বেসরকারি সংস্থা মানব সহায়ক কেন্দ্রের (এমএসকে) প্রধান কার্যালয় জয়পুরহাট সদর উপজেলার নওপাড়া (পল্লিবালা) গ্রামের একটি বাড়িতে। বাড়িটি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এনামুল হকের। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে যে ৭৩টি সংস্থার প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে এই সংস্থার নাম আছে।

স্থানীয় কয়েকজন বলেন, এলাকায় এমএসকের কার্যক্রম তেমন দেখা যায় না। ওই কার্যালয় প্রায় সব সময় তালাবদ্ধ থাকে। তবে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এনামুল হকের দাবি, সংস্থার প্রধান কার্যালয় খোলা থাকে। ঋণ আদায়ে কর্মীরা মাঠে যান।

জয়পুরহাট শহর থেকে নওপাড়া গ্রামের দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। গত রোববার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, নওপাড়া গ্রামে টিনশেড একটি ঘরে এমএসকের প্রধান কার্যালয় লেখা দুটি সাইনবোর্ড টাঙানো। ঘরের জানালা–দরজা বন্ধ। গ্রামের পাঁচ থেকে ছয় বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০২ সালে এনামুল হক এমএসকে প্রতিষ্ঠা করে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম শুরু করেন। এনামুল হকের বাড়ির একটি কক্ষে সংস্থার প্রধান কার্যালয়। সংস্থাটিতে এখন ক্ষুদ্রঋণের কার্যক্রম নেই বললেই চলে। সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এনামুল হক ঢাকায় থাকেন। তাঁর স্ত্রী ঢাকায় একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় (এনজিও) চাকরি করেন। মেহেরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি মাঝেমধ্যে প্রধান কার্যালয়ে আসেন। তিনিই সংস্থাটি দেখভাল করেন।

গ্রামের বাসিন্দা বাবুল হোসেন বলেন, মানব সহায়ক কেন্দ্রের প্রধান কার্যালয়টি এনামুল হকের বাড়ি। তিনিই সংস্থার নির্বাহী পরিচালক। প্রধান কার্যালয়ে মাঝেমধ্যে লোকজন দেখা যায়। এ ছাড়া প্রায় সময় বন্ধ থাকে।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মেহেরুল ইসলাম নিজেকে সংস্থার সভাপতি ও ব্যবস্থাপক পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আমিসহ তিনজন প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত আছি। পাশাপাশি আরও দুটি শাখা অফিস মিলিয়ে মোট ১০ কর্মী আছেন। এই প্রতিষ্ঠানে ক্ষুদ্রঋণ ও ভিজিডি কার্যক্রম আছে।’

আরও পড়ুনভোট পর্যবেক্ষণে নামসর্বস্ব সংস্থাও, অফিস বাসায়, পরিত্যক্ত ঘরে ৩ ঘণ্টা আগে

এমএসকের নির্বাহী পরিচালক এনামুল হক মুঠোফোনে বলেন, ঢাকায়ও সংস্থার কার্যালয় রয়েছে। প্রধান কার্যালয় সব সময় খোলা থাকে। মেহেরুল ইসলাম এই সংস্থার সভাপতি। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংস্থাটি পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করেছে। এবারও আবেদন করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে এনামুল হক বলেন, ‘পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পেলে আমাদের অনেক টাকাপয়সা দেওয়া হয় বলে অনেকে মনে করেন। বাস্তবে তা সঠিক নয়। পর্যবেক্ষকদের আসলে কোনো টাকাপয়সা দেওয়া হয় না।’

আরও পড়ুনদেশীয় ৭৩টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনযোগ্য জানিয়ে ইসির গণবিজ্ঞপ্তি২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সেই খাদিজাতুলকে জিএস প্রার্থী করে জকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের সমন্বিত প্যানেল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে সমন্বিত প্যানেল ঘোষণা করেছে ছাত্রদল। এতে জিএস পদে মনোয়ন দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সাইবার নিরাপত্তা মামলায় কারাগারে থাকা খাদিজাতুল কুবরাকে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, ছাত্র অধিকার পরিষদ এবং ক্যাম্পাসে পরিচিত শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত এই প্যানেলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’। প্যানেল থেকে ভিপি পদে লড়বেন ছাত্র অধিকার পরিষদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি এ কে এম রাকিব। এজিএস পদে লড়বেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য আতিকুর রহমান তানজীল।

আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্যানেল ঘোষণা করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মুনতাসির মুকুল।

ঘোষিত প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী এ কে এম রাকিব বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এ ছাড়া জিএস পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সম্প্রতি তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়কের পদ দেওয়া হয়েছে। এজিএস পদপ্রার্থী আতিকুর রহমান তানজীল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

সমন্বিত প্যানেলে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক পদে অনিক কুমার দাস, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদে নুসরাত চৌধুরী জাফরিন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মাশফিকুল ইসলাম রাইন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে আল শাহরিয়ার শাওন, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে অর্ঘ্য শ্রেষ্ঠ দাস, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক পদে অপু মুন্সী, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে তাকরিম আহমেদ ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে কামরুল হাসান নাফিজ মনোনয়ন পেয়েছেন। এ ছাড়া পরিবহন সম্পাদক পদে মাহিদ হাসান, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থীকল্যাণ সম্পাদক পদে আনন বিন রহমান এবং পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক পদে রিয়াসাল রাকিব মনোনয়ন পেয়েছেন।

এ ছাড়া সাতটি সদস্য পদের মধ্যে ছয়টিতে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। আরেকটি সদস্যপদের প্রার্থী পরবর্তী সময়ে ঘোষণা করা হবে। সদস্য পদে লড়বেন ইমরান হাসান ইমন, সাদমান সাম্য, সুলতান মাহমুদ শুভ, মনিরুজ্জামান মনির, তৌহিদুল ইসলাম তানিম ও আরিফুল ইসলাম আরিফ।

প্যানেল ঘোষণার পর ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সব অধিকার বাস্তবায়নে আমাদের এই প্যানেলে যে নাম ঘোষণা করলাম, সেই মনোনীত সদস্যরা জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে প্রচেষ্টা চালাবে। আমরা যাদের প্যানেলে রেখেছি, বিগত সময়ে তারা শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ, আন্দোলনসহ সকল কর্মকাণ্ডে মেধা-মনন দিয়ে অংশগ্রহণ করেছে। আমরা বিশ্বাস করি শিক্ষার্থীরা তাদের মূল্যায়ন করবে।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে আগামী ২২ ডিসেম্বর। কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের পাশাপাশি একই দিন একটি ছাত্রী হল সংসদের নির্বাচনও হবে। ফলাফল ঘোষণা হবে ২২-২৩ ডিসেম্বর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ