ফেসবুকে ছবি পোস্ট নিয়ে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, আহত ৪০
Published: 3rd, October 2025 GMT
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং বিএনপির নেতা রুমিন ফারহানার ছবি ফেসবুকে পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের ৪০ জন আহত হয়েছে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের পালিশারা বাজারে সংঘর্ষ হয়।
আরো পড়ুন:
পাবনায় ঈদগাহের নাম নিয়ে দু’ গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ২০
হবিগঞ্জে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, ৫০ জন আহত
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তারেক রহমান ও রুমিন ফারহানাকে ব্যঙ্গ করে পোস্ট দেওয়া একটি ছবি শেয়ার দেন গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা ইলিয়াস হোসেন। ওই পোস্টকে অবমাননাকর উল্লেখ করে বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষুদ্ধ হন। পরে ইলিয়াস হোসেন দুঃখ প্রকাশ করে পোস্টটি মুছে ফেলেন। এ নিয়ে শুক্রবার (৩ অক্টোবর) স্থানীয়ভাবে বৈঠকের কথা থাকলেও এর আগে উভয় পক্ষ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করায় পালিশারা বাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত বিএনপির পাঁচজন নেতাকর্মীকে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে উপজেলা যুবদলের সদস্য নেছার আহমেদ চৌধুরী ও ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রয়েছেন। জামায়াতের আহত ৮ নেতাকর্মীকে চাঁদপুর সদর হাসপাতাল ও স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত যুবদল নেতা নেছার আহমেদ চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, ‘‘আমাদের নেতা তারেক রহমানের অবমাননাকর বিষয়টি আমরা মেনে নিতে পারি না। আমরা ঘটনাটি মীমাংসার জন্য সেখানে গিয়েছিলাম। অতর্কিতভাবে ধারালো অস্ত্র নিয়ে জামায়াতের কর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।’’
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কুদ্দুস বলেন, ‘‘আমাদের অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। উপজেলা নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে জামায়াতের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’
ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমির হাফেজ আব্দুল মোতালেব বলেন, ‘‘এটি ভুল বোঝাবুঝি থেকে ঘটেছে। তবে বিএনপি কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।’’
জামায়াতের উপজেলা সেক্রেটারি জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘‘সংঘর্ষে আমাদের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে ৮ জনের অবস্থা গুরুতর। তারা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে।’’
হাজীগঞ্জের উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক আক্তার হোসেন দুলাল বলেন, ‘‘ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা আইনি পদক্ষেপ নেব।’’
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, ‘‘জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষে ৪/৫ জন আহত হওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। এখনো কেউ আটক কিংবা লিখিত অভিযোগ দেয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে।’’
ঢাকা/জয়/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ আহত হয় ছ ন ত কর ম ব এনপ র জন আহত আম দ র ফ সব ক স ঘর ষ য বদল উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
এ রায় ঘোষণা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভুক্তভোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত: ওএইচসিএইচআর
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণা গত বছর গণ-অভ্যুত্থানের সময় গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভুক্তভোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি মুহূর্ত বলে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের (ওএইচসিএইচআর) দপ্তরের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি। তবে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি।
আজ সোমবার মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ মন্তব্য করেন রাভিনা শামদাসানি।
ওএইচসিএইচআরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে রাভিনা শামদাসানি বলেন, ‘২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমাদের তথ্য-অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে আমরা নির্দেশদাতা ও নেতৃত্বের অবস্থানে থাকা ব্যক্তিদেরসহ দোষীদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে আসছি। ভুক্তভোগীদের কার্যকর প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ব্যবস্থা করারও আহ্বান জানিয়েছি।’
রাভিনা শামদাসানি বলেন, ‘যেহেতু এই বিচারপ্রক্রিয়ার কার্যক্রমের বিষয়ে আমরা অবগত ছিলাম না, তাই আমরা সব জবাবদিহিমূলক কার্যক্রম, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অপরাধের অভিযোগগুলো যেন প্রশ্নাতীতভাবে যথাযথ প্রক্রিয়া ও ন্যায়বিচারের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করে, সে জন্য ধারাবাহিকভাবে বলে এসেছি। এটি বিশেষভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ যখন, এ মামলার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, অভিযুক্তের অনুপস্থিতিতে বিচার হয়েছে এবং মৃত্যুদণ্ডের শান্তি দেওয়া হয়েছে।’
মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাভিনা শামদাসানি। তিনি বলেছেন, ‘মৃত্যুদণ্ডের রায়ের জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা সব পরিস্থিতিতে এর বিরোধিতা করি।’
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক আশা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশ সত্য প্রকাশ, ক্ষতিপূরণ ও ন্যায়বিচারের একটি সমন্বিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্য ও ক্ষত কাটিয়ে ওঠার দিকে এগিয়ে যাবে। এ প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তা খাতের অর্থবহ ও রূপান্তরমূলক সংস্কার অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত। আর এ সংস্কার হবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, যেন আর কখনো মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের ঘটনা না ঘটে। এসব প্রচেষ্টাগুলোয় বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে সহায়তা দিতে প্রস্তত রয়েছে ওএইচসিএইচআর।