রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান আলোচনাকে দেশের ইতিহাসে এক ‘অভূতপূর্ব অধ্যায়’ হিসেবে অভিহিত করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, “এ আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তনের একটি মাইলফলক তৈরি হয়েছে।”

রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে এ অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।

আরো পড়ুন:

ফেব্রুয়ারিতেই মহোৎসবে জাতীয় নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা

চাকরি করার জন্য নয়, মানুষের জন্ম উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের যাত্রা শুরু হয় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি। এরপর থেকে তিন দফায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। প্রথম দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত। দ্বিতীয় দফায় শুরু হয় ২ জুন প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে এবং ৩ জুন থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত ২৩টি অধিবেশনে বিস্তৃত আলোচনা চলে। বর্তমানে তৃতীয় দফায় সংস্কার বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।”

ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, “৩০টি দল সংবিধান, বিচার বিভাগ, আইন, দুর্নীতি ও জনপ্রশাসন নিয়ে যে আন্তরিক ও সারগর্ভ আলোচনা করেছে তার মূল লক্ষ্য হলো রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সংস্কার বাস্তবায়ন করা। রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা যে সহিষ্ণুতা, শ্রদ্ধাবোধ ও ভিন্নমতের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছেন, তা দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।”

তিনি বলেন, “আমাদের সম্মিলিত প্রতিষ্ঠান একটি জাতীয় সনদ প্রণয়ন করেছে, যা রাজনীতিবিদদের ঐক্যের দলিল। যে ঐক্য ফ্যাসিবাদকে পরাস্ত করেছে, জাতীয় সনদ তারই ধারাবাহিকতা। আমরা গণতান্ত্রিক উত্তোলনের মাধ্যমে এমন এক রাষ্ট্র নির্মাণে অঙ্গীকারবদ্ধ, যেখানে জবাবদিহিমূলক শাসন থাকবে, নাগরিকের মর্যাদা অক্ষুণ্ন থাকবে এবং সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত হবে।”

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তাদের দোসররা এ প্রক্রিয়া ব্যর্থ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু যে রক্তের ওপর দিয়ে আমরা এগিয়েছি, তার কাছে আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। সেই অঙ্গীকার রক্ত দিয়ে লেখা।”

আশা প্রকাশ করে আলী রীয়াজ বলেন, “সামনের মাসগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকবে এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আলোচনার চূড়ান্ত পরিণতিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা যা অর্জন করেছি তা সামনে এগিয়ে নিতে হলে ঐক্য বজায় রাখা জরুরি। কমিশনের জন্য প্রয়োজন সবার সহযোগিতা।”

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিয়ে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।

ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে মজিবুর রহমান বলেছেন, ‘সংবিধান পরিবর্তন, সংস্কার, সংশোধন, নতুন করে লেখা বা বাতিলের চূড়ান্ত ক্ষমতা জনগণের। আমরা ঐক্যবদ্ধ মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরি করেছি, হয়তো কয়েকটি বিষয়ে কারও কারও “নোট অব ডিসেন্ট” (দ্বিমত) আছে। কিন্তু চূড়ান্ত কোনটা হবে, তা নির্ধারণের মূল ক্ষমতা জনগণের।’

কমিশনের আজকের প্রস্তাবে জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ নম্বর অনুচ্ছেদকে রেফারেন্স আকারে উল্লেখ করায় কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ও নেতা জুলাই ঘোষণাপত্রের বৈধতা নিয়ে মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যাঁরা আজ প্রশ্ন তুলছেন, কাল তাঁরা সংসদে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবেন এবং এই সনদকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না, তার নিশ্চয়তা কী?

এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানী আবদুল হক বলেন, সংবিধানে এটা নেই, ওটা নেই বলে সংবিধান সংস্কার করা যাবে না—এই ধারণা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাপরিপন্থী। রাজনৈতিক দলগুলো যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতির প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান থেকে নমনীয় না হয়, তবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পুরো প্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়বে।

আশঙ্কা প্রকাশ করে এবি পার্টির এই নেতা বলেন, এমন পরিস্থিতি জাতিকে এক গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দেবে। সুতরাং জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি; অন্যথায় গণভোট ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

আরও পড়ুনবর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ৪ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোটের সুপারিশ, একমত নয় দলগুলো
  • ‘সংবিধান আদেশ’ জারির সুপারিশ করতে পারে কমিশন: আলী রীয়াজ
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • কমিটি গঠন, প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত 
  • বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
  • বর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ
  • বিএনপি নির্বাচনমুখী কর্মসূচিতে যাবে
  • দলগুলোর সঙ্গে বুধবার আবার আলোচনায় বসছে ঐকমত্য কমিশন
  • ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন হতে হবে
  • জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ ফের এক মাস বাড়ল