চীন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিদেশি পেশাজীবীদের কাজের সুযোগ করে দিতে গত আগস্টে যখন নতুন একটি ভিসানীতি চালুর ঘোষণা দিয়েছিল, তখন তা তেমন কারও নজরে আসেনি।

‘কে ভিসা’ নামে পরিচিত এই ভিসা গত বুধবার থেকে কার্যকর হয়েছে। গত সপ্তাহে ভারতীয় একটি গণমাধ্যম এই ভিসাকে ‘চীনের এইচ-১বি’ ভিসা বলে অভিহিত করার পর চীনের এই ভিসার বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রে আসে।

যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি হলো দক্ষ কর্মীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি ভিসা ক্যাটাগরি। গত মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ভিসায় আসা কর্মীদের ক্ষেত্রে এক লাখ ডলার ফি যোগ করার ঘোষণা একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন। এইচ-১বি ভিসায় ভারতীয়রা সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রে যান। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এই ভিসা পাওয়া ব্যক্তিদের ৭০ শতাংশের বেশি ভারতীয় নাগরিক।

ভারতীয় গণমাধ্যমের এই প্রতিবেদন চীনে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং জনসাধারণের মধ্যে উদ্বেগ, এমনকি আতঙ্ক সৃষ্টি করে। তাঁদের আশঙ্কা, বিদেশিদের দেওয়া সুবিধাগুলো চীনের ধীরগতির চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা আরও বাড়িয়ে তুলবে। চীন ঐতিহাসিকভাবে কখনো বিদেশি পেশাজীবীদের জন্য অভিবাসনের প্রধান কেন্দ্র ছিল না।

ভাষা আরেকটি বড় বাধা। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেসব গবেষক ও শিক্ষাবিদ যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনে এসেছেন, তাঁদের অনেকেই জাতিগতভাবে চীনা ও মান্দারিন ভাষায় পারদর্শী।

তবে এখনো এটা স্পষ্ট নয় যে এই ভিসার মাধ্যমে বিদেশি দক্ষকর্মীরা চীনে কাজ করার অনুমতি পাবেন কি না। নাকি এটি শুধু তাদের সে দেশে সহজে প্রবেশের সুযোগ দেবে। তারপরও চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের হাজার হাজার ব্যবহারকারী এই কর্মসূচির সমালোচনা করতে ছাড়েননি।

একজন মন্তব্যকারী লিখেছেন, ‘আমাদের নিজেদেরই এত স্নাতক ডিগ্রিধারী আছে, স্নাতকোত্তর ও ডক্টরেট ডিগ্রিধারীর তো কথাই নেই। আমাদের দেশেই প্রতিভার উদ্বৃত্ত রয়েছে। আর এখন আপনারা বিদেশি কলেজ স্নাতকদের নিয়ে আসছেন?’

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পতাকা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র এই ভ স

এছাড়াও পড়ুন:

রেস্তোরাঁর মেঝেতে ঘুরে বেড়াচ্ছে মাছ

থাইল্যান্ডের মধ্যাঞ্চলের একটি সাধারণ মানের রেস্তোরাঁ হঠাৎ করেই দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে। ওই রেস্তোরাঁয় খাবার খেতে রীতিমতো লাইন পড়ে যায়। অতিথিরা খেতে এসে একের পর এক ছবি তোলেন, ভিডিও করেন। ওই ছবি-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করার পর সেগুলো ভাইরাল হয়ে যায়। রেস্তোরাঁর জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি পায়।

থাই ওই রেস্তোরাঁর হঠাৎ জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির কারণ মাছ। তবে সেটা কিন্তু তাদের মেন্যুতে থাকা কোনো মাছের রেসিপি নয়, বরং জীবন্ত মাছ। যেসব মাছ রেস্তোরাঁর মেঝেতে সাঁতরে বেড়ায়, মাঝেমধ্যে অতিথিদের পায়ে সুড়সুড়ি দিয়ে যায়।

রেস্তোরাঁটি রাজধানী ব্যাংকক থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে থাইল্যান্ডের নাখন পাথম প্রদেশে অবস্থিত, নাম ‘পা জিত’। রেস্তোরাঁর পাশের একটি নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে আশপাশের এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যার পানি ওই রেস্তোরাঁর ভেতরেও ঢুকে পড়েছে। আর বন্যার পানির সঙ্গে ভেসে আসছে নানা প্রজাতির, নানা রঙের মাছ।

নদীর পাড়ের ওই রেস্তোরাঁর বয়স ৩০ বছরের বেশি, মালিকের নাম পর্নকমল প্রাংপ্রেমপ্রি চার বছর আগে প্রথমবার যখন রেস্তোরাঁটি বন্যার পানিতে ভেসে গিয়েছিল, তখন তাঁর খুবই মন খারাপ হয়েছিল।

পর্নকমল বলেন, ‘আমার মনে হয়েছিল, নিশ্চয়ই আর কোনো অতিথি আমার এখানে খেতে আসবেন না। কিন্তু একজন অতিথি এখানে খেতে এসে মেঝেতে জীবন্ত মাছ ঘোরাঘুরি করার ছবি তুলে তা অনলাইনে পোস্ট করেন। তারপরই অনেক মানুষ এখানে খেতে আসতে শুরু করেন।’

রেস্তোরাঁয় আসা অতিথিরা মাছের ঝাঁকের সঙ্গে ছবি তোলেন, কেউ কেউ মাছকে খাবার দেন।

বন্যার সময় উল্টো রেস্তোরাঁয় বেচাবিক্রি অনেক বেড়ে যায় বলে জানান পর্নকমল প্রাংপ্রেমপ্রি তিনি বলেন, অন্য সময়ের তুলনায় বন্যার সময় তাঁর রেস্তোরাঁয় দৈনিক বিক্রি দ্বিগুণের বেশি বেড়ে যায়।

স্বামী-সন্তান নিয়ে রেস্তোরাঁয় খেতে এসেছেন ২৯ বছর বয়সী চমফুনুথ খান্তানিতি। তিনি পরিবার নিয়ে নাখন পাথম প্রদেশেই বাস করেন। এই নারী বলেন, পায়ের কাছে জীবন্ত মাছ ঘুরে বেড়ানো এই রেস্তোরাঁর খবর শুনে তিনি নিজেকে ধরে রাখতে পারছিলেন না।

খান্তানিতি আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, এটা দারুণ। কারণ, আমরা এখানে বাচ্চাদের আনতে পারি। বাচ্চারা ছোটাছুটি না করে শান্তভাবে মাছগুলো দেখে। আমার মনে হয়, থাইল্যান্ডে একমাত্র এখানেই আপনি এভাবে মাছ ঘোরাফেরা করতে দেখতে পাবেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ