চাকরির পরীক্ষায় আধুনিক ‘স্পাই ডিভাইস’ ব্যবহার, পাঁচজনকে সাজা
Published: 18th, October 2025 GMT
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) একটি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রযুক্তিনির্ভর জালিয়াতিসহ প্রতারণার অভিযোগে ১৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন আধুনিক ‘স্পাই কমিউনিকেশন ডিভাইস’ ব্যবহার করছিলেন। আজ শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ডিএনসি।
ডিএনসি সূত্র জানায়, দেশের যুবসমাজকে মাদকের করাল গ্রাস থেকে রক্ষা এবং মাদকবিরোধী কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করতে সিপাহি ও ওয়্যারলেস অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় গত ৬ আগস্ট। সিপাহি পদে ১০৫টি আর ওয়্যারলেস অপারেটর পদে ১২টি শূন্যপদে নিয়োগের জন্য যথাক্রমে ২৬ হাজার ও ১১ হাজার আবেদন জমা পড়ে।
পরবর্তী সময়ে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক ধাপসমূহে উত্তীর্ণ হয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন সিপাহি পদে ১ হাজার ৮২ জন এবং ওয়্যারলেস অপারেটর পদে ১২৪ জন। আজ অনুষ্ঠিত এই লিখিত পরীক্ষায় ১৮ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন আধুনিক ‘স্পাই ডিভাইস’ ব্যবহার করছিলেন আর ১৩ জন প্রক্সি পরীক্ষার্থী হিসেবে (অন্যের হয়ে) অংশ নিয়েছিলেন।
ডিএনসি জানিয়েছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আগেই একটি সংঘবদ্ধ চক্র শনাক্ত করা হয় এবং পরীক্ষার দিন কেন্দ্রে নজরদারি জোরদার করা হয়। অভিযানে যে ডিভাইসগুলো উদ্ধার করা হয়েছে, তা ছিল অত্যাধুনিক ‘স্পাই কমিউনিকেশন’ সরঞ্জাম। এতে ছিল কানে স্থাপনযোগ্য ইয়ারপিস মাইক্রোফোন, যা তিন থেকে চার ঘণ্টা সক্রিয় থাকতে পারে। এ ছাড়া ছিল একটি জিএসএম কার্ডযুক্ত ডিভাইস, যা ব্লুটুথের মাধ্যমে ইয়ারপিসের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে দুই দিকের কথোপকথন সম্ভব করে তোলে।
পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ডিএনসির ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গবিতে ধর্ষণ-র্যাগিং: স্থায়ী বহিষ্কার ৫, শাস্তির আওতায় ১৭ শিক্ষার্থী
ঢাকার সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতের অভিযোগে পাঁচজনকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। র্যাগিংয়ের ঘটনায় আরো পাঁচজনকে এক সেমিস্টার (ছয় মাস) করে বহিষ্কার ও ১২ শিক্ষার্থীকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানার শাস্তি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ওহিদুল্লাহ।
আরো পড়ুন:
ঢাকা ৭-এ বিএনপির প্রার্থী হামিদ জবি ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন
জলবায়ু পরিবর্তনে বিষাক্ত ধাতু মুক্ত হচ্ছে, ভবিষ্যতের জন্য নতুন হুমকি
ধর্ষণের ঘটনায় স্থায়ী বহিষ্কৃতরা হলেন- আইন বিভাগের ৩২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দেলোয়ার ভূঁইয়া, তাজুল ইসলাম তাজ, শ্রাবণ সাহা ও ২৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অন্তু দেওয়ান।
র্যাগিংয়ের ঘটনায় স্থায়ী বহিষ্কৃতরা হলেন- আইন বিভাগের ২৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অন্তু দেওয়ান ও তরিকুল ইসলাম।
আরো পড়ুন: গবিতে ধর্ষণে অভিযুক্তদের পক্ষে থানায় যাওয়ায় শিক্ষক অবরুদ্ধ
এক সেমিস্টার (ছয় মাস) করে বহিষ্কৃত পাঁচজন হলেন- আইন বিভাগের ৩২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম, নাইম, মেহেদী হাসান, ৩২তম ব্যাচের সাজ্জাদ বাবর ও ২৮তম ব্যাচের মেহেদী হাসান।
র্যাগিংয়ের সময় উপস্থিত থাকায় ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে ১২ জনকে। তারা হলেন- আসিফ রহমান লাবিব, লতিফুল হক লোবান, সামিউল ইসলাম, আলিমুল ইসলাম নাহিদ, মোহাম্মদ ওয়ালিদ প্রধান, আসাদুর, শ্রাবণ সাহা, দেলোয়ার ভূঁইয়া, ইমামুল মোরসালিন, কাজল, খন্দকার জিহাদ হাসান ও আইয়াজ হক।
গত ২৪ নভেম্বর মধ্যরাতে আশুলিয়ার নলাম এলাকার একটি মেস বাসায় ডেকে নিয়ে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শের আলীকে (৩৩ ব্যাচ) র্যাগিং এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এর জেরে ২৬ নভেম্বর আটজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছিল।
আরো পড়ুন: র্যাগিংয়ের অভিযোগে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার
গত ২ ডিসেম্বর রাতে আশুলিয়া থানায় গণ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন এক নারী শিক্ষার্থী। ওই ঘটনায় জড়িত গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চার শিক্ষার্থীকে রাতেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। এসব ঘটনার জেরে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে। ধর্ষণের বিষয়টি সামনে আসার জেরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। সকালেই ধর্ষণে জড়িত চারজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এরপরও বিক্ষোভ চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। ধর্ষণে অভিযুক্তদের পক্ষে ভূমিকা রাখায় আইন বিভাগের শিক্ষক লিমন হোসেনকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ও আইন বিভাগের সভাপতি রফিকুল আলম, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক নিলুফার সুলতানা ও লিমন হোসেনসহ তিন শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করেন তারা।
আরো পড়ুন: বাসা থেকে ডেকে নিয়ে রাতভর গবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ
একপর্যায়ে দুপুর ২টার দিকে এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী, গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (গকসু) নেতৃবৃন্দ, গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (গবিসাস) নেতৃবৃন্দসহ জরুরি সভা করা হয়। দীর্ঘ বৈঠক শেষে রাত ৮টার দিকে অভিযুক্তদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি ঘোষণা করা হয়।
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ওহিদুল্লাহ বলেন, “অভিযোগ ও তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে জড়িতদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে।”
ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ