কেন দুপুরে খাওয়ার পর শরীর ঢলে পড়ে

রক্তে শর্করার ওঠানামা: ভাত, রুটি, চিনি, পাউরুটি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার রক্তে দ্রুত গ্লুকোজ বাড়ায়। শরীর তখন ইনসুলিন ছড়িয়ে সেটা কমানোর চেষ্টা করে। তার ফলে তখন হঠাৎ গ্লুকোজ কমে গেলে ক্লান্তি, মাথা ঝিমঝিম করা, মনোযোগে ঘাটতি—এসব দেখা দেয়।

খাবার হজমের জের: ভরপেট খাওয়ার পর খাবার তো হজম হতে হবে। আর তাই দুপুরে খাওয়ার পর শরীরের রক্ত হজমপ্রক্রিয়ায় বেশি কাজে লাগে। ফলে মস্তিষ্কে রক্তের সরবরাহ কিছুটা কমে যায়, আর তখনই চেপে বসে ঘুমঘুম ভাব।

শরীরের জৈব ঘড়ির প্রভাব: বেলা ১টা থেকে ৩টার মধ্যে শরীরের প্রাকৃতিক ছন্দেই একটু ঘুমঘুম ভাব আসে। এটাকে বলা হয় শরীরের দৈনিক ছন্দ বা সার্কাডিয়ান ডিপ।

আমাদের খাবারের ধরনই এর মূল কারণ। খাবার রক্তে গ্লুকোজ বা শর্করার মাত্রা বাড়ায়, আবার দ্রুত কমায়ও; এই ওঠানামাই তৈরি করে ক্লান্তি ও ঘুমঘুম ভাব।জেসি ইনশসপে, ফরাসি বায়োকেমিস্ট ও ‘গ্লুকোজ রেভল্যুশন’ বইয়ের লেখকআরও পড়ুন‘আগে ওনার খোঁজ পেলে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতাম না’২২ অক্টোবর ২০২৫কীভাবে এই ক্লান্তি কমাবেন

১.

খাবার শুরু করুন সবজি বা প্রোটিন দিয়ে
ভাত বা রুটি খাওয়ার আগে সালাদ, ডাল বা মুরগির মাংস খান। এতে গ্লুকোজ ধীরে বাড়ে, শক্তি অটুট থাকে দীর্ঘ সময়।

২. খাবারের পর একটু হাঁটুন
মাত্র দুই-পাঁচ মিনিট হাঁটলেই শরীর গ্লুকোজ ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারে। এতে রক্তে শর্করার ভারসাম্য থাকে, ঘুমঘুম ভাবও কমে।

৩. পানীয় বেছে নিন সচেতনভাবে
চিনি দেওয়া কোমল পানীয় বা জুস রক্তে গ্লুকোজ হঠাৎ বাড়িয়ে দেয়। এর বদলে পানি, লেবুপানি বা চিনি ছাড়া চা খান।

৪. মিলিয়ে খান
ফল খেতে চাইলে সঙ্গে খান প্রোটিন বা চর্বি, যেমন আপেলের সঙ্গে বাদাম বা দইয়ের সঙ্গে বেরি। এতে গ্লুকোজ ওঠানামা কম হয়।

৫. পরিমাণে নজর দিন
অল্প অল্প করে খেলে হজমপ্রক্রিয়ায় চাপ কম পড়ে, শরীরও থাকে হালকা।

আরও পড়ুনজানেন কি ডিমেনশিয়া শুরু হয় পা থেকে, মাথা থেকে নয়৬ ঘণ্টা আগেসহজ বিজ্ঞানের ভাষায়

খাবারের পর রক্তে গ্লুকোজ বাড়লে শরীর ইনসুলিন নিঃসরণ করে। ইনসুলিন অতিরিক্ত সক্রিয় হলে রক্তে গ্লুকোজ দ্রুত কমে যায়, আর তখনই ক্লান্তি, ঘুমঘুম ভাব ও মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা জাগে।

গ্লুকোজের এই ওঠানামা যত সহজে হয়, ঠিক ততটাই সহজে নিয়ন্ত্রণও করা যায়, যদি আপনি জানেন কখন কীভাবে কী খেতে হবে।

দুপুরে খাওয়ার পর ক্লান্তি অলসতার কারণে হয় না, এটি বরং শরীরের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র রক ত

এছাড়াও পড়ুন:

সোনার দাম আর কত দূর পর্যন্ত যাবে

‘সোনার দাম কত উঁচুতে উঠতে পারে?’—এ প্রশ্ন এখন অনেকেরই। কারণ, সোনার দাম ক্রমেই বাড়ছে, দামে নিত্যনতুন রেকর্ড করছে। সোনা এখন ৪ হাজার ২০০ ডলারের সীমা ভেঙেছে, এটাকে বলা হচ্ছে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ‘গোল্ড রাশ’।

সব মিলিয়ে চলতি ২০২৫ সাল সোনার জন্য অবিশ্বাস্য একটি বছর। যদি এখনই বছর শেষ হয়ে যেত, তাহলে এটা ১৯৭৯ সালের পর সেরা বছর হতো। কেননা এ বছর সোনার দাম বেড়েছে প্রায় ৫৭ শতাংশের বেশি। হয়তো দাম বাড়া এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। অবশ্য শুধু সোনাই নয়, মূল্যবান অন্য ধাতুর দামও বেড়েছে। যেমন প্লাটিনামের দাম বেড়েছে ৮০ শতাংশ আর রুপার ৭৫ শতাংশ। অর্থাৎ সবগুলোই একসঙ্গে ঊর্ধ্বমুখী।

অনিশ্চয়তার প্রতিফলন

সোনা প্রায়ই কাজ করে একধরনের ‘বিশ্ব উদ্বেগের ব্যারোমিটার’ হিসেবে। বিশ্বে যখন অর্থনৈতিক বা ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন বাড়ে, তখন মানুষ সোনার দিকে ঝোঁকে। তাই সোনার দামের ওঠানামা দেখে বোঝা যায়, এই মুহূর্তে পৃথিবীতে কী ধরনের অনিশ্চয়তা চলছে।

যখনই অর্থনীতি দুর্বল বা অস্থির মনে হয়, মানুষ তখনই সোনা কেনে। কিন্তু এবারকার উত্থানটা আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। গত সপ্তাহে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমবে বলে মনে হচ্ছিল, ঠিক তখনই আবার দাম বেড়ে গেল। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শুল্ক–যুদ্ধ নতুন করে উত্তপ্ত হয়েছে। আর ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল ইঙ্গিত দিয়েছেন, বছরের শেষে আরও একটি সুদের হার কমানো হতে পারে।

সামনে সোনার দাম নির্ভর করছে ফেডের সিদ্ধান্তের ওপর

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সোনার দাম আর কত দূর পর্যন্ত যাবে