ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেল থেকে বিজয়ী নারীদের ‘হাউজ স্লেভ’ (গৃহ দাসী) হিসেবে মন্তব্য করেছেন এক শিক্ষার্থী।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী রাকিবুল মবিন। তিনি বর্তমানে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে (বিআইজিডি) রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট হিসেবে কর্মরত আছেন।

আরো পড়ুন:

রাবির আবাসিক হলের ৯১ ছাত্রীকে ‘যৌনকর্মী’ বললেন ছাত্রদল নেতা

‘শাড়ি পরে এলে ফুলমার্ক পাবে’, খুবির সেই শিক্ষকের আরেক কাণ্ড

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেল থেকে চার নারী প্রার্থীর জয়লাভ করার পর তাদের একটি সম্মিলিত ছবি শেয়ার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি এমন কটু কথা সম্বলিত একটি স্ট্যাটাস দেন।

এরপর থেকেই ওই পোস্টকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠতে থাকে এবং নানা সমালোচনা আসতে থাকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে।

ডাকসুর নবনির্বাচিত এজিএস মহিউদ্দিন খান এ বিষয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, “রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে এমন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য (হাউজ স্লেইভ) করে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।”

তিনি আরো লেখেন, “তবে আমরা অপরাধের রাজনীতিকরণ করব না। অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করাই ইনসাফ। যে বা যারা আমাদের বোনদের নিয়ে এমন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছে তার/তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমরা অভিযোগ জানাচ্ছি।”

ডাকসুর কার্যনির্বাহী কমিটির নবনির্বাচিত সদস্য মিফতাহুল হোসেন আল মারুফ অভিযুক্ত রাকিবুল মোবিনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিআইজিডি বরাবর অফিশিয়াল ই-মেইল করেছেন। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি এ তথ্য জানান।

স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, “ঢাবি’র প্রক্টর স্যার বরাবরও অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। ডাকসুর নব নির্বাচিত আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক মো.

জাকারিয়া লিগ্যাল বিষয়টি দেখছেন।”

ঢাবির অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা ওই বক্তব্যের প্রতিবাদে এক বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা প্রত্যাশা করি, ওই ব্যক্তি তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইবেন। অন্যথায়, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের মানহানি রোধে রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাব।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ