানতে চেয়েছেন নুরুল হুদা। পুলিশ রিমান্ডের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

এই গোলটেবিল বৈঠকে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতির সভাপতি এম আকবর আলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান বক্তব্য দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, পুলিশের অতিরিক্ত আইজি কাজী মো. ফজলুল করীম বৈঠকে অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবতা ভিন্ন
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ, নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা
  • ‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’ তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা
  • কেউ কটুক্তি করলে কী করবেন?
  • বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ‌্যে ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান পছন্দ হয়নি স‌্যামির
  • গণভোট নিয়ে উত্তাপ নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না: প্রেস সচিব
  • মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার
  • কথার আগে গুলি চালায় ‘কাকন বাহিনী’, দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পদ্মার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল
  • ঢাকাসহ সারা দেশে এক সপ্তাহে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ১৪৯