পাকিস্তানকে ইতিহাস বদলের হুমকি দিলো ভারত
Published: 2nd, October 2025 GMT
পাকিস্তানকে ইতিহাস ও ভূগোল বদলের হুমকি দিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। বৃহস্পতিবার গুজরাটে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে তিনি এই হুমকি দিয়েছেন।
রাজনাথ সিং বলেছেন, “স্যার ক্রিক এলাকায় পাকিস্তানের যে কোনো আগ্রাসনের জবাবে এমন প্রত্যাঘাত হবে, যার অভিঘাতে ইতিহাস ও ভূগোল উভয়ই বদলে যাবে।”
১৯৬৫ সালের যুদ্ধে ভারতীয় সেনার লাহোরের উপকণ্ঠে পৌঁছে যাওয়া এবং সাম্প্রতিক ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “১৯৬৫ সালে ভারতীয় সামরিক বাহিনী লাহোরে পৌঁছে যাওয়ার সক্ষমতা দেখিয়েছিল। আজ ২০২৫ সালে পাকিস্তানকে মনে রাখতে হবে, করাচি যাওয়ার একটি পথ, আর সেটা এই খাঁড়ি (স্যার ক্রিক) হয়েই।”
রাজনাথ সিং বলেন, “স্বাধীনতার ৭৮ বছর পরেও স্যার ক্রিক এলাকায় সীমান্ত বিরোধ অব্যাহত রয়েছে। ভারত বারবার আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছে, কিন্তু পাকিস্তানের উদ্দেশ্য ত্রুটিপূর্ণ ও অস্পষ্ট। স্যার ক্রিক সংলগ্ন এলাকায় পাকিস্তানের (সাম্প্রতিক) সামরিক অবকাঠামো সম্প্রসারণ তার উদ্দেশ্য প্রকাশ করে।”
প্রসঙ্গত, সিন্ধু নদের ব-দ্বীপে তৈরি হয়েছে প্রায় ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ খাঁড়িবেষ্টিত অঞ্চল স্যার ক্রিক। জম্মু ও কাশ্মীরের মতোই এই অঞ্চলটির সীমান্ত চিহ্নিতকরণ নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘ বিতর্ক রয়েছে। কচ্ছের রণের পশ্চিমে অবস্থিত নালা ও জলাভূমি এলাকা পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশ থেকে আলাদা করে রেখেছে গুজরাটকে। এই অঞ্চলে নজরদারির দায়িত্বে রয়েছে বিএসএফের বিশেষ বাহিনী ‘ক্রিক ক্রোকোডাইল’। সম্প্রতি স্যর ক্রিক অঞ্চলে নতুন করে পাক সেনার সংখ্যাবৃদ্ধি নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
এ রায় ঘোষণা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভুক্তভোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত: ওএইচসিএইচআর
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণা গত বছর গণ-অভ্যুত্থানের সময় গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভুক্তভোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি মুহূর্ত বলে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের (ওএইচসিএইচআর) দপ্তরের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি। তবে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি।
আজ সোমবার মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ মন্তব্য করেন রাভিনা শামদাসানি।
ওএইচসিএইচআরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে রাভিনা শামদাসানি বলেন, ‘২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমাদের তথ্য-অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে আমরা নির্দেশদাতা ও নেতৃত্বের অবস্থানে থাকা ব্যক্তিদেরসহ দোষীদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে আসছি। ভুক্তভোগীদের কার্যকর প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ব্যবস্থা করারও আহ্বান জানিয়েছি।’
রাভিনা শামদাসানি বলেন, ‘যেহেতু এই বিচারপ্রক্রিয়ার কার্যক্রমের বিষয়ে আমরা অবগত ছিলাম না, তাই আমরা সব জবাবদিহিমূলক কার্যক্রম, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অপরাধের অভিযোগগুলো যেন প্রশ্নাতীতভাবে যথাযথ প্রক্রিয়া ও ন্যায়বিচারের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করে, সে জন্য ধারাবাহিকভাবে বলে এসেছি। এটি বিশেষভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ যখন, এ মামলার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, অভিযুক্তের অনুপস্থিতিতে বিচার হয়েছে এবং মৃত্যুদণ্ডের শান্তি দেওয়া হয়েছে।’
মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাভিনা শামদাসানি। তিনি বলেছেন, ‘মৃত্যুদণ্ডের রায়ের জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা সব পরিস্থিতিতে এর বিরোধিতা করি।’
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক আশা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশ সত্য প্রকাশ, ক্ষতিপূরণ ও ন্যায়বিচারের একটি সমন্বিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্য ও ক্ষত কাটিয়ে ওঠার দিকে এগিয়ে যাবে। এ প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তা খাতের অর্থবহ ও রূপান্তরমূলক সংস্কার অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত। আর এ সংস্কার হবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, যেন আর কখনো মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের ঘটনা না ঘটে। এসব প্রচেষ্টাগুলোয় বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে সহায়তা দিতে প্রস্তত রয়েছে ওএইচসিএইচআর।