তপসিল ঘোষণা, গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদি ও নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ
Published: 13th, December 2025 GMT
সরকারের নীতিনির্ধারকদের কেউ কেউ জোর দিয়ে বলেছিলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। সেটা যে হয়নি, শুক্রবার ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাই তার প্রমাণ। তাঁর অবস্থা শঙ্কাজনক। রাজনৈতিকভাবে তিনি যেই মতেরই অনুসারী হোন না কেন, এভাবে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হবেন, এটা ভাবা যায় না।
বৃহস্পতিবার রাতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলেন। আর শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হলেন শুক্রবার দুপুরে। আগামী বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি একযোগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ ও গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তফসিল ঘোষণার পর জনমনে যেই উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা থাকার কথা, সেটি মিইয়ে গেল ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধের ঘটনায়। চারদিকে এখন থমথমে ভাব।
রাজনৈতিক সব পক্ষ থেকে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিবৃতি জানানো হয়েছে। ঢাকা–চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মিছিল বের হয়েছে। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পরিচিত মুখ হয়ে উঠা ওসমান হাদি এখন জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। সবাই তাঁর ফিরে আসার প্রার্থনা করছেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার সব ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে নিঃসংকোচে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। একই সঙ্গে তিনি নিরাপদ ও উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরির ওপরও জোর দিয়েছেন।
কিন্তু এভাবে যদি নির্বাচনী প্রচার চালাতে গিয়ে প্রার্থীকে গুলিবিদ্ধ হতে হয়, তাহলে নির্বাচনটি উৎসবমুখর পরিবেশে হবে কী করে? নির্বাচন সামনে রেখে সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদেরও মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত আছেন।
আরও পড়ুনজাতীয় নির্বাচন ঘিরে শঙ্কা ও সতর্কতাগুলো কী০১ ডিসেম্বর ২০২৫নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এটাই একমাত্র সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা নয়।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১০ মাসে অন্তত ৭৫৬টি রাজনৈতিক সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। ১১৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৬ হাজার ৯২ জন। আধিপত্য বিস্তার, রাজনৈতিক প্রতিশোধপরায়ণতা, সমাবেশ ঘিরে সহিংসতা, কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধ, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন স্থাপনা দখলের কারণে অধিকাংশ সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
গত ২৭ নভেম্বর পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্বাচনী প্রচারণাকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জামায়াতের দাবি, তাদের নির্বাচনী প্রচারণার সময় বিএনপির লোকজন হামলা করেছেন। বিএনপি বলছে, গ্রামের লোকজন একত্র হয়ে জামায়াতের লোকজনকে ধাওয়া দিয়েছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মাঠে কাজ করছেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান। জামায়াতের প্রার্থী জেলা জামায়াতের আমির আবু তালেব মণ্ডল। উপজেলার চরগড়গড়ি গ্রামে কয়েক দিন ধরেই দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলছিল।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে ইতিহাসের সেরা ও স্মরণীয় নির্বাচন করা দূরে থাক, মোটামুটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করাও কঠিন হবে। প্রশাসনে এখন নানামুখী ধারা চলছে। তফসিল ঘোষণার পর প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন কমিশনের আওতায় চলে গেলেও এর ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ নেই।চট্টগ্রাম-৮ আসনে (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর জনসংযোগে গুলি চালানো ব্যক্তি এক মাসেও শনাক্ত হয়নি। নেতা-কর্মীদের ভিড়ের মধ্যে খুব কাছ থেকে গুলি করে একজনকে খুন ও বিএনপি প্রার্থীকে আহত করার এ ঘটনায় প্রশিক্ষিত কোনো শুটার জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
গত ৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার খন্দকারপাড়া এলাকায় নির্বাচনী জনসংযোগে গুলির করার এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপি প্রার্থীর সঙ্গে থাকা ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলা নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন ওই আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী ও নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহসহ আরও পাঁচজন।
২৩ নভেম্বর সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে মো.
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে ইতিহাসের সেরা ও স্মরণীয় নির্বাচন করা দূরে থাক, মোটামুটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করাও কঠিন হবে। প্রশাসনে এখন নানামুখী ধারা চলছে। তফসিল ঘোষণার পর প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন কমিশনের আওতায় চলে গেলেও এর ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ নেই।
ডিসি, এসপি, ইউএনওরা নির্বাচন কমিশনের চেয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপরই বেশি নির্ভরশীল। সে ক্ষেত্রে যে দলের প্রভাব ও ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা, বেশি তাদেরই সমীহ করেন। ‘প্রশাসন আমাদের কথায় ওঠবস করবে’, এ কথা বলে জামায়াতের এক নেতা বেশ সমালোচিত হয়েছিলেন। মনে মনে সব দলের সব নেতাই এ রকম মনোভাব পোষণ করেন। সে ক্ষেত্রে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পক্ষে নিরপেক্ষভাবে কাজ করা কঠিন। আবার তারা ভিন্নচিন্তাও করতে পারছেন না।
এদিকে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে সাক্ষাৎকার দিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ১৬ মাসের নীরবতা ভাঙলেন। বঙ্গভবন থেকে হোয়াটসঅ্যাপে রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি সরে যেতে চাই। আমি চলে যেতে আগ্রহী।’ তবে রাষ্ট্রপতি এ কথাও যুক্ত করেন যে ‘নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমার দায়িত্ব পালন করে যাওয়া উচিত। সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপতির পদে থাকায় আমি আমার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।’
আরও পড়ুনবাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের অবস্থান কী০৭ নভেম্বর ২০২৫রাষ্ট্রপতির অভিযোগ, প্রায় সাত মাস হয় অধ্যাপক ইউনূস তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। তাঁর জনসংযোগ বিভাগ নিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে তাঁর ছবি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কনস্যুলেট, দূতাবাস ও হাইকমিশন অফিসে রাষ্ট্রপতির যে ছবি ছিল, গত সেপ্টেম্বরে সেটিও সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি রয়টার্সকে বলেন, হঠাৎ এক রাতেই সেগুলো উধাও করে ফেলা হয়েছে। এতে মানুষের কাছে একটি ভুল বার্তা গেছে যে সম্ভবত রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমি খুবই অপমানিত বোধ করেছিলাম।’ প্রতিকৃতি সরিয়ে ফেলার বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূসকে তিনি লিখিতভাবে বলেছেন, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন আন্দোলনও করেছে। একবার বঙ্গভবন ঘেরাও কর্মসূচিও পালন করা হয়েছে। চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারা কখনো রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে মানতে পারেননি। তাঁর পদত্যাগের দাবিতে বহুবার আন্দোলন হয়েছে। একবার বঙ্গভবন ঘেরাও কর্মসূচিও পালন করে কয়েকটি সংগঠন। কয়েকটি রাজনৈতিক দলও তাঁর অপসারণের পক্ষে ছিল। কিন্তু বিএনপি সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার কারণে নতুন রাষ্ট্রপতি না আসা পর্যন্ত তাঁকে রেখে দেওয়ার কথা বলে আসছে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হলে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সুযোগও তৈরি হবে। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যতজন রাষ্ট্রপতি এসেছেন, তাঁদের মধ্যে দুজন নিহত হয়েছেন সেনা অভ্যুত্থানে। দুজন দণ্ডিত হয়েছেন আদালতে। আবার ক্ষমতাসীনদের বিরাগভাজন হয়ে অসম্মানজনক পথে বিদায় নিতে হয়েছে কাউকে কাউকে। জুলাই সনদের সাংবিধানিক আদেশ কার নামে হবে, সে নিয়েও বিতর্ক উঠেছিল। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার আদেশ আদালতে চ্যালেঞ্জ হবে, এই বিবেচনা থেকে সেটাও বাদ দিতে হয়। শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির নামেই আদেশ জারি হয়। যেমন আওয়ামী লীগ সরকার বিতাড়িত হওয়ার পর তাঁর নামেই সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ চাওয়া হয়েছিল।
সোহরাব হাসান সাংবাদিক ও কবি
*মতামত লেখকের নিজস্ব
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ষ ট রপত র ওসম ন হ দ ত হয় ছ ন র জন ত ক পর স থ ত সন ত র স রক ষ ক র ব এনপ র র ঘটন আরও প হওয় র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
‘১০ বছর ধরে অপেক্ষা করছি, মৃত্যুর আগে ছেলেকে ফেরত চাই’
‘আমার ছেলেকে আমার সামনে থেকে ১০ বছর আগে তুলে নিয়ে যায় একটি বাহিনী। এরপর ১০ বছর ধরে ছেলের জন্য অপেক্ষা করে আছি। কেউ সন্ধান দিতে পারেনি। মামলাও নেয়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আজ আমি শয্যাশায়ী। মৃত্যুর আগে ছেলেকে ফিরে পেতে চাই। ছেলেকে যারা গুম করেছে, তাদের বিচার দেখে যেতে চাই।’
ফেনীতে আজ বুধবার দুপুরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের আলোচনা সভায় গুমের শিকার যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমান রিপনের মা রওশন আরা বেগম এ কথা বলেন। বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের ফেনী ইউনিটের আয়োজনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ফেনী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এ কে এম আবদুর রহিমের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন অধিকারের সংগঠক শাহজালাল ভূঁইয়া। অধিকারের কর্মী আবদুস সালাম ফরায়জীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেনী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রবিউল হক, মুহাম্মদ আবু তাহের ভূঁইয়া, সুজনের ফেনী শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় মহাসচিব মহি উদ্দিন খোন্দকার, জাসাস ফেনী শাখার সভাপতি সাংস্কৃতিক সংগঠক কাজি ইকবাল আহমেদ, প্রথম আলোর ফেনী প্রতিনিধি নাজমুল হক, ফেনী বন্ধুসভার উপদেষ্টা শেখ নুর উদ্দিন চৌধুরী।
অধিকারের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন শাহজালাল ভূঁইয়া। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ছাত্র জনতা একটি রক্তাক্ত গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন ঘটিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের জনগণের রাজনৈতিক অধিকার ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো, এখনো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। বিগত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ গুমের ঘটনা বর্তমানে বন্ধ হলেও বিচারবহির্ভূত হত্যা ও হেফাজতে নির্যাতন এখনো চলছে।
শাহজালাল ভূঁইয়া বলেন, অনলাইনে নারীদের ওপর বিভিন্ন মহল থেকে হয়রানিসহ বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা অব্যাহত আছে। এ ছাড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নতি করতে না পারায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চলছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে গণপিটুনি দিয়ে মানুষ হত্যার ঘটনা বৃদ্ধি এবং আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।