পাকিস্তানে ক্রিকেট মাঠে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, নিহত ১ জন
Published: 7th, September 2025 GMT
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার কওসার ক্রিকেট গ্রাউন্ডে চলমান এক ক্রিকেট ম্যাচ হঠাৎ করেই রূপ নিলো রক্তক্ষয়ী ঘটনায়। মাঠে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন একজন, আহত হয়েছেন আরও অনেকে। জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের প্রতিশোধ নিতেই এ হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী সম্প্রতি ‘অপারেশন সারবাকাফ’ নামের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে বেশ কয়েকটি বড় আঘাত হানে। গত মাসে খাইবার পাখতুনখোয়ায় এমনই এক অভিযান চালানো হয়, যা স্থানীয় জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে চরমভাবে ক্ষুব্ধ করে তোলে। তারই জের ধরে শনিবার কওসার ক্রিকেট গ্রাউন্ডে হামলা চালায় তারা। পুলিশ নিশ্চিত করেছে, এটি ছিল পরিকল্পিত টার্গেট। হামলা উদ্দেশ্য আতঙ্ক ছড়ানো ও এলাকার শান্তি নষ্ট করা। তবে ঠিক কোন জঙ্গি সংগঠন এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা প্রকাশ করেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আরো পড়ুন:
পাকিস্তানে রাজনৈতিক সমাবেশে আত্মঘাতী বোমা হামলা, নিহত ১৩
অভিনয় ছাড়ার ঘোষণা দিলেন আলিজাহ শাহ
ক্রিকেটপ্রেমী দেশ পাকিস্তান এর আগেও সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে। ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কান দলের বাসে জঙ্গি হামলার পর দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ ছিল পাকিস্তান। নানা প্রচেষ্টা সত্ত্বেও দেশটির ভেতরে এখনো সক্রিয় রয়েছে একাধিক সন্ত্রাসী ঘাঁটি।
সম্প্রতি আবারও উত্তেজনা বেড়েছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক ঘিরে। কাশ্মীরের পাহালগাম সন্ত্রাসী হামলার জবাবে ভারত শুরু করেছে “অপারেশন সিন্দুর”। নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর দুই দেশের মধ্যে বাড়তে থাকা সশস্ত্র দ্বন্দ্বের কারণে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজনের সম্ভাবনা কার্যত শূন্য হয়ে গেছে।
তবে এসব সত্ত্বেও আসন্ন এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে ভারত। ভারতীয় সমর্থকদের অনেকেই পাকিস্তান বয়কটের দাবি তুললেও, বিসিসিআই সচিব দেবজিত সাইকিয়া স্পষ্ট করেছেন টুর্নামেন্টে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে ভারত।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩
ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
আরো পড়ুন:
নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের
কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের
শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।”
শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।
মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।
তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি। ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।
ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ