বেনেট-রাজা-ইভান্স ঝলকে শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দিল জিম্বাবুয়ে
Published: 21st, November 2025 GMT
রাওয়ালপিন্ডিতে ত্রিদেশীয় টি–টোয়েন্টি সিরিজে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়াল জিম্বাবুয়ে। টার্গেট ছিল ১৬৩। কিন্তু শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে পড়ল শুরুর পরই। নিয়ন্ত্রিত ও আঁটসাঁট বোলিংয়ে মাত্র ৯৫ রানে অলআউট করে ৬৭ রানের দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে জিম্বাবুয়ে। পাকিস্তানের কাছে হারের পর এটি ছিল জিম্বাবুয়ের জন্য ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাচ।
ছয় বোলার ব্যবহার করে ছয়জনকেই দিয়ে উইকেট তুলে নিয়েছে জিম্বাবুয়ে। রিচার্ড নাগারাভা ছিলেন দুর্দান্ত। ২ উইকেট নেন মাত্র ১৫ রানে। কিন্তু সবাইকে ছাড়িয়ে গেলেন ব্র্যাড ইভান্স। তিনি ৩ উইকেট নেন মাত্র ৯ রান দিয়ে।
আরো পড়ুন:
৭ উইকেট হারিয়ে ২১১ রান তুলে মধ্যাহ্ন বিরতিতে আয়ারল্যান্ড
‘চতুর্থ শ্রেণি থেকেই খেলোয়াড় বাছাই শুরু করেছে বিসিবি’
শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শুধু ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক দাসুন শানাকা কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছিলেন ২৫ বলে ৩৪ রান করে। ভানুকা রাজাপক্ষে করেন কষ্টার্জিত ১১ রান। বাকিদের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। জানুয়ারির পর এটাই তার প্রথম টি–টোয়েন্টি ম্যাচ।
এর আগে ব্যাট হাতে জিম্বাবুয়ের শুরুটা ছিল দারুণ। ব্রায়ান বেনেট (৪৯) এবং সিকান্দার রাজা (৪৭) ইনিংসের ভিতটা গড়ে দেন। শেষভাগ কিছুটা টলমল হলেও রানটা যে যথেষ্টেরও বেশি হবে, তা পরে প্রমাণিত। শ্রীলঙ্কার হয়ে সেরা বোলিং করেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙা। তিনি ৩২ রানে ৩ উইকেট নেন। অভিষেক ম্যাচে ইশান মালিঙ্গাও নজর কেড়েছেন ২৭ রানে ২ উইকেট নিয়ে।
পাওয়ার প্লেতে আবারও বেনেটই তুলে দিলেন ঝড়ো সূচনা। মারুমানির সঙ্গে ৩ ওভারে জুটিতে আসে ২৬ রান। তবে তীক্ষানা ও মালিঙ্গা ফিরে এসে কিছু সময়ের জন্য ম্যাচে ভারসাম্য ফেরান। তাতে ৬ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের রান দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৪৬।
এরপরই নিজেকে উপরে নামালেন রাজা। পাকিস্তানের বিপক্ষে আগের ম্যাচের বিপর্যয়ের পর ইনিংস সামলানোর দায়িত্ব যেন নিজেই নিলেন। বেনেটকে সঙ্গে নিয়ে ৪৪ বলে ৬১ রানের জুটি গড়ে ইনিংসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ৪৯ করে আউট হন বেনেট। কিন্তু তখন জিম্বাবুয়ে শক্ত ভিত গড়ে ফেলেছে ১৪তম ওভারের মধ্যেই দলীয় শতরান ছুঁয়ে।
রাজা ৩২ বলে ৪৭ করে দারুণ এক রানিং ক্যাচে শানাকার হাতে ধরা পড়েন। তার ইনিংসে ৩ চার ও ২ ছক্কায় সাজানো ছিল। তার ব্যাটিং দেখে এই উইকেটে ১৮০ রানও অসম্ভব লাগছিল না।
শেষদিকে দুই সেট ব্যাটার আউট হয়ে যাওয়ায় গতি কমে যায়। শেষ তিন ওভারে মাত্র ২২ রান এলেও তারা ১৬০ পেরিয়ে যায়। অভিষিক্ত মালিঙ্গা ডাবল–স্ট্রাইক করেন। চামিরা শেষ দিকেও কৃপণ বোলিং করেন।
১৬৩ রান তাড়া করতে নেমে পাওয়ারপ্লে শেষেই শ্রীলঙ্কা টালমাটাল। ২ উইকেট হারিয়ে তোলে মাত্র ২৫ রান। যা ২০২৫ সালে কোনও টি–টোয়েন্টিতে তাদের সর্বনিম্ন পাওয়ার প্লে স্কোর। জিম্বাবুয়ের ধারাবাহিক লাইন–লেংথ ও পরিকল্পিত বোলিং তাদের পুরো টপ অর্ডারকে জট পাকিয়ে ফেলে।
পাথুম নিসাঙ্কা প্রথম ওভারেই মিডউইকেটে ক্যাচ। এরপরই কুশল পেরেরা স্কাই করে আউট। টপ অর্ডার ছিন্নভিন্ন। এরপর রাজাপক্ষ–কুশল মেন্ডিসের ২৬ বলে ১৯ রানের জুটি পরিস্থিতি আরও খারাপ করে। নাগারাভা, মাপোসা আর ইভান্স চাপ বাড়াতে বাড়াতে বাউন্ডারি–বল প্রায় থামিয়েই দেন। বাধ্য হয়ে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে ঝুঁকি নিতে থাকেন দুই ব্যাটার।
সেই ঝুঁকিরই পরিণতি রাজাপক্ষ সরাসরি কাভারে বল পাঠিয়ে অকারণে রান নেওয়ার চেষ্টা করলেন; মেন্ডিস স্থির দাঁড়িয়ে। ফলে রানআউটের দুর্ভাগ্য বরণ করতে হলো তাকে। পরের ওভারেই রাজাপক্ষ নিজেও আউট- ক্লিন বোল্ড। দশ ওভারেই চার উইকেট নেই লঙ্কানদের। ১১তম ওভার মাঝামাঝি পাঁচ উইকেট নেই। রাজা কামিন্দু মেন্ডিসকে বোল্ড করে বিপর্যয় গভীর করেন।
শানাকা চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু রায়ান বার্লের বলে পুরোনো ছন্দে থাকা সেই লড়াইও শেষ। এরপর বাকি ব্যাটারদের শুধু টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা। শেষ পর্যন্ত ইভান্সই শেষ বল মেরে ইনিংস গুটিয়ে দেন। জিম্বাবুয়ে পায় দাপুটে জয়, আর শ্রীলঙ্কা ডুবে যায় ব্যাটিং দুঃস্বপ্নে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২ উইক ট উইক ট ন
এছাড়াও পড়ুন:
হোয়াটসঅ্যাপে রেজল্যুশন ঠিক রেখে ছবি বা ভিডিও পাঠানোর ৪ কৌশল
হোয়াটসঅ্যাপে ফোন গ্যালারি থেকে ছবি বা ভিডিও পাঠালে অ্যাপটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফাইল কমপ্রেস করে। এর ফলে আকারে বড় ছবি বা ভিডিওর মান কমে যায়। স্মার্টফোনে বর্তমানে আলট্রা হাই ডেফিনেশন মানের কনটেন্ট তৈরি হচ্ছে এবং ব্যক্তিগত যোগাযোগ থেকে শুরু করে অফিস বা ব্যবসা—সব ক্ষেত্রেই হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহার বাড়ছে। ফলে বড় ফাইল আসল মান বজায় রেখে পাঠানোর প্রয়োজনীয়তা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তবে চাইলেই হোয়াটসঅ্যাপে রেজল্যুশন ঠিক রেখে ছবি বা ভিডিও পাঠানো সম্ভব। কৌশলগুলো দেখে নেওয়া যাক।
১. ডকুমেন্ট আকারে ফাইল পাঠানো
হোয়াটসঅ্যাপ ছবি বা ভিডিও অপশন দিয়ে পাঠানো ফাইল কমপ্রেস করে। তবে ডকুমেন্ট অপশন থেকে পাঠানো হলে ফাইলের মূল রেজল্যুশন অক্ষুণ্ন থাকে। এ জন্য প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপ খুলে নির্ধারিত চ্যাটে গিয়ে ক্লিপ আইকনে প্রেস করতে হবে। এরপর ডকুমেন্ট অপশন নির্বাচন করে ফোনের সংরক্ষিত ফাইলটি পাঠাতে হবে। দুই গিগাবাইট পর্যন্ত ছবি, ভিডিও, প্রেজেন্টেশন বা অন্যান্য বড় ফাইল পাঠাতে এই কৌশল সবচেয়ে কার্যকর।
২. গুগল ড্রাইভে আপলোড করে লিংক পাঠানো
ফাইলের আকার যদি দুই গিগাবাইটের চেয়ে বড় হয়, তাহলে ক্লাউড স্টোরেজ, বিশেষ করে গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করা যেতে পারে। এ জন্য প্রথমে গুগল ড্রাইভে ফাইল আপলোড করতে হবে। আপলোড সম্পন্ন হলে ফাইলের মেনুতে গিয়ে শেয়ার বা অ্যাকসেস কন্ট্রোল অপশন থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী ‘এনি ওয়ান ক্যান ভিউ দ্য লিংক’ অপশনটি চালু করতে হবে। এরপর শেয়ারেবল লিংক কপি করে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাতে হবে।
৩. ফাইল ট্রান্সফার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার
উই ট্রান্সফারের মতো অনলাইন ফাইল ট্রান্সফার প্ল্যাটফর্ম বড় ফাইল পাঠানোর ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সুবিধাজনক। এ ধরনের প্ল্যাটফর্মে কোনো অ্যাকাউন্টে সাইন ইন করার প্রয়োজন হয় না। ব্যবহারকারীদের শুধু নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট বা অ্যাপ খুলে নির্দিষ্ট ফাইল আপলোড করতে হয়। আপলোড শেষ হলে একটি ডাউনলোড লিংক পাওয়া যায়। সেই লিংক হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিলে গ্রহণকারী মূল রেজল্যুশনে ফাইলটি ডাউনলোড করতে পারেন।
৪. জিপ বা রার ফাইল তৈরি
একাধিক ফাইল একসঙ্গে পাঠাতে চাইলে জিপ বা রার ফরম্যাট অত্যন্ত কার্যকর। এ জন্য প্রথমে একটি জিপ বা রার অ্যাপ ইনস্টল করে প্রয়োজনীয় ফাইলগুলো একত্র করতে হবে। এরপর জিপ ফরম্যাটে সংরক্ষণ করে হোয়াটসঅ্যাপের ডকুমেন্ট অপশন থেকে ফাইলটি পাঠাতে হবে। যেহেতু হোয়াটসঅ্যাপ জিপ ফাইলকে ডকুমেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করে, তাই অ্যাপটি কোনো ধরনের কমপ্রেশন করে না। ফলে ছবির অ্যালবাম, বড় আকারের ফোল্ডার বা অনেক পেজের নথি পাঠাতে এটি দারুণ সুবিধাজনক উপায়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া