গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেছেন, কয়েকজন ব্যক্তিকে আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) টার্গেট করেছে। তাঁর মধ্যে গতকাল গুলিবিদ্ধ হওয়া ওসমান হাদি অন্যতম ছিলেন। টার্গেট করা অন্য প্রার্থীদের ওপরও হামলার আশঙ্কা আছে।

রাশেদ খান বলেন, ‘আগামীকাল হয়তো আমার পালা, আপনার পালা। সরকার যদি নিরাপত্তা দিতে না পারে, তাহলে আমরা কীভাবে জনসংযোগ করব।’

আজ শনিবার রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন রাশেদ খান। গুলিবিদ্ধ হয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে ‘পর্যবেক্ষণে’ থাকা ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতে রাশেদ খান সেখানে যান।

এ সময় যারা ওসমান হাদিকে গুলি করেছে, তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান রাশেদ খান। তিনি বলেন, ‘চিরুনি অভিযান শুরু করতে হবে। আওয়ামী লীগকে আপনারা ধরছেন না, বরং আমরা দেখেছি, তারা জামিন পাচ্ছে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.

) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে ‘মাজাভাঙা’ উপদেষ্টা বলে মন্তব্য করেছেন রাশেদ খান।

রাশেদ খান বলেন, এই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে কোনোভাবেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করতে পারবে না। সরকার যদি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চায়, তাহলে সর্বপ্রথম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে হবে। বিভিন্ন জেলা–উপজেলা প্রশাসনে রদবদল হলেও উপদেষ্টা পরিষদে কেন রদবদল হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

আরও পড়ুনওসমান হাদিকে গুলি: সন্দেহভাজন একজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ, তথ্য দিতে অনুরোধ১ ঘণ্টা আগে

রাশেদ খান আরও বলেন, গতকাল গণসংযোগ করে ফেরার পথে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা যেভাবে ওসমান হাদিকে গুলি করেছে, এ ঘটনার পর নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া কোনো ব্যক্তি আর নিরাপদে নেই। এই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে সরকার কোনোভাবেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থতির নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায় নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগেরও দাবি জানিয়ে গণ অধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, ‘এই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কোনোভাবেই আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারছেন না।’

আরও পড়ুনআশঙ্কামুক্ত নন ওসমান হাদি, ৪৮ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে: ইনকিলাব মঞ্চ ২ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওসম ন হ দ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় নির্বাচন ১২ ফেব্রুয়ারি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোটও হবে একই দিন। ওই দিন সকাল সাড়ে সাতটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলবে।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১২ কোটি ৭৬ লাখের বেশি। প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারেরাও পোস্টাল ব্যলটে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ৩ লাখের বেশি প্রবাসী ভোটার ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার ১৬ মাসের মাথায় জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলো ইসি।

শুরুতে গত বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল বিএনপিসহ কিছু দল। গত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ১৩ জুন যুক্তরাজ্যের লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ওই বৈঠকে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে দুজন একমত হন।

এরপর থেকে সরকার বারবার বলে আসছে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় নির্বাচন হবে। ইসিও সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি এগিয়ে নেয়। এর মধ্যে গত ১৩ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা দেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। আজ জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ দুটি ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করলেন সিইসি।

ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোই কেবল দলীয় প্রতীকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। এখন ইসিতে নিবন্ধিত দল আছে ৫৬টি। এর মধ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ থাকায় আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত আছে। নিবন্ধন স্থগিত থাকা দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। নিবন্ধিত অন্য দলগুলো এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। এর বাইরে প্রার্থী হওয়ার যোগ্য যে কোনো ব্যক্তি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ২১ নভেম্বর এ এম এম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। আগামী নির্বাচনই হবে এই কমিশনের অধীনে প্রথম কোনো নির্বাচন। এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হচ্ছে। দুটি ভোটের সময় ব্যবস্থাপনাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে ইসি।

সময় ব্যবস্থাপনার জন্য এবার ভোট গ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। সকাল সাড়ে সাতটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রে গোপন কক্ষের সংখ্যাও বাড়ানো হবে।

অন্যদিকে নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখাকেও চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সরকার জানিয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর সশস্ত্র বাহিনীসহ দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সব বাহিনী নির্বাচনী পরিবেশ যাতে নিশ্চিত হয়, সে লক্ষ্যে কাজ করবে। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীর প্রায় ৯ লাখ সদস্য নিয়োজিত থাকবেন, যা এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার জন্য ইতিমধ্যে রেকর্ডসংখ্যক দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন ঐক্যবদ্ধ থাকতে: সালাহউদ্দিন
  • প্রাইম সাসপেক্টকে খুঁজছি, হোপফুলি হিট করতে পারব: ডিএমপি কমিশনার
  • তপসিল ঘোষণা, গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদি ও নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ
  • হাদিকে গুলির নিন্দা–প্রতিবাদ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের, নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ
  • নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ অনেকটাই দূর হয়েছে
  • দিনাজপুরে যক্ষ্মা না থাকলেও রোগী, কফের নমুনায় জালিয়াতি
  • বাম দলগুলোর প্রতিক্রিয়া: ‘তফসিল হয়েছে, তবে সামনে বড় চ্যালেঞ্জ’
  • তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে জামায়াত, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি
  • জাতীয় নির্বাচন ১২ ফেব্রুয়ারি